০৫. পাণ্ডুলিপিটা ফেরত নিয়ে এলেন

॥ ৫ ॥

লালমোহনবাবু কথামতো পরদিন সকালেই পাণ্ডুলিপিটা ফেরত নিয়ে এলেন। ফেলুদা বলল, ‘এখন আর চা খাওয়া হবে না। কারণ আধ ঘন্টার মধ্যেই “জি”-র সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট।’

নব্বুই নম্বর রিপন স্ট্রীটের দরজায় বেল টিপতে যাঁর আবির্ভাব হল তাঁর মাথায় টাক, কানের পাশের চুল সাদা, আর এক জোড়া বেশ তাগড়াই গোঁফ, তাও সাদা।

‘মিঃ মিটার, আই অ্যাম জর্জ হিগিন্‌স।’

তিনজনের সঙ্গেই করমর্দনের পর হিগিন্‌স আমাদের নিয়ে দোতলায় চলল। গেট দিয়ে বাড়িতে ঢুকেই দুটো বেশ বড় খাঁচা দেখেছি, তার একটায় বাঘ, অন্যটায় হায়না। দোতলায় উঠে বাঁয়ে একটা ঘরের পাশ দিয়ে যাবার সময় দেখলাম তাতে গোটা পাঁচেক কোয়ালা ভাল্লুক বসে আছে মেঝেতে।

বসবার ঘরে পৌঁছে সোফায় বসে হিগিন্‌স ফেলুদাকে উদ্দেশ করে প্রশ্ন করল, ‘ইউ আর এ ডিটেকটিভ?’

‘এ প্রাইভেট ওয়ান’, বলল ফেলুদা।

বাকি কথাও ইংরিজিতেই হল, যদিও হিগিন্‌স মাঝে মাঝে হিন্দিও বলে ফেলছিলেন, বিশেষ করে কারুর উদ্দেশে গালি দেবার সময়। অনেকের উপরেই ভদ্রলোকের রাগ। যদিও কারণটা বোঝা গেল না। অবশেষে বললেন, ‘মান্‌সি তাহলে এখনো প্র্যাকটিস করে? আই মাস্ট সে, সে আমার বিপদের সময় অনেক উপকার করেছিল।’

‘তাহলে আর আপনি তাকে শাসাচ্ছেন কেন?’ প্রশ্ন করল ফেলুদা।

হিগিন্‌স একটুক্ষণ চুপ থেকে বলল, ‘সেটার একটা কারণ হচ্ছে সেদিন রাত্রে নেশার মাত্রাটা একটু বেশি হয়েছিল। তবে মানুষের কি ভয় করে না? আমার বাবা কী ছিলেন জান? স্টেশন মাস্টার। আর আমি নিজের চেষ্টায় আজ কোথায় এসে পৌঁছেছি দেখ। এ আমার একচেটিয়া ব্যবসা। মান্‌সির ডায়রি ছাপা হলে যদি আমাকে কেউ চিনে ফেলে তাহলে আমার আর আমার ব্যবসার কী দশা হবে ভাবতে পার?’

ফেলুদাকে আবার বোঝাতে হল যে হিগিন্‌স আইন বাঁচিয়ে কিছুই করতে পারবেন না। তাঁকে আবার ব্যাঁকা রাস্তায় যেতে হবে। ‘সেটাই কি তুমি চাইছ?’ বেশ জোরের সঙ্গে জিজ্ঞেস করল ফেলুদা। ‘তাতে কি তোমার প্রেসটিজ আরো বেশি বিপন্ন হবে না?’

