একটি বছর ত্রিশ-একত্রিশের তরুণীর মৃতদেহ, অন্যটি একটি বাচ্চা মেয়ের—বছর চার বয়স হবে বড় জোর, গায়ে কোন জামা নেই, কেবল একটা ইজের পরা। তারও পেটে-বুকে নিষ্ঠুর আঘাতের চিহ্ন।
নৃশংস-বীভৎস ভাবে হত্যা করা হয়েছে দুজনকেই।
কোন উন্মাদ যেন এক হত্যা-লালসায় কোন তীক্ষ্ণ ধারালো অস্ত্রের দ্বারা ওদের বার বার আঘাত করে হত্যা করেছে।
সত্যি কথা বলতে কি সুদৰ্শন মল্লিকেরও ঘরের মধ্যে পা ফেলে প্রথমটায় মাথার মধ্যে ঝিমঝিম করে উঠেছিল।
মাত্র মাস দুই হবে সুদৰ্শন প্রমোশন পেয়ে লালবাজারে পোস্টিং পেয়ে এসেছে। ইতিমধ্যে গত দুইমাসে আরো দুটি হত্যার ব্যাপারে তাকে দৌড়া-দৌড়ি করতে হয়েছে, কিন্তু এবারের হত্যা ব্যাপারটা যেন তার তুলনায় যেমনই নিষ্ঠুর তেমনি নৃশংস ও বীভৎস।
মুহুর্তের বিহ্বলতাটা কাটিয়ে ওঠবার পর সুদৰ্শন ভাল করে এককবার ঘরটার মধ্যে চারিদিকে দৃষ্টিপাত করল।
সুন্দর ছিমছাম ভাবে শয়নকক্ষটি যেন সাজানো। জানলায় দরজায় দামী বম্বে প্রিন্টের রঙীন পর্দা। রাস্তার দিকের সব কয়টি জানলাই খোলা।
হাওয়ায় পর্দাগুলো উড়ছিল।
ঘরের একদিকে জানলা ঘেঁষে দুটি পর পর সিঙ্গল বেডে শয্যা—তার উপর দামী বেডকভার।
একধারে ছোট একটি স্টীলের প্রমাণ-আরাশি-বসানো আলমারি। তারই পাশে একটি ড্রেসিং টেবিল। দেওয়াল ঘেঁষে একটি কাবার্ডের উপরে একটি খাপে-ভরা তানপুরা ও একটি বেহালার বাক্স নজরে পড়ে। টেবিলের ওপরে সুন্দরভাবে সাজানো প্রসাধনদ্রব্যগুলি। সামনে ছে টি একটি বসবার টুল।
তার পাশে একটি মোড়া।
অন্যদিকে ঘরের নীচু একটি টেবিলের উপরে একটি দামী রেডিও সেট—তার উপরে কঁ চর ফ্রেমে পাশাপাশি দুটি ফটো।
একটি ফটো বিজিতা ও মণিশঙ্করের—হাসিখুশী দুটি তরুণ-তরুণী—অন্য ফটোটি তাদের একমাত্র সন্তান রুণুর।
ঘরের মেঝেতে চারিদিকে রক্তের ছিটে কালো হয়ে জমাট বেঁধে আছে।
ইতিমধ্যে থানা-অফিসার রবীন দত্ত যতটা সংবাদ মোটামুটি সংগ্রহ করতে পেরেছিল সুদৰ্শনকে বললে।
সুদৰ্শন নিঃশব্দে সব শুনে গেল।
ফ্ল্যাটে তাহলে ঐ তরুণী, ঐ বাচ্চাটা আর চাকরিটা ছাড়া কেউ ছিল না? সুদৰ্শন প্রশ্ন করে।
না। রবীন দত্ত বলে।
চাকরিটার কোন পাত্তা এখনো পাওয়া যায়নি?
না।
কতদিন কাজ করছিল। এখানে চাকরিটা?
মণিবাবু—মানে ভদ্রমহিলাটির স্বামী তো বলছিলেন, বছর কয়েক হবে চাকরাটা ওঁদের কাছে আছে।
কত বয়স?
বছর বারো-তেরো হবে!
দরজাটা তাহলে খোলাই ছিল?
হ্যাঁ—ভেজানো ছিল—মণিবাবু হাত দিয়ে ধাক্কা দিতে গেলেই খুলে যায়।
মণিশঙ্করবাবু আর কাউকেই দেখেননি?
না।
সুদৰ্শন আবার ঘরের চারিদিকে দৃষ্টিপাত করলো। দুপুরেই কোন এক সময় ঐ নিষ্ঠুর নৃশংস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে অথচ কেউ জানতে পারল না!
