দ্রৌপদী বলেন, রাজা কর অবধান।
আর কিছু নিবেদন আছে তব স্থান।।
পূর্ব্বে শুনিয়াছি আমি জনকের গৃহে।
দ্বিজ এক বৈল ইন্দ্র গুরু যাহা কহে।।
সংসারেতে যত লোক কর্ম্মভোগ করে।
কর্ম্ম অনুসারে ধাতা ফল দেয় তারে।।
সে কারণে কর্ম্ম রাজা অবশ্য কর্ত্তব্য।
কর্ম্ম না করিলে কোথা হতে হয় লভ্য।।
কর্ম্ম নাহি করিলে স্থাবর মধ্যে গণি।
স্থাবরের শক্তি কর্ম্ম নাহি নৃপমণি।।
পশু পক্ষী আদি যত কৃতকর্ম্ম ভুঞ্জে।
কর্ম্মে বাধ্য সবে তবু বিধাতারে গঞ্জে।।
মাতৃ স্তন্যপান হতে কর্ম্মেতে প্রবেশে।
ফলে বা না ফলে কর্ম্ম, করে ফল আশে।।
কর্ম্ম নাহি করে, আর গৃহে বসি খায়।
সমুদ্র প্রমাণ দ্রব্য থাকিলে যে যায়।।
কোন কোন জন দ্রব্য পায় আচম্বিতে।
বিনাকর্ম্মে নহে সেই পূর্ব্ব কর্ম্মার্জ্জিতে।।
যে জন যেমত করে শুভাশুভ কর্ম্ম।
বিধাতা তাহার ফল দেন জন্ম জন্ম।।
বান্ধিয়া ভুঞ্জায় ধাতা কর্ম্মেতে থাকিলে।
কাষ্ঠ হেতে অগ্নি যেন, তৈল হয় তিলে।।
বিবিধ প্রকার কর্ম্ম করয়ে সংসারে।
কর্ম্ম অনুসারে ফল না হয় তাহারে।।
পূর্ব্বে লোক যে করিল অবশ্য করিবে।
ভক্ষ্য পান শয়নাদি আলস্য ত্যজিবে।।
এত যে নৃপতি কর্ম্ম করিলে এখন।
ইথে কোন ফলসিদ্ধি করিবে রাজন।।
এই চারি ভাই তব কর্ম্মে ন্যূন নয়।
এই সবাকারে কর্ম্ম করিলে কি হয়।।
তোমার কর্ম্মেতে চারি ভাই অনুগত।
এ সব কৃষক, তুমি জলধর মত।।
চষিয়া কৃষক যেন বীজ তায় ফেলে।
জল বিনা শস্য তায় কিছু নাহি ফলে।।
বিধির সৃজন আর কহে মুনিগণ।
যার যেবা ধর্ম্ম তাহা করিবে পালন।।
মহাভারতের কথা অমৃত সমান।
কাশীরাম দাস কহে, শুনে পুণ্যবান।।