হিগিন্‌স কিছুক্ষণ চুপ করে বিড়বিড় করে বললেন, ‘একবার কেন, শতবার খুন করতে পারতাম ও পাজি সুইডিশটাকে। বাহাদুর, আমার সাধের লেপার্ড, মাত্র চার বছর বয়স, তাকে কিনা লোকটা মেরে ফেলল!…’

আবার দশ সেকেন্ডের জন্য কথা বন্ধ; তারপর হঠাৎ সোফার হাতল চাপড়ে গলা তুলে হিগিন্‌স বললেন, ‘ঠিক আছে; মান্‌সিকে বলো আমি কোনো পরোয়া করি না। ও যা করছে করুক, বই বেরোলে লোকে আমাকে চিনে ফেললেও আই ডোন্ট কেয়ার। আমার ব্যবসা কেউ টলাতে পারবে না।’

‘থ্যাঙ্ক ইউ মি. হিগিন্‌স, থ্যাঙ্ক ইউ।’

অরুণ সেনগুপ্তর খবরটা ফেলুদা আগেই ফোনে ডাঃ মুনসীকে জানিয়ে দিয়েছিল। হিগিন্‌সের খবরটা দিতে আমরা মুনসীর বাড়িতে গেলাম, কারণ পাণ্ডুলিপিটা ফেরত দেবার একটা ব্যাপার ছিল। ভদ্রলোক ফেলুদাকে একটা বড় ধন্যবাদ দিয়ে বললেন, ‘তাহলে তো আপনার কর্তব্য সারা হয়ে গেল। এবারে আপনার ছুটি!’

‘আপনি ঠিক বলছেন? “আর” সম্বন্ধে কিছু করার নেই তো?’

‘নাথিং। …আপনি আপনার বিল পাঠিয়ে দেবেন, আমি ইমিডিয়েটলি পেমেন্ট করে দেব।’

‘থ্যাঙ্ক ইউ, স্যার।’

‘এটাকে কি মামলা বলা চলে?’ বাড়ি ফিরে এসে বলল জটায়ু।

‘মিনি মামলা বলতে পারেন। অথবা মামলাণু।’

‘যা বলেছেন।’

‘আশ্চর্য এই যে এমন গর্হিত কাজ করার পঁচিশ ত্রিশ বছর পরে লোকগুলো শুধু বেঁচে নেই, দিব্যি সুখ স্বাচ্ছন্দ্যে চালিয়ে যাচ্ছে।’

‘হক্‌ কথা’, বললেন জটায়ু। ‘কালই বাড়িতে বসে ভাবছিলুম ত্রিশ বছর আগে যাদের চিনতুম তাদের কারুর সঙ্গে আজও যোগাযোগ আছে কিনা, বা তারা এখন কে কী করছে সেটা জানি কিনা। বিশ্বাস করুন আজই আধ ঘন্টা ভেবে শুধু একটা নাম মনে পড়ল, অপরেশ চাটুজ্যে, যার সঙ্গে একসঙ্গে বসে বায়স্কোপ দেখিচি, ফুটবল খেলা দেখিচি, সাঙ্গুভ্যালিতে বসে চা খেইচি।’

‘সে এখন কী করে জানেন?’

‘উঁহু। আউট অফ টাচ। কমপ্লীটলি। কবে কীভাবে যে ছাড়াছাড়িটা হল, সেটা অনেক ভেবেও মনে করতে পারলুম না।’

পরদিন সকালে লালমোহনবাবু এসে ফেলুদার দিকে চেয়ে বললেন, ‘আপনাকে একটু ডাউন বলে মনে হচ্ছে? বেকারত্ব ভালো লাগছে না বুঝি।’

ফেলুদা মাথা নেড়ে বলল, ‘নো স্যার, তা নয়, একটা ব্যাপারে কৌতূহল নিবৃত্তি হল না বলে অসোয়াস্তি লাগছে।’

‘কী ব্যাপার?’

