কুমারসাহেবের গমনপথের দিকে তাকিয়ে মৃদুকণ্ঠে কিরীটী বললে, আহা বেচারী, বড্ড নার্ভাস হয়ে পড়েছেন!
সত্যি, মাথাটা কী ভাবে মেঝের মাঝখানে এল বল তো রায়? ডাক্তার বলতে লাগলেন, গড়িয়ে এসে তো আর ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না!
অনেক সময় অবিশ্যি এর চাইতে বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। কিরীটী জবাব দিল, কিন্তু একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখুন ডাক্তার, মাথাটা যদি গড়িয়েই এই জায়গায় আসত, তাহলে দেহ থেকে মাথাটা যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেই পর্যন্ত একটা রক্তের ধারা থাকত। তা নেই। তাতেই এক্ষেত্রে স্পষ্ট মনে হয়, খুনী নিজেই দেহ থেকে মাথাটা কেটে ফেলবার পর মাথাটা ঐখানে বসিয়ে রেখে গেছে। আমার মনে হয় কি জানেন ডাক্তার?
একটা দানবীয় উল্লাসে এবং নিজের শক্তির ওপর একটা স্থির বিশ্বাসে খুনী মাথাটা এখানে রেখে গেছে-এই কথা বলত চাও তো? জবাব দিলেন ডাক্তার।
করতে করতে একটা পকেট থেকে কতকগুলো কাগজপত্র টেনে বের করল এবং সেগুলো টেবিলের ওপরে রাখবার সময় তার মুখে মৃদু একটুকরো হাসি জেগে উঠল। চেয়ে দেখলাম কাগজপত্রের মধ্যে আছে অনেকগুলো খবরের কাগজের কাটিং, ফটোগ্রাফ, গোটা দুই হলুদ রংয়ের ভাজকরা পুরু অনেকটা তুলেটি কাগজের মত কাগজ, একটা টাৰ্চ, একটা পেনসিল ও ব্যাঙ্ক নোট এবং কিছু খুচরো টাকা পয়সা। ফটোগুলো দেখতে দেখতে কিরীটী সহাস্যমুখে জবাব দিল, ফটোগুলো দেখছি ভদ্রলোকের নিজেরই। নানা কায়দায় নানা পোজে তোলা ফটো। কিন্তু এত ফটোই বা পকেটে কেন? আর আজকের রাত্রের এই উৎসবের পোশাকের পকেটেই বা এগুলো রাখার তাৎপর্য কী?
এতে তো আশ্চর্য হবার কিছুই নেই রায়! ডাক্তার বললেন, যারা নিজেদের সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন বা এক কথায় সোজা ভাবে বলতে পার দান্তিক, তাদের পক্ষে নিজেদের ড্রাম পিটবার-নিজেকে প্রচার করবার এও একটা কাঠি বৈকি।
না বন্ধু না, ব্যাপারটা অত সামান্য নয়। এর মধ্যে অন্য কোন ব্যাপার আছে। লক্ষ্য করেছেন, এর মধ্যে কিছু হারিয়েছে কিনা? কিরীটী ডাক্তারের দিকে চেয়ে প্রশ্ন করল।
তার মানে? তোমার কোন দেশী প্রশ্ন কিরীটী? আমি কি আগে থেকে জানতাম নাকি মিঃ মিত্রের পকেটে কি আছে না আছে। আশ্চর্য! রাগতভাবে ডাক্তার জবাব দিলেন।
হ্যাঁ দেখুন, আমরা জানি ভদ্রলোক এখন পর্যন্ত অবিবাহিত এবং এর নিজের ঘর-বাড়িও আছে। সেখানে নিশ্চয়ই চাকরিবোকরও আছে—এখানে তো আর উনি দিবা-রাত্ৰই উপস্থিত থাকেন না! এ কথাও হয়তো বললে নেহাৎ ভুল হবে না যে, ঘরের যাবতীয় চাবিই চাকরবাকারের হাতে দিয়ে তিনি আসেন না। অন্ততঃ দু-চারটে প্রাইভেট ঘরের চাবিও ওঁর পকেটে থাকা উচিত, যা হয়তো চাকরবাকারের হাতে বিশ্বাস করে রেখে আসা চলে না। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মিঃ মিত্রের পকেটে সে ধরনের কোন চাবিই পাওয়া যাচ্ছে না। এর পকেট থেকে কিছু হারিয়েছে কিনা বলতে আমি ঐ চাবির কথাই বলতে চাইছিলাম ডাক্তার!
