হেনকালে শতক্রতু, অর্জ্জুনের প্রীতি হেতু,
আজ্ঞা কৈল নৃত্যের কারণ।
বিশ্বাবসু হাহা হুহু, ইত্যাদি গন্ধর্ব্ব বহু,
চিত্রসেন তুম্বুরু গায়ন।।
নানা ছন্দে বাদ্য বায়, মধুর সুস্বর গায়,
নৃত্য করে যতেক অপ্সর।
ঊর্ব্বশী ঘৃতাচী গৌরী, মিশ্রকেশী বিভাবরী,
গাহে গান মধুর সুস্বর।।
অলম্বষা ধন্যা অম্বা, গোপালী মেনকা রম্ভা,
বিপ্রচিত্তি সুধা সুধাপ্রভা।
চিত্রসেনা চিত্ররেখা, অপ্সরী মৃদঙ্গমুখা,
বুদ্ধুদা রোহিণী সুরলোভা।।
নৃত্যগীতে সপ্রতিভা, পূর্ণচন্দ্র মুখপ্রভা,
অঙ্গ ঢাকি অম্লান অম্বরে।
ইষৎ নয়ন কোণে, নিরখয়ে যেইজনে,
অন্য থাক, মুনি মন হরে।।
জঘন কুঞ্জরকর, ক্ষীণ মাজা মৃগবর,
নিতম্ব ভূধর পয়োধর।
বিনাশে মুনির তপ, বর্ণন না যায় রূপ,
দিতে নাহি অন্য পাঠান্তর।।
নৃত্যগীত বাদ্যে সবে, মোহিত যতেক দেবে,
আনন্দিত হৈল সুরগণ।
অর্জ্জুনের ম্লানমুখ, ভাবিয়া পূর্ব্বের দুখ,
ভ্রাতা মাতা করিয়া স্মরণ।।
ক্ষণেক নয়নকোণে, চাহিলা ঊর্ব্বশী পানে,
জানিলেন সহস্রলোচন।
নৃত্যগীত নিবারিল, সবারে বিদায় দিল,
নিজধামে গেল দেবগণ।।
দিব্য সুধারস কথা, আরণ্যপর্ব্বের গাথা,
শুনিলে অধর্ম্ম হয় নাশ।
কমলাকান্তের সুত, হেতু সুজনের প্রীত,
বিরচিল কাশীরাম দাস।।