[আমেরিকায় প্রদত্ত একটি ভাষণের সারাংশ]
ফরাসীদেশে দীর্ঘকাল ধরে জাতির মূলমন্ত্র ছিল ‘মানুষের অধিকার’, আমেরিকায় এখনও ‘নারীর অধিকার’ জনসাধারণের কানে আবেদন জানায়; ভারতবর্ষে কিন্তু আমাদের মাথাব্যথা ঈশ্বরের বিভিন্নভাবে প্রকাশের অধিকার নিয়ে।
সর্বপ্রকার ধর্মমতই বেদান্তের অন্তর্ভুক্ত। ভারতবর্ষে আমাদের একটা স্বতন্ত্র ভাব আছে। আমার যদি একটি সন্তান থাকত, তাকে মনঃসংযমের অভ্যাস এবং সেই সঙ্গে একপঙ্ক্তি প্রার্থনার মন্ত্রপাঠ ছাড়া আর কোন প্রকার ধর্মের কথা আমি শিক্ষা দিতাম না। তোমরা যে অর্থে প্রার্থনা বলো, ঠিক তা নয়, সেটি হচ্ছে এইঃ ‘বিশ্বের স্রষ্টা যিনি, আমি তাঁকে ধ্যান করি; তিনি আমার ধীশক্তি উদ্বুদ্ধ করুন।’ তারপর সে বড় হয়ে নানা মত এবং উপদেশ শুনতে শুনতে এমন কিছু একটা পাবে, যা তার কাছে সত্য বলে মনে হবে। তখন সেই সত্যের যিনি উপদেষ্টা, সে তাঁরই শিষ্য হবে। খ্রীষ্ট, বুদ্ধ বা মহম্মদ—যাঁকে ইচ্ছা সে উপাসনা করিতে পারে; এঁদের প্রত্যেকের অধিকার আমরা মানি, আর সকলের নিজ নিজ ইষ্ট বা মনোনীত পন্থা অনুসরণ করবার অধিকারও আমরা স্বীকার করি। সুতরাং এটা খুবই স্বাভাবিক যে, একই সময়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে এবং নির্বিরোধে আমার ছেলে বৌদ্ধ, আমার স্ত্রী খ্রীষ্টান এবং আমি নিজে মুসলমান হতে পারি।
আমরা জানি যে, সব ধর্মপথ দিয়েই ঈশ্বরের কাছে পৌঁছান যায়—কেবল আমাদের চোখ দিয়ে ভগবানকে না দেখলে যে পৃথিবীর উন্নতি হবে না, তা নয়, আর পৃথিবী-সুদ্ধ লোক আমার বা আমাদের চোখে ঈশ্বরকে দেখলেই সব ভাল হয়ে যাবে, তাও নয়। আমাদের মূল ভাব হচ্ছে এই যে, তোমার ধর্মবিশ্বাস আমার হতে পারে না, আবার আমার মতবাদও তোমার হতে পারে না। আমি আমার নিজেরই একটি সম্প্রদায়। এটা ঠিক যে, ভারতবর্ষে আমরা এমন এক ধর্মমত সৃষ্টি করেছি, যাকে আমরা একমাত্র যুক্তিপূর্ণ ধর্মপদ্ধতি বলে বিশ্বাস করি, কিন্তু এর যুক্তিবত্তায় আমাদের বিশ্বাস নির্ভর করছে সকল ঈশ্বরান্বেষীকে এর অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়ার ওপর—সর্বপ্রকার উপাসনাপদ্ধতির প্রতি সম্পূর্ণ উদারতা দেখান এবং জগতে ভগবদভিমুখী চিন্তাপ্রণালীগুলি গ্রহণ করবার ক্ষমতার ওপর। আমাদের নিয়মপদ্ধতির মধ্যেও অপূর্ণতা আছে, তা আমরা স্বীকার করি, কেন না তত্ত্ববস্তু হচ্ছে সকল নিয়মপদ্ধতির ঊর্ধ্বে; আর এই স্বীকৃতির মধ্যেই আছে অনন্ত