০৫. আলো কি ঘুমুচ্ছে

আলো কি ঘুমুচ্ছে?

দীপা বুঝতে পারছেন না। আলোর চোখ বন্ধ। একটা হাত মার গায়ে ফেলে রেখেছে। নিঃশ্বাস ভারী। লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে সে ঘুমিয়ে পড়েছে, তবু দীপা নিশ্চিত হতে পারছেন না। তিনি ঘড়ির দিকে তাকালেন। এগারোটা দশ বাজে। প্ৰায় আধা ঘণ্টার মতো হলো তিনি আলোকে নিয়ে শুয়েছেন। আলো-র মাথায় বিলি কেটে দিয়েছেন। পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়েছেন। এতক্ষণ তার ঘুম এসে যাওয়ার কথা।

তিনি খুব সাবধানে আলোর হাত ঘুরিয়ে বিছানায় উঠে বসলেন। মেয়ের দিকে তাকিয়ে ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস চাপলেন। এই মেয়ে তাঁকে বড়ো বিপদে ফেলেছে। অন্য এক ধরনের বিপদ, যে বিপদের কথা বাইরের কাউকে বলা যাবে না। বিপদের ধরনটা বিচিত্র। সন্ধ্যা মেলবার পর থেকে আলো তার বাবাকে সহ্য করতে পারে না। দীপাকে মেয়ে নিয়ে আলাদা ঘরে ঘুমুতে হয়। সেই ঘরে মহসিন সাহেবের উকি দিলে সে অন্য রকম হয়ে যায়। কঠিন চোখে বাবার দিকে তাকায়। শক্ত করে মাকে চেপে ধরে। জাস্তব এক ধরনের শব্দ করতে থাকে। মহসিন সাহেব দুঃখিত ও ব্যথিত হন। মন খারাপ করে বলেন, ও আমাকে দেখে এরকম করে কেন দীপা?

দীপা কাটান দিতে চেষ্টা করেন। কোমল গলায় বলেন, সব সময় তো করে না।

তা ঠিক। সব সময় করে না। শুধু রাতেই এমন করে। কারণটা কী?

রাতে বোধ হয় সে বেশি ইনসিকিওর ফিল করে।

আমার তা মনে হয় না। আমার কী মনে হয়, জান? আমার মনে হয়, সে কোনো এক রাতে আমাদের কিছু অন্তরঙ্গ ব্যাপার দেখে ফেলেছে। হয়তো ঐ ব্যাপারটা মনে গেঁথে আছে

এসব নিয়ে তুমি মন খারাপকরো না। একটু বুদ্ধি হলেই ওরকম আর করবে না।

বুদ্ধি হচ্ছে কোথায়? যত বয়স হচ্ছে ও তো দেখছি ততই–

মহসিন কথা শেষ করেন না। মুখ অন্ধকার করে ফেলেন। দীপা কি করবেন বুঝতে পারেন না। বেচারা একা একা রাত কাটায়, এটা তাঁর ভালো লাগে না। পুরুষ মানুষ শরীরের ভালোবাসার জন্যে কাতর হয়ে থাকে। সেই দাবি মেটানো দীপার পক্ষে বেশির ভাগ সময়ই সম্ভব হয় না।

মাঝে মাঝে রাত এগারোটার দিকে মহসিন এই ঘরের দরজার পাশে এসে দাঁড়ান। কঠিন গলায় বলেন, দীপা ঘুমোচ্ছ?

