ফিরতে ফিরতে রোজই রাত হয়ে যায়।
কখনো সাড়ে এগারোটা—কখনো রাত বারোটা বেজে যায়। আজও রাত হয়ে গিয়েছিল। বোধ হয় রাত বারোটা বেজে গিয়েছিল।
হাতঘড়ির দিকে না তাকিয়েও বুঝতে পারছিল সুদীপ। বাড়ির প্রায় কাছাকাছি যখন এসেছে সেই শব্দটা কানে এলো সুদীপের। একটা জুতো পায়ে হাঁটার শব্দ। শব্দটা কানে যেতেই থমকে দাঁড়াল সুদীপ আজও।
আশ্চর্য! সঙ্গে সঙ্গে পিছনের শব্দটাও থেমে গেল। আর কারো হেঁটে আসার শব্দ শোনা যাচ্ছে না।
সুদীপ জানে আবার সে হাঁটতে আরম্ভ করলেই পেছনে সেই শব্দটা শোনা যাবে। প্রথম প্রথম অতটা ভাবায়নি সুদীপকে; ভেবেছে কেউ তার পিছনে পিছনে হেঁটে আসছে।
দুদিন ধরে ওই একই শব্দ শুনে শুনে তৃতীয় দিন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখবার চেষ্টা করেছিল কে তার পিছনে পিছনে হেঁটে আসছে অত রাত্রে। কিন্তু কাউকে সে দেখতে পায়নি। যতদূর দৃষ্টি চলে একেবারে ফাকা রাস্তাটা।
ছোট শহর। কলকাতা থেকে বেশী দূর নয়। গোটা তিনেক স্টেশন মাত্র। বাঁধানো রাস্তাটা সোজা স্টেশন থেকে কিছুদূরে এসে ডাইনে একটা বাঁক খেয়ে সোজা চলে এসেছে তার বাড়ির দিকে। স্টেশন থেকে দেড় মাইলের বেশী হবে না।
আগে রাস্তার দুপাশে কোন আলোর তেমন ভালো ব্যবস্থা ছিল না। দশ-পনেরো হাত দূরে দূরে মিউনিসিপ্যালিটির লাইটপোস্ট। তাও বেশীর ভাগ দিন বালব ফিউজ হয়ে যাওয়ায় আলোই জ্বলত না।
ইদানীং সমরেন্দ্রবাবু স্থানীয় এম. এল. এ. হওয়ায় মধ্যে মধ্যে কয়েকটা লাইটপোস্ট বসাবার পর বেশ আলো থাকে রাস্তাটায়।
পথে যেতে যেতে দুপাশে কিছু ঘর-বাড়ি ও দোকানপাট আছে কিন্তু অত রাত্রে কোন বাড়ির আলো জ্বলে না—দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তাটাও একেবারে নির্জন হয়ে যায়। বোধ হয় একমাত্র সুদীপই শেষ ট্রেনের যাত্রী। লোকাল ট্রেন ওই সময় থাকে না–রাত এগারোটায় শেষ লোকাল ট্রেনটা চলে যায়।
পরের জংশন স্টেশনে মেল গাড়িটা থামে—সেই গাড়িতেই ফিরে সুদীপ পিছু হেঁটে আসে জংশন থেকে, নচেৎ অত রাত্রে ফিরবার আর কোনো উপায় নেই। জংশনটা মাইলখানেক দূরে—তাদের স্টেশনের আর জংশনের মাঝামাঝি জায়গাটা।
আজ দিন-দশেক হলো ওই শব্দটা শুনছে সুদীপ।
স্পষ্ট মনে আছে সুদীপের–খুনের মামলায় আদালতে সাক্ষী দেবার পর যেদিন সে ফিরে আসছে, সেইদিনই প্রথম ওই জুতো পায়ের শব্দটা সে শুনতে পেয়েছিল।
তারপর থেকে প্রতি রাত্রেই সে শুনছে ওই জুতো পায়ে চলার শব্দটা।
সুদীপ বোধ হয় অভ্যাসমতই হঠাৎ থেমে আজও পিছনপানে ফিরে তাকাল একবার। না, কেউ নেই–যতদূর দৃষ্টি চলে, রাস্তাটা একেবারে ফাকা—জনপ্রাণী নেই।
তবু আজ দাঁড়িয়ে থাকে সুদীপ রাস্তার দিকে তাকিয়ে। আজ আবার রাস্তার কয়েকটা আলো জ্বলছে না।
