প্রভাতে বাহুক রাজা, লইয়া যতেক প্রজা,
বসিয়াছে সানন্দ বিধানে।
এ হেন সময় শনি, করিছে আকাশবাণী,
শুন সভাপাল সর্ব্বজনে।।
দেবতা গন্ধর্ব্ব যক্ষ, সকলি আমার পক্ষ,
সকলে আমারে শ্রেষ্ঠ জানে।
বিদ্যাধরী বিদ্যাধর, রাক্ষস কিন্নর নর,
সবে মানে, শ্রীবৎস না মানে।।
মনুষ্য হইয়া মোরে, অত্যন্ত অবজ্ঞা করে,
কত সব অবজ্ঞা তাহার।
সুরাসুর যারে ডরে, মনুষ্য অবজ্ঞা করে,
বুঝে সবে করিয়া বিচার।।
কহিতে কহিতে শনি, আইল মরতভূমি,
যথা সভামধ্যে সর্ব্বজন।
আরক্ত লোচন পিঙ্গ, মহাজ্যোতি কৃষ্ণ অঙ্গ,
পরিধান সুরক্ত বসন।।
তেজোময় দেখি আভা, উজ্জ্বল হইল সভা,
অতি ভয় পায় সভাজন।
আস্তে ব্যস্তে সর্ব্বজনে, দাণ্ডাইল বিদ্যামানে,
স্তব করে শ্রীবৎস রাজন।।
তুমি সকলের সার, তোমা বিনা নাহি আর,
ত্রিভুবনে করয়ে পূজন।
সর্ব্ব ঘটে ভুঞ্জ তুমি, তুমি সকলের স্বামী,
নবগ্রহরূপী জনার্দ্দন।।
আমি মূর্খ মুঢ় জন, কি জানি তোমার গুণ,
জ্ঞানহীন তোমারে না চিনি।
বারেক করহ দয়া, ত্যজিয়া কপট মায়া,
বরদাতা হও মহামানী।।
এরূপে শ্রীবৎস ভূপ, স্তব করে বহুরূপ,
স্তবে তুষ্ট হয়ে শনি কয়।
শুন ওহে মহারাজা, করহ আমার পূজা,
আর তব নাহি কিছু ভয়।।
দেশে যাহ নরবর, একচ্ছত্রে রাজ্যেশ্বর,
রবে দশ হাজার বৎসর।
পুত্র পাবে শত জন, কন্যারত্ন মহাধন,
অন্তেবাস বৈকুন্ঠ নগর।।
মম সহ করি বাদ, হৈল তব এ প্রমাদ,
পৃথিবীতে রহিল ঘোষণ।
যে তোমার নাম লবে, তার মনোব্যথা যাবে,
শুন ওহে শ্রীবৎস রাজন।।
শ্রীবৎসেরে দিয়া বর, অন্তর্দ্ধান শনৈশ্চর,
চলিলেন আপন ভবনে।
ভবার্ণবে ভয় বাসি, বন্দনা করিল কাশী,
বনপর্ব্বে শ্রীবৎস রাজনে।।