দিয়া রাজপ্রসাদ পাঠান রাম চর।
রাবণেরে ভেটে গিয়া লঙ্কার ভিতর।।
দাণ্ডাইতে নারে চর নাহি নাড়ে পাশ।
ঊর্দ্ধমুখে বার্ত্তা কহে ঘন ঊর্দ্ধশ্বাস।।
তোমার আজ্ঞায় গেনু কটক ভিতরে।
যাবামাত্র বিভীষণ চিনিল আমারে।।
বিভীষণ ধরি নিল কাটিবার মনে।
প্রাণদান করিলেন রাম নিজ গুণে।।
শ্রীরাম লক্ষ্মণ বিভীষণ কপিরাজে।
দেখিলাম চারি জনে আনন্দে বিরাজে।।
রামের যেমনু ধনু শর তুল্য তারি।
আছুক অন্যের কাজ একা রামে নারি।।
ভুবন সহায়ে আসে অষ্টলোকপাল।
তবু জিনিবারে নারে বিক্রমে বিশাল।।
শতেক যোজন সেতু হইল সাগরে।
বান্ধিল যোজন শত বৃক্ষ ও পাথরে।।
উত্তর কূলের সেতু ঠেকিল দক্ষিণে।
পার হৈল রাম-সৈন্য যুঝিবার মনে।।
কালো কালো কপিগণ পর্ব্বত আকার।
দেখিয়া ডরাই যেন মহা-অন্ধকার।।
কেহ বা পিঙ্গল বর্ণ কেহ বা শ্যামল।
রক্তবর্ণ কেহ, কেহ বরণ উজ্জ্বল।।
উভে পরিমাণ দেখি পর্ব্বত সমান।
রণে প্রবেশিতে চাহে কিন্তু কাঁপে প্রাণ।।
এক চাপ করি সেনা যায় পৃষ্ঠে পৃষ্ঠে।
ওর নাহি পাই যত চাহি একদৃষ্টে।।
গণিয়া বলিতে পারি বরিষার ধারা।
দৃষ্টে সংখ্যা হয় যদি আকাশের তারা।।
নির্ণয় করিতে পারি আকাশের পানি।
তথাপি বানর-সৈন্য নিশ্চয় না জানি।।
কৃত্তিবাস পণ্ডিতের মধুর পাঁচালী।
লঙ্কাকাণ্ডে গায় তার প্রথম শিকলি।।