বিকাশের ইঙ্গিত ও প্রতিশ্রুতি। মত, উপাসনা এবং শাস্ত্র মানুষের স্বরূপোপলব্ধির উপায় হিসাবে ঠিকই, কিন্তু উপলব্ধির পরে সে সবই পরিহার করে। বেদান্তদর্শনের শেষ কথা, ‘আমি বেদ অতিক্রম করেছি’—আচার-উপাসনা, যাগযজ্ঞ এবং শাস্ত্রগ্রন্থ, যার সাহায্যে এই মুক্তির পথে মানুষ পরিভ্রমণ করেছে, তা সবই তার কাছে বিলীন হয়ে যায়। ‘সোঽহং, সোঽহম্’—আমিই তিনি—এই ধ্বনি তখন তার কণ্ঠে উদ্গীত হয়। ঈশ্বরকে ‘তুমি’ সম্বোধন তখন অসহনীয়, কারণ সাধক তখন তার ‘পিতার সঙ্গে অভিন্ন।’
ব্যক্তিগতভাবে আমি অবশ্য বেদের ততখানিই গ্রহণ করি, যতখানি যুক্তির সঙ্গে মেলে। বেদমতের অনেক অংশ বাহ্যতঃ পরস্পরবিরুদ্ধ। পাশ্চাত্যে যাকে ‘প্রত্যাদিষ্ট বাণী’ বলে এগুলি তা নয়, কিন্তু এগুলি ঈশ্বরের সমষ্টি জ্ঞান বা সর্বজ্ঞত্ব, যা আমাদের ভিতরেও আছে। তা বলে যে-বইগুলিকে আমরা বেদ বলি, শুধুমাত্র ঐগুলির মধ্যেই এই জ্ঞানভাণ্ডার নিঃশেষিত—এ-কথা বলা বাতুলতা। আমরা জানি, সব সম্প্রদায়ের শাস্ত্রের মধ্যেই তা বিভিন্ন মাত্রায় ছড়িয়ে আছে। মনু বলেন, বেদের যে অংশটুকু বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত, ততটুকুই যথার্থ বেদ; আমাদের আরও অনেক মনীষী এই মত পোষণ করেন। পৃথিবীর ধর্মগ্রন্থগুলির মধ্যে একমাত্র বেদই ঘোষণা করেন, বেদের নিছক অধ্যয়ন অতি গৌণ ব্যাপার।
স্বাধ্যায় তাকেই বলে, ‘যার দ্বারা আমরা শ্বাশ্বত-সনাতন সত্য উপলব্ধি করি’, এবং তা নিছক পাঠ, বিশ্বাস বা তর্ক-যুক্তির দ্বারা সম্ভব নয়; সম্ভব একমাত্র অপরোক্ষানুভূতি ও সমাধির দ্বারা। সাধক যখন এই অবস্থা প্রাপ্ত হন, তখন তিনি সগুণ ঈশ্বরের ভাব লাভ করেন। অর্থাৎ তখন ‘আমি আর আমার পিতা এক।’ নির্বিশেষ ব্রহ্মের সঙ্গে এক বলেই তিনি নিজেকে জানেন এবং সগুণ ঈশ্বরের মত নিজেই নিজেকে প্রক্ষিপ্ত করেন। মায়ার আবরণ—অজ্ঞানের মধ্য দিয়ে দেখলে ব্রহ্মকে সগুণ ঈশ্বর বলে বোধ হয়।
পঞ্চেন্দ্রিয়ের সহায়ে যখন তাঁর কাছে সমুপস্থিত হই, তখন আমরা তাঁকে শুধু সগুণ ভগবান্-রূপেই ধারণা করিতে পারি। ভাবটি হচ্ছে এই, আত্মা কখনও ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য হতে পারেন না। জ্ঞাতা আবার নিজেকে জানবে কেমন করে? কিন্তু তিনি যেমন, ঠিক তেমনই নিজেকে প্রতিবিম্বিত করতে পারেন, আর এই প্রতিবিম্বের সর্বোচ্চরূপ, আত্মার এই ইন্দ্রিয়ানুভবগম্য অভিব্যক্তিই সগুণ ঈশ্বর। পরমাত্মাই হচ্ছেন সনাতন জ্ঞাতা এবং তাঁকে জ্ঞেয় করবার জন্যই আমরা অনন্তকাল ধরে চেষ্টা করছি, আর এই প্রচেষ্টার ফলে এই বিশ্ব-প্রপঞ্চ ফুটে উঠেছে—যাকে আমরা জড় বলে থাকি। কিন্তু এ-সব খুব দুর্বল প্রয়াস; আমাদের জ্ঞানের বিষয়রূপে আত্মার সম্ভবপর সর্বোচ্চ প্রকাশ হচ্ছে সগুণ ঈশ্বর।