দীপা বলেন, না, আসছি। ও বোধ হয় এখনো ভালোমতো ঘুমোয় নি।

দীপা খুব সাবধানে আলোর হাত ছাড়িয়ে উঠতে চান। আলো সঙ্গে সঙ্গে জেগে উঠে ক্রুদ্ধ গর্জন করে ওঠে এবং দু হাতে মাকে জড়িয়ে ধরে। মহসিন ক্লান্ত গলায় বললেন, ওকে ঘুম পাড়াও। আমি শুয়ে পড়ছি।

তিনি কিন্তু শুয়ে পড়েন না। ঘরে বাতি জ্বলে। চুরুটের গন্ধ অনেক রাত পর্যন্ত ভেসে আসে। দীপার বড়ো মন খারাপ লাগে। অথচ কিছুই করার। নেই। যত বার তিনি উঠতে যান আলো ততবারই তাঁকে জাপটে ধরে।

আজ অবশ্যি আলো ঘুমাচ্ছে। ভাবভঙ্গিতে মনে হচ্ছে গাঢ় ঘুম। হয়তো আজ জাগবে না। দীপা সাবধানে বিছানা থেকে নামলেন। বাতি নিভিয়ে নীল আলো জ্বলে দিলেন। পাশের ঘরে ঢুকলেন।

মহসিন বিছানায় শুয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি পড়ছিলেন। স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে নরম গলায় বললেন, আলো ঘুমোচ্ছ।

হুঁ।

জেগে যাবে না তো? একটা কোল বালিশ দিয়ে এসেছে?

হুঁ।

দীপা দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দিলেন। তাঁর অবশ্যি খুব অস্বস্তি লাগছে। মাঝরাতে এ ঘরে আসা, আস্তে আস্তে কথা বলা, ছিটকিনি লাগানো—সব কিছু মনে করিয়ে দেয় এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের পেছনের উদ্দেশ্যটি অন্য। বিছানায় পাশাপাশি শুয়ে গল্প করতে করতে শরীরে পৌছানো এক ব্যাপার, আর এরকম প্রস্তুতি নিয়ে এগোনো সম্পূর্ণ অন্য জিনিস। এতে নিজেকে কেমন যেন ছোট মনে হয়।

দীপা অস্বস্তি বোধ করছেন অস্বস্তি কাটানোর জন্যে তিনি অন্য গল্প শুরু করলেন, তোমার স্যারেরজীত সব পড়ে যাচ্ছে, জান?

না তো। দাঁত পড়ে যাচ্ছে?

উপরের পাটিতে একটি দাতও এখন নেই।

বল কি?

অদ্ভুত ব্যাপার না? নিচের পাটিতে সব দাঁত আছে অথচ উপরের পাটির একটা দাঁতও নেই। তোমার কাছে ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগছে না?

অদ্ভূত তো বটেই।

তিনি তাঁর স্ত্রীর কথা এখন তেমন মন দিয়ে শুনছেন না। তিনি দীপাকে আদর করতে শুরু করেছেন। পুরুষদের সেই বিশেষ আদর যা দীপার একই সঙ্গে ভালো লাগে এবং ভালো লাগে না।

দীপা বললেন, বাতি নিভিয়ে দাও না। লজ্জা লাগছে।

তিনি গাঢ় স্বরে বললেন, একটু লজ্জা-লজ্জা লাগলে ক্ষতি নেই কিছু। বাতি থাকুক। বাতি না থাকলে কী করে বুঝব যে আমি এমন রূপবতী একটি মেয়ের পাশে বসে আছি। অন্ধকারে সব মেয়েই দেখতে এক রকম।

মহসিন ড্রেসিং টেবিলের আয়নার দিকে তাকালেন। দুজনের ছায়া পড়েছে আয়নায়। দীপাকে কী সুন্দর লাগছে দেখতে। বয়সের কারণে নিতম্ব কিছুটা ভারী হয়েছে, তাতে দীপার রূপ যেন আরো খুলেছে।

দীপা বলল, আয়নার দিকে তাকিও না। আমার ভীষণ লজ্জা লাগে।

লাগুক।

মহসিন স্ত্রীর মুখে চুমু খেলেন আর তখনি আলো চিৎকার করে উঠল। মুহূর্তের মধ্যে বন্ধ দরজায় এসে সে ঝাঁপিয়ে পড়ল। দরজায় কিলঘুষি মারছে। দরজায় আঁচড়াচ্ছে, মাথা ঠুকছে। দরজায় ঝুলন্ত পৰ্দা দাঁত দিয়ে কুটিকুটি করে ফেলতে চেষ্টা করছে।