তারপর সহসা কিরীটী আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে মৃদুস্বরে বললে, সুব্রত, অনুসন্ধানের ব্যাপারটা একটু চোখ মেলে সম্পন্ন করলেই অনেক কিছু গোলমাল চোখে পড়ে। একটা অনুসন্ধানের কাজে হাত দিলে সর্বদা চিন্তা করবে, কি থাকা উচিত ছিল, অথচ তা নেই বা পাওয়া যাচ্ছে না! এক্ষেত্রে আমার চাবির কথাটাই মনে হচ্ছে, সেটাই যেন চুরি গেছে। চাবি চুরি যাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক। কিন্তু তার চাইতেও আশ্চর্যজনক অথচ সহজ একটা জিনিস হারিয়েছে বা পাওয়া যাচ্ছে না, এখুনি তোমাদের সেটা দেখােব। অথচ তোমরা দুজনেই অর্থাৎ ডাঃ চট্টরাজ ও তুমি অসাবধানতাবশতঃ লক্ষ্য করোনি, যা প্রত্যেক মানুষেরই পক্ষে, যাদের সামান্য একটু বুদ্ধি আছে এবং যারা সেটা খাটাবার চেষ্টা করে, এ ঘরে ঢোকামাত্রই লক্ষ্য করা উচিত ছিল এমন একটা জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না!
হত্যাকারীর সম্পর্কে কোন সূত্র কি? আমি প্রশ্ন করলাম।
হ্যাঁ, হত্যাকারী নিজে।
এমন সময় ক্যাঁচ করে দরজা খোলার একটা মৃদু শব্দে আমরা সকলে চমকে চোখ তুলে তাকালাম। এ ঘরের সঙ্গে হলঘরের যোগাযোগ করে যে দরজাটি, তার ফঁােক দিয়ে সাধারণ পোশাক পরা একজন লোকের মুখ ও দেহের অর্ধেকটা প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে এবং তাকে একপ্রকার এক পাশে ঠেলেই একটি যুবক ঘরে এসে প্রবেশ করল।
চোখের উদ্বিগ্ন দৃষ্টি দেখলেই মনে হয় যুবক ভয়ানক ভীত হয়ে পড়েছে। যুবক ঘরে ঢুকেই থাপ করে একটা গদি আঁটা চেয়ারে বসে পড়ল, এসব ব্যাপার কী? বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরুতে যাচ্ছি, গেটম্যান বললে, যেতে দেওয়া হবে না, পুলিসের অর্ডার! কুমারসাহেবের দেখা পেলাম না। তাঁর সেক্রেটারী মিঃ মিত্রই বা কোথায়?