তোমাদেরই জনৈক পাশ্চাত্য চিন্তাশীল ব্যক্তি বলেছেন, ‘একটি উত্তম ভগবান্ গড়াই মানুষের মহত্তম কীর্তি’; যেমন মানুষ, তেমন ভগবান্। এই রকম মানবিক প্রকাশ ছাড়া, অন্য কোন উপায়েই মানুষ ঈশ্বরকে দর্শন করতে পারে না। যা ইচ্ছা বলো, যত খুশী চেষ্টা কর, তুমি ভগবান্কে মানুষ ব্যতীত অন্য কিছুই কল্পনা করতে পার না এবং তিনি ঠিক তোমারই মত। একজন নির্বোধ লোককে বলা হয়েছিল—শিবের একটি মূর্তি নির্মাণ করতে; বেশ কিছুদিন দারুণ হাঙ্গামা করে অবশেষে—সে একটি বানরের মূর্তি তৈরী করতে পেরেছিল মাত্র! ঠিক তেমনই, যখনই আমরা ঈশ্বরের পরিপূর্ণ সত্তা ভাবতে চেষ্টা করি, তখনই নিদারুণ ব্যর্থতার সম্মুখীন হই, কারণ আমাদের মনের বর্তমান প্রকৃতি অনুযায়ী ঈশ্বরকে ব্যক্তিরূপে দেখতেই আমরা বাধ্য। যদি মহিষেরা কখনও ভগবানকে পূজা করবার বাসনা করে, তবে তাদের নিজ-প্রকৃতি অনুযায়ী তারা তাঁকে মস্ত একটা মহিষ বলেই ভাববে; একটা মাছ যদি ভগবানকে উপাসনা করতে ইচ্ছা করে, তা হলে ঈশ্বর সম্বন্ধে তার কল্পনা হবে যে, তিনি নিশ্চয়ই প্রকাণ্ড এক মাছ; ঠিক সেই প্রকার মানুষ তাঁকে মানুষ বলেই চিন্তা করে। মনে কর যেন এই মানুষ, মহিষ এবং মাছ সব এক-একটি ভিন্ন ভিন্ন পাত্র, নিজ নিজ আকার ও সামর্থ্যানুযায়ী তারা ঈশ্বররূপ সমুদ্রজলে পূর্ণ হতে চলেছে। মানুষের মাঝে সে-জল মানুষের আকার নেবে, মহিষের মধ্যে মহিষের আকার এবং মাছেতে মাছের আকার; কিন্তু প্রতি পাত্রে ঈশ্বরসমুদ্রের সেই একই জল।
দু-রকম মানুষ ভগবানকে ব্যক্তিরূপে উপাসনা করে না—নরপশু, যাদের ধর্ম বলে কিছু নেই; এবং পরমহংস, যিনি মনুষ্য-প্রকৃতির সকল সীমা অতিক্রম করেছেন। সমস্ত প্রকৃতিই তাঁর কাছে স্ব-স্বরূপ হয়ে গেছে, তিনিই শুধু ঈশ্বরকে তাঁর স্ব-রূপে পূজা করতে পারেন। সেই নরপশু উপাসনা করে না তার অজ্ঞতার জন্য, আর জীবন্মুক্তেরা উপাসনা করেন না, তাঁরা নিজেদের মধ্যে ভগবানকে দেখছেন বলে। তাঁদের কোন সাধনা থাকে না, ঈশ্বরকে তাঁরা স্বীয় আত্মার স্বরূপ বলে বোধ করেন। তাঁরা বলেন, ‘সোঽহং, সোঽহম্’—আমিই তিনি; তাঁরা নিজেদের উপাসনা নিজেরা আর করবেন কিভাবে?