দীপা বললেন, মা আসছি, মা আসছি।

আলো তাঁর কথা শুনতে পেল না। তার পৃথিবী শব্দহীন। সে প্রবল আতঙ্কে দিশাহারা।

দীপা চট করে দরজা খুলতে পারলেন না। কাপড় গুছাতে তাঁর সময় লাগছে। এই সময়ে আলো একটা তাণ্ডব সৃষ্টি করল। একতলা থেকে বাবুর্চি এবং কাজের মেয়েটা ছুটে এল। তুষার এবং রাত্রির ঘুম ভেঙেছে। রাত্রি ভয় পেয়ে তার ঘর থেকে চেঁচাচ্ছে–কী হয়েছে? আম্মু, কী হয়েছে?

দীপা দরজা খুললেন। আশ্চর্য ব্যাপার। আলোর সমস্ত উত্তেজনার অবসান হয়েছে। সে কেমন যেন অবাক দৃষ্টিতে চারদিকে দেখছে। দীপা যখন তার হাত ধরলেন, তখনো সে অন্য বারের মতো মার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল না, বরং এমন দৃষ্টিতে তাকাল যেন সে মাকে ঠিক চিনতে পারছে না। কিংবা বিরাট কোনো ঘটনা তার জীবনে ঘটে গেছে যার তুলনায় মার উপস্থিতি খুবই তুচ্ছ ব্যাপার।

দীপা বললেন, এমন হৈচৈ শুরু করলে কেন, মা মণি? এরকম কর কেন তুমি?

আলো দীপাকে অবাক করে ছুটে নিজের ঘরে চলে গেল। ঝাঁপিয়ে পড়ল বিছানায়। বালিশে মুখ খুঁজে মূর্তির মতো হয়ে গেল।

দীপা তার পেছনে পেছনে এলেন। আলোর পিঠে হাত রাখলেন। আলো কেঁপে কেঁপে উঠছে। দীপা গাঢ় স্বরে বললেন, কী হয়েছে মা, কী হয়েছে?

আলোর যে কী হয়েছে তা সে নিজেও জানে না। আর জানতে পারলেও মা-কে জানানর সাধ্যও তার নেই। আজ সে প্রচণ্ড একটা ধাক্কা খেয়েছে। তার একান্ত নিজস্ব জগৎ ভেঙে খানখান হয়ে গেছে।

 

সে ঘুমুচ্ছিল। ঘুমের মধ্যেই তার মনে হল মা পাশে নেই। যার গায়ে সে হাত রেখেছে সে মা নয়। মার গায়ের পরিচিত উষ্ণতা সে পাচ্ছে না। মার গায়ের ঘ্রাণও নেই। তার ঘুম ভেঙে গেল। মা পাশে নেই। সে একটা কোলবালিশ জড়িয়ে শুয়ে আছে। আতঙ্কে তার বুক ধ করে উঠল। সে অবশ্যি চেঁচিয়ে উঠল না। নিজেকে সামলে নিল। মা নিশ্চয়ই বাথরুমে। সে বিছানা থেকে বাথরুমে উঁকি দিল। বাথরুমের দরজা খোলা। সেখানে কেউ নেই। মা তাহলে পাশের ঘরে? বাবার ঘরে? কেন, বাবার ঘরে কেন? তারা কী করে সেখানে? কান্নায় তার বুক ফুলে ফুলে উঠছে। সে বাবার ঘরের দরজার পাশে দাঁড়াল। দরজায় অল্প ধাক্কা দিল। ভেতর থেকে বন্ধ। কেন, ভেতর থেকে বন্ধ কেন? মা তাকে একা একা এই ঘরে ফেলে রেখে চলে গেছে? কেন সে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে? কী করছে তারা দুজন?

