যুধিষ্ঠির বলিলেন মাতুল পীড়িত।
প্রহারের কাল কৃষ্ণ নহেন উচিত।।
গোবিন্দ বলেন রিপু পাই যবে পাশ।
কালাকাল নাহি চাহি করি যে বিনাশ।।
যাহার মরণে ভদ্র দেখি মহারাজ।
তাহে বিনাশিতে দোষ নাহি যুদ্ধমাঝ।।
গোবিন্দ বচনে শক্তি লয়ে যুধিষ্ঠির।
ডাকিয়া বলেন রে সামাল মদ্রবীর।।
শুনি শল্য ধনুকেতে বাণ যোড়ে বেগে।
ভীম আদি বাণ কাটে রহি চারিদিকে।।
ছঙ্কারে ছাড়েন শক্তি ধর্ম্মের নন্দন।
লক্ষাপেরে শক্তি যেন এড়িল রাবণ।।
গোবিন্দ রহেন তবে শক্তিশেল মুখে।
গগনে আগুন উঠে ঝলকে ঝলকে।।
দেখি তাহা শল্য বীর বাণেতে তৎপর।
শক্তি নিবারিতে বাণ এড়িল সত্বর।।
শক্তিতে ঠেকিয়া বাণ খন্ড খন্ড হয়।
শল্য বলে মোর আজি জীবন সংশয়।।
পড়িলেক শক্তি আসি শল্যরাজ বুকে।
শক্তি ঘায়ে শল্য পড়ে সংগ্রাম সম্মূখে।।
জীবন ছাড়িল শল্য পাইয়া বেদনা।
সমরে পড়িল শল্য কটকে ঘোষণা।।
শল্যরাজানুজ আসি শোকেতে মিলিল।
ধর্ম্মরাজ সহিত সংগ্রামে প্রবেশিল।।
বাণ বিষ্টি করি ধর্ম্মরাজে আচ্ছাদিল।
চতুর্দ্দিকে শরবৃষ্টি অন্ধকার হৈল।।
দোঁহাকার বাণ কাটে দোঁহে বলবান।
বজ্রবাণ এড়ে দোঁহে পুরিয়া সন্ধান।।
বাণ দেখি মনে মনে চিন্তিত হইয়া।
যুধিষ্ঠির বাণ এড়িলেন বিশেষিয়া।।
নির্ভয়ে পড়িল গিয়া তাহার শরীরে।
শল্যের অনুজ বীর পড়ে ভূমিপরে।।
মদ্ররাজে ধর্ম্মরাজ রণেতে পাড়িল।
সংগ্রামের স্থলে বহু কোলাহল হৈল।।
সমরে পড়িল শল্য হৈল কলরব।
কৌরববাহিনী ভঙ্গ সানন্দ পান্ডব।।
পান্ডব দলেতে সবে করে সিংহনাদ।
শুনি কুরুদলে হৈল বড়ই বিষাদ।।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
কাশীরাম দাস কহে শুনে পুন্যবান।।