একটা গল্প বলছি তোমাদের। একটি সিংহশিশু তার মরণাপন্ন জননীর দ্বারা কোনভাবে পরিত্যক্ত হয়ে একদল মেষের মধ্যে এসে জুটেছিল। মেষেরাই তাকে খাওয়াত আর আশ্রয়ও দিয়েছিল। সিংহটি ক্রমশঃ বড় হয়ে হাঁটতে শিখল এবং মেষেরা যখন ‘ব্যা ব্যা’ করে, সেও ‘ব্যা ব্যা’ করতে লাগল। একদিন অপর একটি সিংহ কাছাকাছি এসে পড়ে। অবাক হয়ে দ্বিতীয় সিংহটি জিজ্ঞাসা করে উঠল, ‘আরে, তুমি এখানে কি করছ?’ কারণ সে শুনে ফেলেছিল, সিংহ-শিশুটিও বাকী সকলের সঙ্গে ‘ব্যা ব্যা’ করে ডাকছে।
ছোট সিংহটি ‘ব্যা ব্যা’ করে বললে, ‘আমি ছোট মেষশিশু, আমি নেহাৎ শিশু, বড় ভয় পেয়েছি আমি।’ প্রথম সিংহটি গর্জন করে উঠল, ‘আহাম্মক! চলে এসো, তোমাকে একটা মজা দেখাব।’ তারপর সে তাকে একটা শান্ত জলাশয়ের ধারে নিয়ে গিয়ে, তার প্রতিবিম্বটি দেখিয়ে তাকে বলল, ‘তুমি হচ্ছ একটা সিংহ—আমার দিকে তাকাও, ঐ মেষটিকে দেখ, আর তোমার নিজের চেহারাও এই দেখ।’ সিংহশিশুটি তখন তাকিয়ে দেখল আর বলল, ‘ব্যা ব্যা, আমি তো মেষের মত দেখতে নই—ঠিক আমি সিংহই বটে!’ তারপর এমন গর্জন সে করে উঠল, যেন পাহাড়ের ভিত পর্যন্ত কেঁপে উঠেছিল।
আমাদেরও ঠিক এই অবস্থা। মেষ-সংস্কারের আবরণে আমরা সকলেই সিংহ। আমাদের পরিবেশই আমাদিগকে দুর্বল ও মোহগ্রস্থ করে ফেলেছে। বেদান্তের কার্য হচ্ছে এই মোহ-বিমোচন। মুক্তিই আমাদের চরম লক্ষ্য। প্রাকৃতিক নিয়মের প্রতি আনুগত্য মুক্তি—এ-কথা আমি স্বীকার করি না। এ-কথার অর্থ যে কী, তা আমি বুঝি না। মানুষের উন্নতির ইতিহাস অনুযায়ী প্রাকৃতিক নিয়মের ঊর্ধ্বে যাওয়াই উন্নতির কারণ। কেউ কেউ হয়তো বলবেন, সাধারণ নিয়মকে জয় করা তো উচ্চতর নিয়মের সাহায্যেই হয়ে থাকে, কিন্তু বিজয়ী মন সেখানেও মুক্তিকেই খুঁজে বেড়ায়, আর যখনই জানতে পারে, নিয়মের মধ্য দিয়েই সংগ্রাম, তখনই সে তাও জয় করতে চায়। সুতরাং মুক্তিই হল সর্বকালের আদর্শ। বৃক্ষ কখনও নিয়মকে অমান্য করে না; কোন গরুকে কখনও চুরি করতে দেখিনি। ঝিনুক কদাপি মিথ্যা কথা বলে না; তথাপি তারা মানুষের চেয়ে বড় নয়। নিয়মের