আলো দরজার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। তার মাথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। অসম্ভব রাগে তার সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। ইচ্ছা করছে পুরো বাড়িটা ভেঙে আগুন ধরিয়ে দিতে। দাতু দিয়ে কামড়ে কুটিকুটি করে ফেলতে। ঠিক এরকম অবস্থায় কে একজন আলোর কাছে জানতে চাইল, কী হয়েছে তোমার? তুমি এরকম করছ কেন?

এই প্রশ্ন দুটি সে কানে শুনল বা শব্দ সম্পর্কে তার ধারণা নেই। তার শব্দহীন জগতে হঠাৎ যদি কোনোক্রমে কিছু শব্দ ঢুকেও যায় সে তার অর্থ উদ্ধার করতে পারবে না। অর্থচ সে পরিষ্কার বুঝছে কেউ একজন জানতে চাইছে, কী হয়েছে তোমার? তুমি এ রকম করছ কেন?

আলো তার উত্তরে বলতে চাইল, কে? তুমি কে?

সে মুখে বলল না। মনে মনে ভাবল। এতেই কাজ হল। যে প্রশ্ন করেছিল সে তাকে সঙ্গে সঙ্গে বলল, আমি তোমাদের স্যার। আমি নিশানাথ।

আপনি কথা বলছেন আমার সাথে?

হ্যাঁ।

কীভাবে কথা বলছেন?

অন্য রকম ভাবে বলছি। কীভাবে বলছি আমি জানি না। তুমি এ রকম হৈ-চৈ করছ কেন?

আলো আবার বলল, আপনি কীভাবে কথা বলছেন?

আমি জানি না কীভাবে বলছি।

অন্যরা আমার সঙ্গে কথা বলে না কেন?

এই ভাবে কথা বলার পদ্ধতি অন্যরা জানে না। কিন্তু তুমি আমাকে বল। তুমি হৈ-চৈ করছ কেন? দরজায় ধাক্কা দিচ্ছ কেন?

আমার ভয় লাগছে, তাই এরকম করছি।

কোনো ভয় নেই।

কথাবার্তার এই পর্যায়ে দরজা খুলে দীপা বের হয়ে এলেন।

 

রাত দুটোর মতো বাজে। আলো ঘুমুচ্ছে। গাঢ় ঘুম। দীপা তাঁর স্বামীর ঘরে। দুজন অনেকক্ষণ ধরেই চুপচাপ বসে আছেন, যেন কারো কোনো কথা নেই।

মহসিন বললেন, কিছু একটা করা দরকার।

দীপা কিছু বললেন না। বলার কিছু নেইও।

মহসিন বললেন, মূক-বধির ছেলে-মেয়ে তো আরো আছে, তারা সবাই তো এরকম না। তারা স্কুল কলেজে যাচ্ছে, পড়াশোনা করছে।

দীপা বললেন, আলোও করবে।

আর করবে। প্রাইভেট কোচ করার চেষ্টা করে তো দেখা গেল। লাভটা তাতে কী হল?

