দ্বাবিংশ অধ্যায়
কদ্রু-বিনতার সাগরতীরে গমন
সৌতি কহিলেন, নাগগণ মাতৃশাপ শ্রবণানন্তর পরামর্শ করিল, “আমাদিগের জননীর অন্তঃকরণে স্নেহের লেশমাত্র নাই, সুতরাং তাঁহার মনোভিলাষ সফল না হইলে রোষপরবশ হইয়া আমাদিগকে ভস্মসাৎ করিবেন; কিন্তু মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হইলে প্রসন্না হইয়া আমাদিগের শাপ-বিমোচন করিতে পারেন। অতএব চল, সকলে একমত হইয়া উচ্চৈঃশ্রবার পুচ্ছ কৃষ্ণবর্ণ করি।” নাগেরা এই অভিসন্ধি করিয়া ঐ অশ্বের পুচ্ছদেশে কৃষ্ণকেশরূপে পরিণত হইল। ইত্যবসরে দক্ষতনয়া কদ্রু ও বিনতা গগনমার্গে উঠিয়া বায়ুবেগে বিচলিত, গভীর নিনাদযুক্ত, তিমিঙ্গিলমকর-সার্থ [শ্রেণী– দল–ঝাঁক] সঙ্কুল, বহুবিধ ভীষণ জন্তুগণে সমাকীর্ণ, সকল রত্নের আকর, বরুণদেবের আবাসস্থান, নাগগণের বাসভবন, স্থানে স্থানে স্রোতস্বতীগণে পরিপূর্য্যমান, অপ্রমেয়, অচিন্তনীয়, অগাধ, অতি দুর্দ্ধর্ষ, অক্ষোভ্য, পবিত্রজলবিশিষ্ট, রমণীয় জলনিধি দর্শন করিতে করিতে পরম প্রীতি সহকারে তাহার অপর পারে উপস্থিত হইলেন।