মেঘবর্ণ মহাবলী, হয়ে মহা কুতুহলী,
প্রণমিল ভীমের চরণে।
ভীম বড় কুতুহলে, তাহারে করিল কোলে,
আশীর্ব্বাদে হরষিত মনে।।
প্রণমিয়া কর্ণসুতে, মেঘবর্ণ আনন্দেতে,
অন্তরীক্ষে করিল গমন।
প্রকাশি রাক্ষস মায়া, দূর কৈল রবিছায়া,
অন্ধকারে না চলে নয়ন।।
আকাশে খেচর সব, করে মহাকলরব,
বরিষে মুষলধারে জল।
প্রচণ্ড মারুত বয়, ঘোর শীলাবৃষ্টি হয়,
পূর্ণিত হইল ধরাতল।।
বাত হৈল অতি গুরু, ভাঙ্গিল যতেক তরু,
পত্র পুষ্প পড়িল ভূতলে।
তাহা দেখি নৃপসেনা, হইলেক অন্যমনা,
অশ্বনিতে না পারিল শালে।।
মারুতি রুধিল বাট, ত্রাসিত রাজার ঠাট,
পরস্পর কহে নানা কথা।
কিবা হৈল দুরদৃষ্ট, অকস্মাৎ জলবৃষ্ট,
মায়া কৈল কেমন দেবতা।।
মনে উপজিল ভয়, এ কর্ম্ম অন্যের নয়,
ঘোড়া নিতে আসে পুরন্দর।
শ্যামবর্ণ পীতপুচ্ছে, হেন অশ্ব কোথা আছে,
শিলাঘাতে শরীর জর্জ্জর।।
নৃপসেনা হেনমতে, বিষাদ করিয়া চিতে,
অন্ধকারে না দেখি নয়নে।
চান্দোয়া চামর কোথা, খণ্ডখণ্ড হৈল ছাতা,
করি দন্ত খসি পড়ে ভূমে।।
মেঘবর্ণ হেনকালে, ঘোটক লইয়া কোলে,
লয়ে গেল পর্ব্বত উপরে।
বৃষকেতু বৃকোদর, আনন্দিত বহুতর,
আলিঙ্গন করিল তাহারে।।
ভারতের পুণ্যকথা, শুনিলে ঘুচয়ে ব্যথা,
কলির কলুষ বিনাশন।
সেবি কৃষ্ণ পদাম্বুজ, কহে কুষ্ণ দাসানুজ,
কৃষ্ণপদে থাকে যেন মন।।