দীপা কিছু বললেন না। মূক-বধির স্কুলের এক জন খুব নামী শিক্ষক তাঁরা রেখেছিলেন, যিনি আলোকে পড়াশোনা শেখানোর চেষ্টা করবেন, অক্ষরপরিচয় করিয়ে দেবেন, লীপ রীডিং শেখাবেন। কোনো লাভ হয় নি। আলো মাস্টারের সামনে পাথরের মতো মুখ করে বসে থাকে। মাস্টার সাহেব যত বার বলেন–বল আ। খুব সহজ। হাঁ কর। হাঁ করে কিছু বাতাস বের করে দাও। বাতাস বের করবার সময় এই জায়গাটা কাঁপবে। তিনি হাত দিয়ে গলা দেখিয়ে দেন। মুখের সামনে এক টুকরা কাগজ রেখে বুঝিয়ে দেন আ বললে কীভাবে কাগজটা কাঁপবে। আলো সব দেখে, কিন্তু কিছুই করে না। দু দিন মাস্টার প্রাণান্ত চেষ্টা করলেন। তৃতীয় দিনে আলোর উপর খানিকটা রেগে গেলেন। তীব্র গলায় বললেন, যা বলছি কর। বলার সঙ্গে সঙ্গে আলো ঝাপিয়ে পড়ল মাস্টার সাহেবের উপর। হিংস্র পশুর ঝাপ। চেয়ার নিয়ে মাষ্টার সাহেব উল্টে পড়ে গেলেন। আলো তাঁর হাত কামড়ে ধরল। রক্ত বের হয়ে বিশ্রী কাণ্ড। পড়াশোনার সেখানেই ইতি।

মহসিন বললেন, বসে আছ কেন? যাও, ঘুমিয়ে পড়।

দীপা ক্ষীণ গলায় বললেন, তুমি মেয়ের উপর রাগ করে থেকে না।

মহসিন বললেন, রাগ করব কেন? মেয়ে কি আমার না?

তাহলে এস, মেয়ের গালে একটু চুমু দিয়ে যাও।

তিনি সঙ্গে সঙ্গে উঠে এলেন। আলো ঘুমোচ্ছ। কী অদ্ভুত সুন্দর য়েছে তাঁর এই মেয়ে! কী ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে এর জন্যে কে জানে? তনি নিচু হয়ে মেয়ের গালে চুমু খেলেন।

আলো সঙ্গে সঙ্গে চোখ মেলল। এতক্ষণ সে জেগেই ছিল। দীপা ইশারায় বললেন, তুমি কি এতক্ষণ জেগে ছিলে?

আলো হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ল। দীপা বিস্মিত হয়ে তাকালেন। আলো শারায় বলল, সে আর কোন দিন হৈ-চৈ চেচাঁমেচি করবে না এবং এই রে সে একা একা থাকতে পারবে। আজকের চেঁচামেচির জন্যে তার খুব লজ্জা লাগছে।

দীপা স্বামীর দিকে তাকালেন। মেয়ের এই পরিবর্তন তাঁর কাছে খুবই অস্বাভাবিক লাগছে।

আলো আবার ইশারায় বলল, সে পড়াশোনা করতে চায়। এখন থেকে সে স্যারের কাছে পড়বে।

মহসিন বললেন, বেশ তো, আবার তোমার আগের ঐ স্যারকে খবর দেব।

আলো বাবার কথা বুঝতে পারল না।

মহসিন দীপাকে বললেন, তুমি ওকে ইশারায় আমার কথা বুঝিয়ে দাও। ও কিছু বুঝতে পারছে না।

দীপা আলোকে বুঝিয়ে দিলেন। আলো ইশারায় বলল, সে ঐ স্যারের কাছে পড়বে না। সে নিশানাথ স্যারের কাছে পড়বে।

তাঁর কাছে পড়তে চাও কেন?

তিনি আমাকে কথা বলা শিখিয়ে দেবেন।

উনি তো মা পারবেন না। সবাই সব কিছু পারে না। কথা বলা শখানোর জন্যে আলাদা স্যার আছেন।

আমি তাঁর কাছেই পড়ব। উনি আমাকে কথা বলা শিখিয়ে দেবেন।

আচ্ছা ঠিক আছে।

আলো শুয়ে পড়ল। কোলবালিশ জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করল এবং Tয় সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমিয়ে পড়ল। বাইরে শো শো করে হাওয়া দিচ্ছে। কিাশ মেঘলা ছিল। বৃষ্টি হবে বোধহয়। দীপা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন।

তাঁর চোখ ভেজা। তাঁর বড়ো কষ্ট হচ্ছে।