প্রতি অনুরক্তি শেষ পর্যন্ত আমাদের জড় পদার্থেই পরিণত করে—তা সমাজে হোক, রাজনীতিতে হোক বা ধর্মেই হোক। এ-জীবন তো মুক্তিরই উদাত্ত নির্ঘোষ; আচার-নিয়মের আধিক্য মানে মৃত্যু। হিন্দুদের মত অন্য কোন জাতির এত বেশী সামাজিক নিয়ম-কানুন নেই, যার ফল জাতীয় মৃত্যু। কিন্তু হিন্দুদের স্বাতন্ত্র্য এই যে, ধর্মের মধ্যে তারা কোন মতবাদ বা নিয়মাদি আনেনি। তাদের ধর্মের তাই সর্বোচ্চ বিকাশ হয়েছে। এই ধর্মের ক্ষেত্রেই আমরা সবচেয়ে বাস্তবদৃষ্টিসম্পন্ন—আর তোমরা সেখানেই সবচেয়ে বাস্তবদৃষ্টিহীন।
আমেরিকাতে জনকয়েক লোক এসে বলল, ‘আমরা একটা যৌথ কারবার করব’, পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তা হয়ে গেল। ভারতবর্ষে কুড়িজন লোক মিলে দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহ ধরে যৌথ কারবার সম্পর্কে আলোচনা করতে পারে অথচ তাতেও হয়তো তা গঠিত হবে না; কিন্তু কেউ যদি বিশ্বাস করে যে, চল্লিশ বৎসর ঊর্ধ্ববাহু হয়ে তপস্যা করলে সে জ্ঞানলাভ করবে—তা সে তৎক্ষণাৎ করবে! কাজেই আমরা আমাদের ভাবে বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন, তোমরাও তেমনি তোমাদের ভাবে।
কিন্তু অনুভব-রাজ্যে প্রবেশের যত পথ, তার সেরা পথ হচ্ছে অনুরাগ। ঈশ্বরে অনুরাগ হলে সমস্ত বিশ্বকেই আপন বোধ হয়, কারণ সবই তাঁর সৃষ্টি। ভক্ত বলেন, ‘তাঁরই তো সব, আর তিনিই আমার প্রেমাস্পদ; আমি তাঁকেই ভালবাসি।’ এমনি করে ভক্তের কাছে সব কিছু পবিত্র হয়ে ওঠে, কারণ সকল বস্তুই তাঁর। তা হলে আমরা কি করেই বা কাউকে কষ্ট দিতে পারি? কেমন করে তবে অপরকে ভাল না বেসে পারি? ঈশ্বরকে ভালবাসবার সঙ্গে সঙ্গে—তারই ফলরূপে অবশেষে প্রত্যেকের প্রতিই ভালবাসা এসে যাবে। যতই ঈশ্বরের কাছাকাছি যাব, ততই দেখতে থাকব যে, তাঁতেই সবকিছু রয়েছে, আমাদের হৃদয় হবে তখন প্রেমের অনন্ত প্রস্রবণ। প্রেমের দিব্যালোকে মানুষ রূপান্তরিত হয়ে যায়, আর শেষ পর্যন্ত সেই মধুর এবং উদ্দীপনাময় সত্যটি উপলব্ধি করে—প্রেম, প্রেমিক আর প্রেমাস্পদ—তত্ত্বতঃ একই।