কেউ কোনরকম আশেপাশে শব্দ, আওয়াজ বা চিৎকার শোনেনি? সুদৰ্শন আবার প্রশ্ন করে।
রবীন দত্তর প্রশ্নে সুদৰ্শন ওর মুখের দিকে তাকাল, কি?
ঐ চাকর ব্যাটারই কীর্তি। খুন করে চুরিটুরি করে পালিয়েছে দলবল নিয়ে।
কিছু চুরি গেছে কিনা জানতে পেরেছেন?
না। এখনো সব অনিশ্চিত, ভাল করে সন্ধান করা হয়নি, তবে সঙ্গে যে বাৰ্গােলরি আছে নিশ্চিত।
তাই যদি হবে তো ভদ্রমহিলার হাতে সোনার চুরি — গলায় সোনার হার কানে টাব— বাচ্চটারিও গলায় হার, হাতে বালা হয়তো থাকত না। ওগুলো না নিয়েই কি তারা যেত! সুদৰ্শন বললে।
হয়তো কেউ এসে পড়েছিল বা তাড়াহুড়াতে সময় করে উঠতে পারেনি, সঙ্গে সঙ্গে পালিয়েছে–
আমার তা যেন ঠিক মনে হচ্ছে না মিঃ দত্ত।
কিন্তু স্যার—
যে ভাবে হত্যা করা হয়েছে দুটো মানুষকে, যদি একটু চিন্তা করেন তো একটা কথা স্বভাবতই মনে হবে
কি স্যার?
ইট ইজ এ ডেলিবারেট, প্রিমেডিটেটেড মার্ডার! সুপরিকল্পিত হত্যা। এবং হত্যার জন্যই হত্যা—হত্যাকারী চুরি করতে এখানে আসেনি! এসেছিল হত্যা করতে এবং হত্যা করে চলে গিয়েছে—হয়তো কোন প্রতিহিংসাবৃত্তি চরিতার্থ করবার জন্যই হত্যা করে গিয়েছে।
প্রতিহিংসা!
সব কিছু দেখে তাই মনে হচ্ছে। হত্যার পিছনে হয়তো একটা আক্রোশ ও প্রতিহিংসার ব্যাপার জড়িয়ে আছে। তাহলেও বলবো হত্যাকারীর দুর্জয় সাহস আছে। দিনের বেলা আশেপাশে লোকজনের মধ্যে এসে হত্যা করে গিয়েছে।
আপনি বলছেন চাকরিটার সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই!
তা ঠিক বলা যায় না। হয়তো থাকতেও পারে—
নিশ্চয়ই স্যার। নচেৎ পালাবে কেন?
এমনও তো হতে পারে মিঃ দত্ত, চাকরিটা বাড়িতে ছিল না সে-সময়—হয়তো সে কোন কাজে ঐ সময় বাইরে গিয়েছিল অথবা ঐ মহিলাই তাকে কোন কাজে কোথাও পাঠিয়েছিলেন আর ঐ সময়ই হত্যাকারী আসে। দরজায় ধাক্কার শব্দ পেয়ে ভদ্রমহিলা গিয়ে দরজা খুলে দেন-তারপর হত্যাকারী তার কাজ শেষ করে চলে যাবার পর হয়তো চাকরিটা ফিরে আসে এবং ঘরে ঢুকে ঐ দৃশ্য দেখে ভয়ে পালিয়েছে।
সে তো থানায় একটা খবরও দিতে পারত!