কেমন একটা আধো আলো আধো ছায়া থমথম করছে। হঠাৎ সেই আধো আলো আধো ছায়ার মধ্যে দুটো যেন নীল আগুনের মারবেল ভেসে উঠলো।
নীল আগুনের মারবেল দুটো এগিয়ে আসছে তার দিকে।
এমনিতে ভীতু নয় সুদীপ। কিন্তু ওই মুহূর্তে হঠাৎ যেন তার সমস্ত শরীর কাঠ হয়ে যায়, শক্ত হয়ে যায়। হঠাৎ আবার নীল আগুনের মারবেল দুটো অদৃশ্য হয়ে গেল। দপ করে যেন নীল আগুনের মারবেল দুটো নিভে গেল।
শীতের রাত। তবু সুদীপের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠেছে, কোথাও কিছু নেই—যতদূর দৃষ্টি চলে একটা আলো-ছায়ার থমথমানি।
নিশ্চয়ই ভুল দেখছে সুদীপ। চোখের ভুল। সুদীপ আবার চলতে শুরু করে।
সঙ্গে সঙ্গে আবার সেই শব্দ। হেঁটে হেঁটে কেউ যেন আসছে তার পিছনে পিছনে, ঠিক তার পিছনে।
আসুক।
সুদীপ আর থামবে না। পিছন ফিরে তাকাবে না। সুদীপ চলার গতি বাড়িয়ে দিল। বাড়ির সামনাসামনি পৌঁছে দেখে জানলা-পথে ঘরে আলোর ইশারা। ঘরে আলো জ্বলছে রমা জেগে আছে তার জন্য আজও।
প্রথম প্রথম রমা বলত, ইদানীং এত রাত করে ফের কেন? একটু তাড়াতাড়ি ফিরতে পার না আগের মত?
কাজ শেষ হবে—তবে তো আসবো। এখন অনেক বেশী কাজ। সুদীপ বলতো।
কি এমন কাজ তোমার যে রাত দুপুর গড়িয়ে যায়। একা তুমি ছাড়া বোধ হয় কেউ এত রাতে আর এদিকে ফেরে না।
সুদীপ কোন জবাব দেয় না। চুপ করে রমার কথাগুলো শুনে যায়। জামা-কাপড় খুলে বাথরুমে গিয়ে ঢোকে। কনকনে ঠাণ্ডা তোলা ড্রামের জলে ঐ রাত্রে স্নান করে।
কতদিন বলেছে রমা—অভিযোগ তুলেছে সুদীপের অত রাত করে বাড়ি ফেরা নিয়ে। কিন্তু এখন আর বলে না। বোধ হয় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে রমা ব্যাপারটায়। কিংবা হয়ত বুঝতে পেরেছে রমা রাত করে বাড়ি ফেরার ব্যাপারে সুদীপকে বলে কোন লাভ নেই। সুদীপ তার কথায় কান দেবে না। অথবা রমাই হয়ত সুদীপকে একই কথা বলে বলে হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছে।
হন হন করে হেঁটে এসে সুদীপ দরজার সামনে দাঁড়াল। এবং আজ বেল বাজাবার আগেই দরজাটা খুলে গেল। সামনে দাঁড়িয়ে রমা।
রমা কোন কথা বলল না। দরজা খুলে দিয়ে ভিতরে চলে গেল।
সুদীপ কিন্তু তখুনি ভিতরে প্রবেশ করল না। দরজার উপর দাঁড়িয়ে পশ্চাতে যতদূর দৃষ্টি চলে তাকিয়ে দেখতে লাগল। কিন্তু কিছু তার চোখে পড়ল না।
শীতের মধ্যরাত্রের রাস্তাটা খাঁ খাঁ করছে। কোন জনপ্রাণীর চিহ্নমাত্রও চোখের দৃষ্টিতে পড়ে না। তবুও কয়েকটা মুহূর্ত সুদীপ সামনের রাস্তাটার দিকে তাকিয়ে রইলো।
হঠাৎ রমার কণ্ঠস্বরে চমকে ফিরে তাকাল।
রমা যেন কখন এসে আবার তার পাশে দাঁড়িয়েছে। বললে, কি দেখছো?
না। কই, কিছু না তো!