‘“আর ব্যক্তিটির আসল পরিচয়। ইনি একটা হুম্‌কি-টুম্‌কি দিলে মন্দ হত না।’

‘রট্‌ন, রাবিশ, রিডিকুলাস’, বললেন জটায়ু। ‘“আর” জাহান্নমে যাক। আপনি আপনার যা প্রাপ্য তা তো পাচ্ছেনই।’

‘তা পাচ্ছি।’

ফোনটা বেজে উঠল। আমিই ধরলাম। ‘হ্যালো’ বলতে ওদিক থেকে কথা এল ‘আমি শঙ্কর বলছি।’ আমি ফোনটা ফেলুদার হাতে চালান দিলাম।

‘বলুন স্যার।’

উত্তরটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ফেলুদার কপালে গভীর খাঁজ পড়ল। তিন-চারটে ‘হুঁ’ বলেই ফেলুদা ফোনটা রেখে দিয়ে বলল, ‘সাংঘাতিক খবর। ডাঃ মুনসী খুন হয়েছেন, আর সেই সঙ্গে ডায়রিও উধাও।’

‘বলেন কী!’ চায়ের কাপটা নামিয়ে রেখে বললেন জটায়ু।

‘ভেবেছিলাম শেষ। আসলে এই সবে শুরু।’

আমরা আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে লালমোহনবাবুর গাড়িতে বেরিয়ে পড়লাম।

সুইনহো স্ট্রীটে পৌঁছে দেখি পুলিশ আগেই হাজির। ইনস্পেক্টর সোম ফেলুদার চেনা, বললেন, ‘মাঝ রাত্তিরে খুনটা হয়েছে, মাথার পিছন দিকে ভারি কিছু দিয়ে মেরেছে।’

‘কে প্রথম জানল?’

‘ওঁর বেয়ারা। ভদ্রলোক ভোর ছটায় চা খেতেন। সেই সময়ই বেয়ারা ব্যাপারটা জানতে পারে। ডাঃ মুনসীর ছেলে বাড়ি ছিলেন না। পুলিশে খবর দেন ডাঃ মুনসীর সেক্রেটারি!’

‘আপনাদের জেরা হয়ে গেছে?’

‘তা হয়েছে; তবে আপনি নিজের মতো করুন না। আপনি যে আমাদের কাজে ব্যাঘাত করবেন না সেটা আমি পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে জানি। আর চারটি তো প্রাণী, ভদ্রলোকের ছেলে, সেক্রেটারি, শ্যালক আর পেশেন্ট। অবিশ্যি মিসেস মুনসী আছেন। তাঁকে কিছু জিগ্যেস করিনি এখনো।’

আমরা তিনজন শঙ্করবাবুর সঙ্গে দোতলায় রওনা দিলাম। সিঁড়ি ওঠার সময় ভদ্রলোক একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললেন, ‘অনেক কিছুই আশঙ্কা করছিলাম, কিন্তু এটা করিনি।’

বাবার ঘরে পৌঁছে ফেলুদা বলল, ‘আপনি যখন রয়েছেন তখন আপনাকে দিয়েই শুরু করি।’

‘বেশ তো। কী জানতে চান বলুন।’

আমরা সকলে বসলাম। চারিদিকে জন্তু জানোয়ারের ছাল, মাথা ইত্যাদি দেখে মনে হচ্ছিল, এতবড় শিকারী, আর এইভাবে তাঁর মৃত্যু হল!

ফেলুদা জেরা আরম্ভ করে দিল।

‘আপনার ঘর কি দোতলায়?’

‘হ্যাঁ। আমারটা উত্তর প্রান্তে, বাবারটা দক্ষিণ প্রান্তে।’

‘আপনি আজ সকালে বেরিয়েছিলেন?’

‘হ্যাঁ।’

‘কোথায়?’

‘আমাদের ডাক্তারের ফোন খারাপ। উনি রোজ ভোরে লেকের ধারে হাঁটেন, তাই ওঁকে ধরতে গিয়েছিলাম। কদিন থেকেই মাথাটা ভার-ভার লাগছে। মনে হচ্ছিল প্রেশারটা বেড়েছে।’

‘প্রেশার কি আপনার বাবা দেখে দিতে পারতেন না?’

‘এটা বাবার আরেকটি পিকিউলারিটির উদাহরণ। উনি বলেই দিয়েছিলেন আমাদের বাড়ির সাধারণ ব্যারামের চিকিৎসা উনি করবেন না। সেটা করেন ডাঃ প্রণব কর।’

‘আই সী…একটা কথা আপনাকে বলি শঙ্করবাবু, আপনি যে বলেছিলেন ডাঃ মুনসী আপনার সম্বন্ধে উদাসীন, ডায়রি পড়ে কিন্তু সেরকম মনে হয় না। ডায়রিতে অনেকবার আপনার উল্লেখ আছে।’

‘ভেরি সারপ্রাইজিং!’

