ভূতত্ত্ববিদ ও প্রাণিতত্ত্ববিদগণ স্থির করিয়াছেন যে, মানবজাতির শৈশবে আদিম মানবগণ উদ্ভিদভোজী ছিলেন। মানবের জন্মের ইতিহাস এখনও অন্ধকারাচ্ছন্ন, সমগ্র মানবজাতির পূর্ব্বপুরুষগণ একই সময়ে একই স্থানে উৎপন্ন হইয়াছিলেন কি না তাহা বলিতে পারা যায় না, তবে ইহা স্থির যে, মানবজীবনের প্রারম্ভে আমাদিগের পূর্ব্বপুরুষগণ নিরামিষাশী ছিলেন। যুগপরিবর্ত্তনের ফলে, মানবের ক্রমশঃ, অথবা সহসা, শীতপ্রধান হইয়াছিল। তাহার ফলে, আদিম মানবের লীলাক্ষেত্রসমূহে, জীবনধারণোপযোগী ফলমূলের অভাব হইয়াছিল। এই পরিবর্ত্তনের যুগে আদিম মানবকে বাধ্য হইয়া ফলমূলের পরবর্ত্তে পশুমাংস-ভোজনে প্রবৃত্ত হইতে হইয়াছিল। জগতে মাংসাশী জীবসমূহের জন্মকাল হইতে যেরূপ তীক্ষ্ণনখদন্ত থাকে, কোন অবস্থাতেই মানবের তাহা ছিল না, এই কারণে আদিম মানবকে জীবনযাত্রানির্ব্বাহের জন্য পশুহত্যার উপযোগী আয়ুধ অন্বেষণে প্রবৃত্ত হইতে হইয়াছিল। আদিম মানব তখনও কৃত্রিম উপায়ে অগ্ন্যুৎপাদিন করিতে শিক্ষা করে নাই, সুতরাং ধাতুর ব্যবহার অজ্ঞাত ছিল। এই যুগবিপ্লবের সময়ে, আমাদের পূর্ব্বপুরুষগণ যে আয়ুধ বা প্রহরণ সংগ্রহ করিয়াছিলেন, তাহা তীক্ষ্ণধার প্রস্তরখণ্ড মাত্র।