মালিনীর বাণী শুনি, আনন্দিত নৃপমণি,
তুষ্ট হয়ে গেল তার বাসে।
আয়োজন আনি দিল, নৃপতি রন্ধন কৈল,
বঞ্চে রায় কৌতুক বিমেষে।।
এইরূপে নৃপবর, রহিল মালিনী ঘর,
আছে রায়, কেহ নাহি জানে।
শুন ধর্ম্ম মহাশয়, শুভকাল যবে হয়,
শুভ তার হয় দিনে দিনে।।
অপূর্ব্ব বিধির কর্ম্ম, কেবা তার বুঝে মর্ম্ম,
সৃজন পালন পুনঃ পাত।
একবার হয় অংশ, আরবার করে ধ্বংস,
কর্ম্মযোগে করে যাতায়াত।।
পুনঃ জন্মে পুনঃ মরে, এইরূপে ঘুরে ফিরে,
তথাচ না বুঝে মূঢ় জন।
লোভ করে, অপহরে, কুকর্ম্ম যতেক করে,
সাধুকর্ম্ম নহে একক্ষণ।।
আশ্চর্য্য শুনহ রাজা, সেই দেশে মহাতেজা,
বাহুদেব নামে নৃপবর।
ভদ্রা নামে তাঁর কন্যা, রূপে গুণে মহীধন্যা,
সৌজন্যেতে দ্রৌপদী সোসর।।
রূপ গুণ বর্ণিবারে, কার শক্তি কেবা পরে,
তিলোত্তমা জিনি রূপবতী।
ক্ষমায় পৃথিবী সম, গুণে সরস্বতী সম.
তপে যেন অগ্নি স্বাহা সতী।।
জন্মাবধি কর্ম্ম তার, শুন মুন গুণাধার,
হরগৌরী করে আরাধন।
কঠোর তপস্যা যত, বিস্তারিয়া কব কত,
আরধয়ে করি প্রাণপণ।।
স্তবে তুষ্টা হৈমবতী, ডাকি বলে ভদ্রাবতী,
বর মাগ চিত্তে যাহা লয়।
শুনিয়া রাজার সুতা, হইল আনন্দযুতা,
প্রণমিয়া করযোড়ে কয়।।
শুন মাতা ব্রহ্মময়ি, গতি নাই তোমা বই,
তরাইতে হবে এ দাসীরে।
বর যদি দিবে তুমি, শ্রীবৎস নৃপতি স্বামী,
এই বর দেহ মা আমারে।।
তুষ্টা হয়ে হরপ্রিয়া, কহিলেন আশ্বাসিয়া,
তব ভাগ্যে হবে নৃপবর।
তত্বকথা কহি শুন, আসিয়াছে সেই জন,
রম্ভাবতী মালিনীর ঘর।।
তারে বরমাল্য দিয়া, সুখে ঘর কর নিয়া,
বর দিনু বাঞ্ছামত তব।
বর পেয়ে নৃপসুতা, হইয়া আনন্দযুতা,
দেবী পূজে করিয়া উৎসব।।
শ্রীবৎস চিন্তার কথা, আরণ্যপর্ব্বতে গাথা,
শুনিলে অধর্ম্ম হয় নাশ।
কমলাকান্তের সুত, সুজনের মনঃপূত,
বিরচিল কাশীরাম দাস।।