সাধারণ পোশাক পরা যে লোকটি আমাদের সঙ্গেই গাড়িতে এসেছিল, সে যুবকের পিছু পিছু এই ঘরে ঢুকল।
ইনি কে জান কালী? কিরীটী লোকটিকে প্রশ্ন করল।
না মিঃ রায়, তবে এঁকে মিঃ মিত্রের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে দেখেছিলাম। তখনই শুনেছিলাম এর নাম নাকি বিকাশ মল্লিক। এমন সময় আবার দরজার বাইরে একটা গোলমাল শোনা গেল। পরীক্ষণেই প্রফেসার কালিদাস শৰ্মা ঘরে প্রবেশ করলেন।
সহসা একটা অস্ফুট ভয়চকিত শব্দ প্রফেসারের কণ্ঠ থেকে বের হয়ে এল, উঃ কী ভয়ানক! এ কি? সমস্ত মুখ তাঁর ভয়ে রক্তশূন্য ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।
হঠাৎ একটা ভারী বস্তুর পতনশব্দে সকলে সচকিত হয়ে উঠে দেখি-বিকাশ মল্লিক অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে।
এই অপদার্থটাকে বাইরে রেখে এস। প্রফেসর শর্মা কালীকে আদেশ দিলেন।
কিরীটী আমাকে ইঙ্গিত করতেই আমি ও ডাক্তার দুজনে জ্ঞানহীন বিকাশ মল্লিকের অসাড় দেহটা ধরাধরি করে কোনমতে পাশের ঘরে নিয়ে এলাম।
এ ঘরের মধ্যেও মৃত্যুর মতই স্তব্ধতা বিরাজ করছে।
একটা সামান্য ভূঁচ পড়লেও বোধ হয় শব্দ শোনা যায়।
কিছুক্ষণ চোখেমুখে জল দিয়ে হাওয়া করতে করতে একসময় ধীরে ধীরে বিকাশ মল্লিক উঠে সোফার ওপরে হেলান দিয়ে বসল এবং ক্লান্তিভারে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস নিল।
ডাক্তার বললেন, এখন একটু সুস্থ বোধ করছেন কি?
হ্যাঁ মৃদু ক্লান্তস্বরে বিকাশবাবু জবাব দিলেন।
মিঃ শুভঙ্কর মিত্ৰ বুঝি আপনার অনেক দিনের পরিচিত? আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
না, খুব বেশী দিনের নয়, মাত্র কয়েক সপ্তাহ হবে। বিকাশ বলতে লাগল, ভাল লোকের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় অল্পদিনেই জমে ওঠে। মিঃ মিত্র একজন নামকরা স্পোর্টসম্যান ও শিকারী ছিলেন। প্রায়ই আমাদের দেশের বাড়ি ডায়মণ্ডহারবারে কি একটা কাজে যেতেন; সেখানেই প্রথম আলাপ হয়। তাছাড়া অনেকদিন থেকেই হিন্দীটাকে ভাল করে শিখবার আমার ইচ্ছা। শুভঙ্করবাবু চমৎকার হিন্দী বলতে ও লিখতে জানতেন। আমি ওঁর কাছেই একটু একটু করে হিন্দী শিখছিলাম। তারপর উনিই আমাকে একদিন এখানে এনে কুমারসাহেবের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং কুমারসাহেবের দয়াতেই একটা অফিসে আজ দিন দশ হল একটা কাজ যোগাড় করেছি। তিনিই আজকের এই উৎসবে আমাকে নিমন্ত্রণ করে আনেন।
কিন্তু একটা সংবাদ বোধ হয় এখনও আপনি পাননি বিকাশবাবু! আমি বললাম।
কি? বিকাশ প্রশ্ন করলেন।
আপনার বন্ধু অর্থাৎ মিঃ শুভঙ্কর মিত্ৰ খুন হয়েছেন।
সহসা যেন কথাটা শুনে বিকাশ মল্লিক অতিকে উঠলেন, অ্যাঁ…তবে কি—তবে কি যে মৃতদেহ দেখে এলাম একটু আগে…
হ্যাঁ, তাঁরই মৃতদেহ। এমন সময় কিরীটী ও প্রফেসর শর্মা এসে ঘরে প্রবেশ করলেন।
আপনি তাহলে এখন যেতে পারেন বিকাশবাবু, আমার লোকের কাছে আপনার ঠিকানাটা শুধু দয়া করে রেখে যাবেন।
বিকাশ মল্লিক কিরীটীর কথা শুনে একপ্রকার ছুটতে ছুটতেই ঘর থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়ে গেল।–
সে ঘরে তখন আর কোন লোকজনই ছিল না, সেকথা আগেই বলেছি।
মাথার ওপর উজ্জ্বল বৈদ্যুতিক আলোয় ঘরখানি উদ্ভাসিত। একটু আগেও যে-ঘরটা কলহাস্যে মুখরিত ছিল, এখন সেটা শূণ্য খা-খাঁ করছে।
কিরীটী প্রফেসর শর্মাকে একটা চেয়ারে উপবেশন করতে বলে নিজেও একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসল।–
মিঃ শুভঙ্কর মিত্রের আপনিই সব চাইত বড় বন্ধু ছিলেন শুনেছি। সুতরাং এক্ষেত্রে আপনার কাছে যতটা সাহায্য পাব, আর কারও কাছ থেকেই তা পাব না। অবিশ্যি এত রাত্রে আপনাকে বেশী বিরক্ত করব না। সামান্য দু-চারটে কথা—বুঝতেই পারছেন, বিশেষ প্রয়োজনেই..