তবে অমন করে দেখছিলে কি?
চল। ভিতরে চল। সুদীপ বললে।
মনে মনে একটা হিসাব করছিল সুদীপ। কথাটা আজই তার মনে হয়েছে সর্বপ্রথম। ঠিক দশদিন ধরে রাত্রে বাড়ি ফিরবার সময় সে ওর পশ্চাতে পদশব্দটা শুনছে।
ঠিক দশদিন। পনেরোই নভেম্বর আজ। তিন, চার ও পাঁচই নভেম্বর পর পর তিনতিনটে দিন সাক্ষীর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আদালতে তাকে সাক্ষ্য দিতে হয়েছিল তপন ঘোষের হত্যার ব্যাপারে।
আদালতের রায় বের হয়েছে কিনা জানে না সুদীপ। কোন খোঁজ রাখে নি। তবে এটা সে বুঝেছিল তার সাক্ষ্যের পর বিজিতের ফাঁসি হবে না। সোমনাথ ভাদুড়ী সেই রকমই বলেছেন। এবং সে সাক্ষ্য না দিলে হয়ত বিজিতের ফাঁসিই হতো। কারণ মৃতের গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত দেহটার সামনে সেও পড়েছিল জ্ঞান হারিয়ে। হাতের মুঠোর মধ্যে তার যে পিস্তলটা ছিল সেই পিস্তলের চেম্বারে পাঁচটি গুলি ছিল। একটি ছিল ফাকা। এবং ব্যালেস্টিক পরীক্ষায় তা প্রমাণিত হয়েছে। সেই পিস্তল থেকে গুলি ছোঁড়া হয়েছিল। এবং যে গুলিটা মৃতদেহকে ভেদ করে গিয়ে পাশের দেওয়ালে বিঁধেছিল সেটা ওই পিস্তল থেকেই যে ফায়ার করা হয়েছিল তাও প্রমাণিত হয়েছিল।
মৃণালের পাশের ঘরের লোকটি অবিনাশ সেন ও মেয়েটি মিনতিতারা সাক্ষ্য দিয়েছিল আদালতে। সন্ধ্যার কিছু পরে মৃণাল নামে মেয়েটির ঘরে তারা বিজিত মিত্রকে ঢুকতে দেখেছে। বিজিত মিত্র নাকি প্রায়ই মৃণালের ঘরে আসত। ঘণ্টা দু-তিন থাকত। আবোরা প্রমাণিত হয়েছিল–বিজিত মিত্র তপন ঘোষের সঙ্গে চোরাকারবার করত। এবং মধ্যে মধ্যে মৃণালের ঘরে ওরা দুজন কখনো একা, কখনো একত্রে যাতায়াত করত।
মৃণালের কিন্তু কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
সুদীপ সাক্ষ্য দিয়েছিল আদালতে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে : যে রাত্রে দুর্ঘটনা ঘটে, সে-রাত্রে ওই পল্লীর সামনে দিয়ে সে ও বিজিত মিত্র একত্রে ফিরছিল—হঠাৎ দুজন লোক তাদের আক্রমণ করে—বিজিতের মাথায় একটা ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে। বিজিত সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়—সুদীপ ছুটে পালায় প্রাণভয়ে। কিছুদূর গিয়ে একটা গলির মুখে দাঁড়িয়ে সে দেখে সেই লোক দুটো বিজিতের জ্ঞানহীন দেহটা একটা গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে গেল। রাত তখন পৌনে দুটো।
কাজেই রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ যদি মৃণালের ঘর থেকে পিস্তলের আওয়াজ শোনা গিয়ে থাকে এবং ময়না তদন্তে যদি প্রমাণিত হয়ে থাকে রাত বারোটা থেকে সাড়ে বারোটার মধ্যে কোন এক সময় গুলির আঘাতে তপন ঘোষের মৃত্যু হয়েছে, সেক্ষেত্রে তপন ঘোষের হত্যাকারী বিজিত মিত্র হতেই পারে না। সারকামস্টানশিয়াল এভিডেন্স যেমন তার বিরুদ্ধে নেই—তেমনি আছে রিজনেবল ডাউট।
সুদীপ মকদ্দমার রায় বের হয়েছে কিনা জানে না কিন্তু বিজিত মিত্র যে দোষী সাব্যস্ত হবে না সোমনাথ ভাদুড়ীর কথায় সেটা সে বুঝেছিল। তাছাড়া মৃণাল নামক মেয়েটির সন্ধান আজও পাওয়া যায়নি—একমাত্র হয়ত যে ছিল প্রত্যক্ষ সাক্ষী।
স্নান ও আহারাদির পর সুদীপ জানালার সামনে ইজিচেয়ারটায় গা এলিয়ে একটা পাতলা শাল গায়ে দিয়ে বসে বসে সিগ্রেট টানছিল।
আজ রাত আরো বেশী হয়েছে, বোধ করি রাত দুটো।
রমা রান্নাঘরের কাজ সেরে এসে পাশে দাঁড়াল, কি হলো? শুতে যাবে না?