একটা বারো-তেরো বছরের ছেলের ঐ দৃশ্য দেখে মাথা ঠিক রাখা সাধারণতঃ সম্ভব নয়–সে যাক-সে-সব তো তদন্তসাপেক্ষ।
সুদৰ্শন কথাগুলো বলে আবার ঘরের চারিদিকে দৃষ্টিপাত করতে লাগল, পায়ে পায়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে দাঁড়াল।
মাথা আঁচড়াবার চিরুনিটা হাত দিয়ে তুলল সুদৰ্শন-কয়েক গাছি চুল চিরুনিতে তখনো আটকে আছে
আরো একটা ব্যাপার নজরে পড়ল—ড্রেসিং টেবিলের উপরে কাচের উপরে সিঁদুর ও পাউডারের কিছু গুড়ো এদিক ওদিক পড়ে আছে।
সুদৰ্শন বললে, মনে হয় দুপুরে হয়তো প্রসাধন করেছিলেন ভদ্রমহিলা। প্রসাধনের পর টেবিলের কাঁচটা পরিষ্কার করেননি—করতে ভুলে গিয়েছেন বা করবার সময় পাননি।
তাই কি মনে হচ্ছে স্যার? রবীন দত্ত বলে।
তাছাড়া ভদ্রমহিলার পরনের দামী ঢাকাই শাড়িটা দেখে মনে হয় তো কোথাও বেরুবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন বা হয়েছিলেন, এমন সময় হত্যাকারীর আবির্ভাব ঘটেছিল।
রবীন দত্ত কোন কথা বলে না। সুদৰ্শন আবার বলে, দেওয়ালটা দেখুন। মিঃ দত্ত—
ঘরের দেওয়ালেও কয়েকটা রক্তের ছিটে নজরে পড়ল রবীন দত্তর। রক্ত শুকিয়ে আছে। অতঃপর সুদৰ্শন পাশের ঘরে এলো দুটি ঘরের মধ্যবর্তী দরজা-পথে।
এ ঘরটি মাঝারি সাইজের। এ ঘরেও একপাশে একটি শয্যা, একটি সিঙ্গল খাটে শয্যাটি নীল রংয়ের একটা বেডকভারে ঢাকা।
এক পাশে ডাইনিং টেবিল ছোট সাইজের একটি এবং খােন তিনেক চেয়ার। অন্য পাশে ছোট একটি মীট-সেফ ও একটি কাঠের আলমারি।
ঐ ঘরেরই সংলগ্ন বাথরুম ও কিচেন।
ঐ ঘরেই একটা চেয়ারের ওপরে মাথায় হাত দিয়ে বসে ছিল মণিশঙ্কর।
রোগা পাতলা চেহারা।
পরনে দামী টেরিলিনের সুট-গলার টাইটার নাট লুজ, মাথার চুল সযত্নে ব্যাকব্রাশ করা।
সুদৰ্শন ও রবীন দত্তর পদশব্দে মণিশঙ্কর মুখ তুলে ওদের দিকে তাকাল।
চোখ দুটো তার লাল।
বোধ হয় কাঁদছিল?
মণিশঙ্কর উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করে।
সুদৰ্শন বাধা দেয়, বসুন বসুন মিঃ ঘোষাল।
মণিশঙ্কর আবার চেয়ারটার ওপরে বসে পড়ল।
সুদৰ্শনও একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসল। জিজ্ঞাসা করল, আপনি অফিস থেকে ফোন পেয়েই তো আসেন, তাই না?
হ্যাঁ।
ফোনে পুরুষের গলা শুনেছিলেন?
হ্যাঁ—মোটা, কর্কশ—সর্দিধারা গলার মতো, যেন কেমন ভাঙা-ভাঙা গলার স্বরটা ছিল।
চিনতে পারেননি কার গলা?
না।
আন্দাজও করতে পারছেন না কিছু?
না।
কখন ফোনটা পান?
ঠিক লাঞ্চের কিছু পরে—দুটো বাজতে দশ-পনের মিনিট তখনো বাকি।
তারপরই চলে এলেন। আপনি?
হ্যাঁ-সোজা একটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসি।
কি বলেছিল ফোনে লোকটা?
তখুনি আমাকে বাসায় আসতে বলেছিল। বাসায় নাকি একটা বিশ্ৰী ব্যাপার ঘটেছে। তখন কি স্বপ্নেও ভাবতে পেরেছি। আমার এত বড় সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে—
কথাগুলো বলতে বলতে মণিশঙ্করের গলার স্বরটা যেন কান্নায় বুজে আসতে চায়।
উঃ, এখনো আমি যেন ভাবতে পারছি না। অফিসার—একটু থেমে আবার বলে মণিশঙ্কর।
কাউকে কি আপনার এ ব্যপারে সন্দেহ হয়?
সন্দেহ!
হ্যাঁ-আচ্ছা চাকরটা–
যদিও বয়স অল্প—তবু কি করে বলি বলুন–
তা ঠিক-যা দিনকাল পড়েছে—তা চাকরিটার বাড়ির ঠিকানা-টিকানা কিছু জানেন না?
না। শুনেছি মেদিনীপুর জেলায় কোন এক গ্রামে থাকে–
গ্রামের নাম কি? শোনেননি কখনও কিছু?
পানিপারুল।
আচ্ছা আর কাউকে সন্দেহ হয়?
ভাবতে পারছি না।
আচ্ছা আলমারির চাবি, মানে স্টীলের আলমারিটার চাবি কোথায়?
আমার স্ত্রীর কাছেই থাকত। তার আচিলে বাধা সর্বদা।
দেখলাম না তো আঁচলে তাঁর
তবে হয়তো ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে বা মাথার বালিশের নীচে রেখে দিয়েছে, মণিশঙ্কর বললে।
হুঁ আচ্ছা আপনার স্ত্রী কি সাধারণতঃ বাড়িতেও দামী শাড়ি পারতেন?