না না, সে কি, জিজ্ঞাসা করবেন বৈকি। বিশেষ করে এখানে যখন উপস্থিত আছি।
আচ্ছা, আজ কাঁটার সময় ঠিক আপনি এখানে এসে পৌছান মিঃ শৰ্মা?
সঠিক আমার মনে পড়ছে না, তবে রাত্রি আটটা থেকে সোয়া-আটটার মধ্যে।
বেশ, তারপর থেকে অর্থাৎ আপনার এখানে পৌঁছবার পর থেকে এখানে আপনার চোখে যা যা দেখেছেন বা ঘটেছে সব খুলে সংক্ষেপে আমায় বলুন।
সে আর এমন বিশেষ কঠিন কি! আমার নিজের যে এখানে আসবার খুব ইচ্ছা ছিল তা নয়, একপ্রকার দীনতারণের ইচ্ছাতেই এখানে আজ রাত্রে আমায় আসতে হয়; অথচ সে এসেই চলে গেল, তাছাড়া-হঠাৎ কথার মাঝে যেন একটু থেমে প্রফেসর শর্মা আমার কিরীটীর মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন, তাছাড়া আমার ধারণা ছিল, দীনতারণের এখানে কারও সঙ্গে সাক্ষাৎ করবার আগে থেকেই কথা ছিল।
কারও মানে কোন ভদ্রলোকের সঙ্গে তো? কিরীটী বললে।
প্রফেসর শর্মা যেন একটু চমকে উঠলেন। পরীক্ষণেই কিরীটীর চোেখর ওপর চোখ রেখে স্থির দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলেন।
না, আমি তা ঠিক জানি না। প্রফেসর শর্মা আবার বলতে লাগলেন, তাছাড়া এখানে পৌঁছেই আমি নীচের হলঘরে ঢুকি, সেইখানেই মিঃ মিত্রের সঙ্গে আমার দেখা হয়। আমরা দুজনে কথা বলতে বলতে একটা টেবিলের সামনে দুটো চেয়ার টেনে নিয়ে বসে দু গ্লাস ‘জিনজার’ খেতে লাগলাম। হঠাৎ এক সময় “জিনজার’ খেতে খেতে শুভঙ্কর হাসতে হাসতে গ্লাসের লাল রঙের তরল পদার্থের দিকে চেয়ে আমায় বললে, দেখছিল কালিদাস, কী টুকটুকে লাল! সত্যি ভাই, আজ রাত্রে এই লাল রংটা যেন আমার মনে একটা নেশা ধরিয়ে দিচ্ছে! Oh red, it is simply charming! It is nice!
