তারা শ্রুত কথা এনে দেয় এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
(Into whose ears) they pour hearsay vanities, and most of them are liars.
يُلْقُونَ السَّمْعَ وَأَكْثَرُهُمْ كَاذِبُونَ
Yulqoona alssamAAa waaktharuhum kathiboona
YUSUFALI: (Into whose ears) they pour hearsay vanities, and most of them are liars.
PICKTHAL: They listen eagerly, but most of them are liars.
SHAKIR: They incline their ears, and most of them are liars.
KHALIFA: They pretend to listen, but most of them are liars.
২২২। ওরা তো অবতীর্ণ হয় প্রত্যেকটি মিথ্যাবাদী ও দুষ্ট লোকের উপরে,
২২৩। [ তাদের কানে ] মিথ্যা অহংকার ঢেলে দেয়, এবং তাদের অধিকাংশ মিথ্যাবাদী ;-
২২৪। এবং পথভ্রষ্ট লোকেরাই কবিদের অনুসরণ করে – ৩২৩৭।
৩২৩৭। এই আয়াতটি নীচের [ ২৬ : ২২৭ ] আয়াতটির সাথে এক সাথে পাঠ করলে যে বক্তব্য দাঁড়ায় তা হচ্ছে কবিদের অনুসরণ করো না , তারা ব্যতীত যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে। কবিতা এখানে প্রতীক স্বরূপ যা অন্যান্য শিল্পবিদ্যা ও কারুশিল্প যেমন সঙ্গীত, চিত্রকলা ইত্যাদির পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে। নিজেদের বৈশিষ্ট্যে এ সব শিল্প কলা নিজেরা ভাস্বর। যদি মানুষ ইচ্ছা করে তবে, এ সব শিল্প কলাকে আল্লাহ্র রাস্তায় মানুষের কল্যাণে , জীবনের মানোন্নয়নের জন্য ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু মানুষের স্বভাববতঃ কারণে মানুষ অনেক সময়েই অনর্থক ও ভ্রান্ত উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে শিল্প কলাকে ব্যবহার করে থাকে। উল্লেখিত আয়াতের প্রথমাংশ থেকে কাব্যচর্চ্চার কঠোর নিন্দা ও তা আল্লাহ্ কাছে অপছন্দনীয় হওয়া বোঝা যায়। কিন্তু শেষাংশে যে ব্যতিক্রম উল্লেখ করা হয়েছে , তা থেকে প্রমাণিত হয় যে, কাব্যচর্চ্চা ও শিল্পকলার চর্চ্চা সর্বাবস্থায় মন্দ নয়। বরং যে কবিতায় বা গানে বা শিল্পকলায় আল্লাহ্ তায়ালার অবাধ্যতা করা হয় কিংবা আল্লাহ্র স্মরণ থেকে বিরত রাখা হয় অথবা অন্যায় ভাবে কোনও ব্যক্তির নিন্দা ও অবমাননা করা হয় বা যা অশ্লীল ও অশ্লীলতার প্রেরণাদাতা সেই কবিতা বা গান বা শিল্পকলা নিন্দনীয় ও আল্লাহ্র কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে যেসব কবিতা, গান, শিল্প কলা গোনাহ্ ও অপছন্দনীয় বিষয়াদি থেকে পবিত্র , সেগুলিকে আল্লাহ্ তায়ালা আয়াতের মাধ্যমে ব্যতিক্রম ভুক্ত করে দিয়েছেন। মানুষের আত্মার মাঝে যে শিল্প সত্তা তা সেই মহাপরাক্রমশালী মহাপ্রভুর দান। সঙ্গীত , শিল্প, কাব্য সেই মহাসত্তার শিল্প নিদর্শনের প্রকাশ মাত্র। যখন এই প্রকাশের ভাষাকে বিকৃত করা হয় তখন তা হয়ে পড়ে শয়তানের প্রতিভূ। যেমন গান – আল্লাহ্ প্রেমে নিমগ্ন গান শ্রোতার চক্ষুকে অশ্রুতে ভরিয়ে দেয়, আত্মাকে আল্লাহ্ প্রেমে করে উদ্বেলিত। অপরপক্ষে যৌন আবেদন মূলক গান পাপের দিকে করে আকৃষ্ট। এ ভাবেই শিল্প , সঙ্গীত ও কাব্যের প্রয়োগের মাধ্যমে কখনও তা হয় আল্লাহ্র সান্নিধ্য লাভের বাহন , আবার কখনও তা হয় শয়তানের প্রতিভূ। যখন এসব শিল্প কলা জীবনের মহত্তর ও বৃহত্তর উদ্দেশ্যকে ভুলে ক্ষণস্থায়ী সুখের পিছনে ছুটে বেড়ায় তখন তা শয়তানের প্রচারমন্ত্রে পরিণত হয়। যে জ্ঞান ও শাস্ত্র আল্লাহ্ ও পরকালকে ভুলিয়ে শুধুমাত্র ব্যক্তি সুখ কেন্দ্রিক মানুষে পরিণত করে তা আল্লাহ্র চোখে নিন্দনীয়। জ্ঞান ও শাস্ত্রের প্রয়োগ হবে মানব জীবনকে বৃহত্তর ও মহত্তর উদ্দেশ্যের দিকে পরিচালনার জন্য। যদি তা না হয়ে উদ্দেশ্যবিহীন হয়ে উদভ্রান্তের ন্যায় [ প্রত্যেক উপত্যকায় ] ক্ষুদ্র স্বার্থ ও ক্ষুদ্র , ক্ষুদ্র সুখের পিছনে ঘুরে বেড়ায় তবে সে জ্ঞান বা শিল্প চর্চ্চা বৃথা। শিল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ঐশ্বরিক আলোর সন্ধান , এবং তার প্রতি আত্মনিবেদন। এর থেকে উৎসারিত সে উদ্দেশ্য থেকে শিল্প সত্তা হয়ে পড়ে যখন বিচ্যুত, ফলে সেই শিল্প সৃষ্টির মান হয়ে পড়ে ক্ষুদ্র স্বার্থের গন্ডিতে আবদ্ধ। বৃহত্তর মুক্তির স্বাদ সে শিল্প সত্তা কখনও অনুধাবন করতে সক্ষম হবে না।