অ্যাঁ-হ্যাঁ-ও একটু শৌখিন প্রকৃতির ছিল বরাবর। সর্বদা ছিমছাম সাজগোজ করে থাকতেই ভালবাসত।
কতদিন আপনাদের বিবাহ হয়েছে?
পাঁচ বছর—
নেগোসিয়েট করে বিয়ে হয়েছিল, না আপনাদের লাভ-ম্যারেজ?
আমরা পরস্পরকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম।
এক জাত?
না-ওর বাড়ি কেরালায়—তবে দীর্ঘদিন শান্তিনিকেতনে পড়াশুনা করায় চমৎকার বাংলা বলতে পারত।
মদ্র দেশের মেয়ে ছিলেন তাহলে উনি?
হ্যাঁ।
আত্মীয়স্বজন বলতে আপনার কে কে আছেন? তারা কোথায় থাকেন-মানে মা বাবাভাই-বোন—
আমি বাবার একই ছেলে-চার বোন। বোনেদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে-মা বছর কয়েক হল মারা গেছেন। বাবা এখনো বেঁচে আছেন। রিটায়ার্ড রেলওয়ে অফিসার।
কোথায় থাকেন। তিনি?
আমার ছোট বোন বেনারসে থাকে—ছোট ভক্ষ্মীপতি সেখানকার হিন্দু ইউনিভার্সিটির প্রফেসার, তার কাছেই বাবা রিটায়ার করার পর থেকে থাকেন। অত্যন্ত নিষ্ঠাবান প্রকৃতির লোক।
আপনাদের বিয়েতে আপনার বাবার মত ছিল?
মত ছিল। কিনা জানি না, তবে কোন বাধা দেননি।
আপনার স্ত্রী আপনার বাবার কাছে যেতেন না?
প্রত্যেক পূজোর ছুটিতেই আমরা যেতাম— বাবা ওকে খুব স্নেহ করতেন।
মিঃ ঘোষাল, একটু ইতস্তত করে সুদৰ্শন বলে, যদিও কথাটা অত্যন্ত ডেলিকেট তবু জিজ্ঞাসা করতে হচ্ছে আমাকে
কি কথা?
বিবাহের আগে আপনাদের পরস্পরের কতদিনের আলাপ ছিল?
বছর-খানেক—
উনি তখন শান্তিনিকেতনে থাকতেন?
না—
তবে?
ও কলকাতার একটা মিউজিক কলেজে কাজ করত।
আপনাদের শোবার ঘরে তানপুরা আর বেহালা দেখলাম
হ্যাঁ, আমার স্ত্রীর তানপুরা—ও খুব ভাল গান গাইতে পারত-রেডিও-অ্যাটিস্ট ছিল একসময়-গানের রেকর্ডও আছে
আই সি! তা ঐ বেহালাটা–
ওটা আমার।
আপনিও তাহলে সংগীতানুরাগী?
তা ঠিক নয়—
তবে?
শিখছিলাম বেহালা।
কতদিন ধরে শিখছেন?
বছর-খানেক—
আপনাদের আলাপ কি করে হলো?
এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ওর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে আলাপ করি—আমাদের পরস্পরের এক বন্ধুই আলাপ করিয়ে দিয়েছিল। পরে সেই আলাপ—
বুঝেছি। আপনার সেই বন্ধুটি কোথায় থাকেন?
কলকাতাতেই-বালিগঞ্জে—
কি নাম?
সমীরণ দত্ত— নামকরা গাইয়ে রবীন্দ্ৰ-সঙ্গীতের–
যাঁর বহু রেকর্ড আছে?
হ্যাঁ।
আপনার স্ত্রীর সঙ্গেও তার খুব আলাপ ছিল?
হ্যাঁ—শান্তিনিকেতনে ওরা দুজনেই ছিল অনেকদিন, তখন থেকেই ওদের আলাপ।
সমীরণবাবু আপনাদের এখানে আসতেন না?
আগে মধ্যে মধ্যে আসত।
এখন আর আসেন না?
না।
কেন?
বোধ হয় সময় পায় না।
আপনার স্ত্রী তার ওখানে যেতেন না?
প্রায়ই যেত। বিশেষ করে রেকর্ডিংয়ের সময় রিহার্সেল যখন চলত।
তিনি বিয়ে-থা করেছেন?
না। ব্যাচিলির।
আপনি কোথায় কাজ করেন?
জন গ্রিফিথ অ্যান্ড কোম্পানিতে।
কতদিন কাজ করছেন?
বি. এ. পাস করবার বছরখানেক পরেই আমি চাকরি পাই।
মাইনে কত পান? সব মিলিয়ে আটশ’র মত।