হঠাৎ কিরীটী মুখটা ঘুরিয়ে আমাকে বললে, সুব্রত, বেল বাজিয়ে একটা বেয়ারাকে ডাক তো।
বেল বাজবার সঙ্গে সঙ্গেই, যে বেয়ারাটি প্রথম মৃতদেহ আবিষ্কার করে, সে এসে দাঁডাল।
কিরীটী তার মুখের দিকে চেয়ে বললে, আরে, তুমিই তো প্রথম মৃতদেহ দেখ, না? তুমি কফি নিয়ে যাবার ঘণ্টা শোন কখন?
আজ্ঞে, রাত্রি ঠিক সাড়ে-নটার সময়। কেননা আমি ঘড়ির দিকে নজর রেখেছিলাম।
তুমি তখন কোথায় ছিলে?
রান্নাঘরে হুজুর। রান্নাঘরের লাগোয়াই খবার ঘর, এবং রান্নাঘর ও খাবার ঘর কুমারসাহেবের প্রাইভেট রুমের ঠিক পিছনেই।
কুমারসাহেবের প্রাইভেট রুমের মধ্যে যে তোমাদের ডাকবার অন্য বেল আছে, সেই বেল বাজার দড়িটা কোথায়?
প্রাইভেট রুম থেকে। হলঘরে আসবার দরজার গায়েই হুজুর।
বেশ, বেল শোনা মাত্রই তুমি কফি নিয়ে চলে এলে, না?
না। বাবুর্চি কফিটা তৈরী করতে একটু সময় নেয়। মিনিট দশেক বোধ করি দেরি হয়েছিল। কফি নিয়ে আসতে।
কোন দরজা দিয়ে তুমি কুমারসাহেবের প্রাইভেট রুমে ঢোক?
ওঘরে যাবার হলের মধ্য দিয়ে যে দরজা আছে সেই দরজা দিয়ে। দরজার ঠিক সামনেই একজন ভদ্রলোক দাঁড়িয়েছিলেন, বোধ হয় আপনারই লোক হবেন তিনি। আমি দরজায়। শব্দ করলাম, কিন্তু কোন সাড়া শব্দ ভেতর থেকে পেলাম না। এবার জোরে দরজায় ধাক্কা দিলাম, কিন্তু তাতেও কোন সাড়াশব্দ পেলাম না। তখন আমি সামনে দাঁড়ানো সেই … ভদ্রলোকটিকে জিজ্ঞাসা করি, ঘরে কেউ আছেন কি? তাতে তিন জবাব দেন, তার মানে? কারও ঐ ঘরে থাকবার কথা ছিল নাকি? আমি তাতে জবাব দিই, আজ্ঞে, সেক্রেটারী সাহেবের তো ঐ ঘরে থাকবার কথা। তাতে আমায় বললেন, তবে যাও। আমি তখন দরজা টেনে ভিতরে প্রবেশ করি। বেয়ারার গলার স্বর ক্রমেই উত্তেজিত হয়ে উঠছিল, সে কথা বলতে বলত ঘন ঘন আমাদের সকলের দিকে ফিরে ফিরে তাকাচ্ছিল।
তারপর কিরীটী জিজ্ঞাসা করল।
আজ্ঞে, তারপর আমি কফি নিয়ে ঘরে গিয়ে ঢুকে প্রথমে কিছু দেখতে পাইনি।
ঘরের মধ্যে এগিয়ে গিয়ে হঠাৎ পায়ে বাধা পেয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাই। পড়েই আমি চিৎকার করে উঠি ও তাড়াতাড়ি উঠে আপনাদের ঘরের দিকে যাই। আমি আল্লার নামে শপথ করছি, হুজুর এর চাইতে বেশী কিছুই আমি জানি না। আমি খুন করিনি। বলতে লিতে লোকটা হাউ হাউ করে কঁদতে কঁদিতে কিরীটীর পায়ের কাছে আছাড় খেয়ে পড়ল।
তোমাদের কোন ভয় নেই হে, তুমি উঠে বস। আমি জানি তুমি খুন করেনি। কিরীটির কথায় কতকটা আশ্বস্ত হয়েই যেন লোকটা চোখ মুছতে মুছতে উঠে বসল।