‘আপনার ডায়রিটা পড়ার ইচ্ছে হয় না?’

‘অত বড় হাতে লেখা ম্যানুসক্রিপ্ট্‌ পড়ার ধৈর্য আমার নেই।’

‘এটা অবশ্য আশা করা যায় যে আপনার বিষয় যেটা সত্যি সেটাই উনি লিখেছেন।’

‘বাবার দৃষ্টিতে যেটা সত্যি বলে মনে হয়েছে সেটাই উনি লিখেছেন। সে দৃষ্টির সঙ্গে আর পাঁচজনের দৃষ্টি নাও মিলতে পারে। আমার বলার ইচ্ছে এই, যে বাবা আমাকে চিনলেন কী করে? তিনি তো সর্বক্ষণ রুগী নিয়েই পড়ে থাকতেন।’

‘আপনার বাবার মাসিক রোজগার কত ছিল সে সম্বন্ধে আপনার কোনো ধারণা আছে?’

‘সঠিক নেই, তবে উনি যে ভাবে খরচ করতেন তাতে মনে হয় ত্রিশ-পঁয়ত্রিশ হাজার হওয়া কিছুই আশ্চর্য নয়।’

‘উনি যে উইল করে গিয়েছিলেন সেটা আপনি জানেন?’

‘না।’

‘গত বছর পয়লা ডিসেম্বর। ওঁর সঞ্চয়ের একটা অংশ ব্যবহার হবে মনোবিজ্ঞানের উন্নতিকল্পে।’

‘আই সী।’

‘আর, আপনার প্রতি উদাসীন হওয়া সত্ত্বেও আপনিও কিন্তু বাদ পড়েননি।’

শঙ্করবাবু আবার বললেন, ‘আই সী!’

‘এই খুনের ব্যাপারে আপনি কোনো আলোকপাত করতে পারেন?’

‘একেবারেই না। এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত।’

‘আর ডায়রিটা যে লোপাট হল?’

‘সেটা ওই তিনজনের একজন লোক লাগিয়ে করাতে পারে। বাবার পেশেন্ট হিসাবে এরা এ বাড়িতে এসেছে। বাবা যে ঘরে রুগী দেখেন, তার পাশেই তো আপিস ঘর। সেখানেই থাকত বাবার লেখাটা।’

‘আপনাদের সদর দরজা রাত্রে বন্ধ থাকে নিশ্চয়ই।’

‘হ্যাঁ, তবে বাড়ির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে জমাদার ওঠার জন্য একটা ঘোরানো সিঁড়ি আছে।’

‘ঠিক আছে। থ্যাঙ্ক ইউ। আপনি এবার যদি সুখময়বাবুকে একটু পাঠিয়ে দিতে পারেন?’

মিনিট খানেকের মধ্যেই সেক্রেটারি সুখময় চক্রবর্তী এসে হাজির হলেন। ভদ্রলোক আমাদের থেকে একটু দূরে একটা চেয়ারে বসতে ফেলুদা জেরা আরম্ভ করল।

‘আমি প্রথমেই জানতে চাই, পাণ্ডুলিপিটা যে চুরি হল, সেটা কি বাইরে পড়ে থাকত?’

‘না। দেরাজে; তবে দেরাজে চাবি থাকত না। তার কারণ আমি বা ডাঃ মুনসী কেউই ভাবতে পারিনি যে সেটা এই ভাবে চুরি হতে পারে।’

‘এটা যে আর দেরাজে নেই সেটা কখন কীভাবে জানলেন?’

‘আজ থেকে ওটা টাইপ করা শুরু করব ভেবেছিলাম। সকালে গিয়ে দেরাজ খুলে দেখি সেটা নেই।’

‘আই সী…আপনি কদ্দিন হল ডাঃ মুনসীর সেক্রেটারির কাজ করছেন?’

‘দশ বছর।’

‘কাজটা পেলেন কী করে?’

‘ডাঃ মুনসী কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন।’

‘কী ধরনের কাজ করতে হত আপনাকে?’

‘ওঁর অ্যাপয়েন্টমেন্টগুলো নোট করে রাখতাম, আর চিঠিগুলোর জবাব টাইপ করতাম।’

‘চিঠি কি অনেক আসত?’

‘তা মন্দ না। বিভিন্ন দেশের মনোবিজ্ঞান সংস্থা থেকে নিয়মিত চিঠি আসত। বাইরের কনফারেন্সে যোগ দিতে উনি দুবছর অন্তর একবার বিদেশে যেতেন।’

‘আপনি বিয়ে করেননি?’

‘না।’

‘আত্মীয়স্বজন আর কে আছে?’

‘ভাইবোন নেই। বাবা মারা গেছেন। আছেন শুধু আমার বিধবা মা আর আমার এক বিধবা খুড়িমা।’

‘এঁরা এক সঙ্গেই থাকেন?’

‘হ্যাঁ।’

‘আপনি এঁদের সঙ্গে থাকেন না?’

‘আমি তো এ বাড়িতেই থাকি। ডাঃ মুনসী আমাকে একটা ঘর দেন একতলায়। প্রথম থেকেই এখানে আছি। মাঝে মাঝে গিয়ে বাড়ির খবর নিয়ে আসি।’

‘বাড়ি কোথায়?’

‘বেলতলা রোড ল্যান্সডাউনের মোড়ে।’

‘আপনি এই খুন সম্পর্কে কোনো আলোকপাত করতে পারেন?’

‘একেবারেই না। ডায়রি বেহাত হতে পারে হুম্‌কি চিঠি থেকেই বোঝা যায়; কিন্তু খুনটা আমার কাছে একেবারে অর্থহীন বলে মনে হচ্ছে।’

‘ডাঃ মুনসী বস্ হিসাবে কেমন লোক ছিলেন?’

‘খুব ভালো। আমাকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন, আমার কাজে সন্তুষ্ট ছিলেন, এবং ভালো মাইনে দিতেন।’

‘আপনি কি জানেন ডাঃ মুনসীর বই বেরোলে তাঁর অবর্তমানে বইয়ের স্বত্বাধিকারী হতেন আপনি?’

‘জানি। ডাঃ মুনসী আমাকে বলেছিলেন।’

‘বই ছেপে বেরোলে তার কাটতি কেমন হবে বলে আপনার মনে হয়?’

‘প্রকাশকদের ধারণা খুব ভালো হবে।’

‘তার মানে মোটা রয়েলটি, তাই নয় কি?’

‘আপনি কি ইঙ্গিত করছেন এই রয়েলটির লোভে আমি ডাঃ মুনসীকে খুন করেছি?’

‘এখানে যে একটা জোরালো মোটিভের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে সেটা কি আপনি অস্বীকার করবেন?’

‘আমার যেখানে টাকার অভাব নেই সেখানে শুধু রয়েলটির লোভে আমি খুন করব, এটা কি খুব বিশ্বাসযোগ্য?’

‘এর সঠিক উত্তর দিতে যতটা চিন্তার প্রয়োজন, তার সময় এখনো পাইনি। যাই হোক এখন আপনার ছুটি।’

‘কাউকে পাঠিয়ে দেবো কি?’

‘আমি ডাঃ মুনসীর শালার সঙ্গে একটু কথা বলতে চাই।’

সুখময়বাবু চলে যাবার পর জটায়ু বললেন, ‘আপনার কি মনে হচ্ছে বলুন তো, ডায়রি লোপাট আর খুনটা সেপারেট ইস্যু, না পরস্পরের সঙ্গে জড়িত?’

‘আগে গাছে কাঁঠাল দেখি, তারপর তো গোঁফে তেল দেব।’

‘বোঝো!’