বোসো রমা, তোমার সঙ্গে কথা আছে। সুদীপ বললো।
আমার বড্ড ঘুম পাচ্ছে।
ঘুম পাচ্ছে।
হ্যাঁ।
দাঁড়াও—আসছি। সুদীপ পাশের ঘরে গেল। আলমারি খুলে একটা স্মাগল করা স্কচ হুইস্কির ছোট চ্যাপটা বোতল থেকে দুটো গ্লাসে হুইস্কি ঢালল, একটু জল মেশাল কুঁজো থেকে—পরে ফিরে এলো গ্লাস দুটো হাতে পাশের ঘরে।
নিজে একটা গ্লাস নিয়ে, অন্য গ্লাসটা রমার দিকে এগিয়ে দিল সুদীপ। নাও এটা খেয়ে নাও।
কি এটা?
খেয়ে ফেল।
না! বল কি?
বিষ নয়। খাও।
রমা আর আপত্তি জানায় না। এক চুমুকে গ্লাসটা শেষ করে ফেলে, গলার ভিতরটা জ্বলে ওঠে।
মাগো, কি এটা—
হুইস্কি।
তুমি আমাকে মদ খাওয়ালে?
মধ্যে মধ্যে খাওয়া ভাল।
ভাল?
হ্যাঁ। শরীরের উপকার হয়। ডাক্তাররা বলেন, অ্যালকোহল ইজ দ্য বেস্ট ফুড।
রমার মাথাটা তখন যেন ঝিম ঝিম করছে।
আমার বোধ হয় নেশা হচ্ছে–রমা বলল।
সুদীপ বলল, কিছু হবে না। অতটুকু হুইস্কিতে নেশা হয় না কারো। কিছুক্ষণ বাদেই সব ঠিক হয়ে যাবে দেখো। বোসো ঐ চেয়ারটায়।
রমা বসলো সামনের চেয়ারটার উপরে।
রমার বুকটা গরম গরম লাগছে। কান দুটোও।
জান রমা, আজ কদিন ধরে দেখছি বাড়ি ফেরার পথে কে যেন আমাকে ফলো করে।
ফলো করে তোমায়?
হ্যাঁ।
কে ফলো করে?
তা জানি না।
দেখতে পাওনি লোকটাকে?
না।
তবে বুঝলে কি করে ফলো করছে কেউ তোমাকে?
করে। আমি জানি।
কিন্তু কেই বা তোমায় ফলো করবে–আর কেনই বা করতে যাবে!
হয়ত—
কি?
কেউ কিছু বলতে চায় আমায়।
কে আবার কি বলতে চাইবে তোমাকে? আর যদি বলতে চায় তো সামনাসামনি এসে বললেই তো পারে। ফলো করবার কি দরকার?
আমার কি মনে হয় জানো রমা—
কি?
তপন ঘোষ আমাকে কিছু বলতে চায়।
তপন ঘোষ! কে সে?
আমার সঙ্গে লোকটার পরিচয় ছিল। মানে তাকে আমি চিনতাম।
তা তার সঙ্গে একদিন দেখা করে কথাটা জিজ্ঞাসা করলেই পারো।
তার যে কোন উপায়ই আর নেই।
উপায় নেই! কেন? রমা বিস্ময়ের সঙ্গেই যেন তাকায় সুদীপের মুখের দিকে।
না। তপন ঘোষ মাস তিনেক হলো মারা গিয়েছে—পিস্তলের গুলিতে।
কি বলছো তুমি আবোল-তাবোল?
এই দেখো রমা, আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছে। আমি ঠিকই বলছি। এ তপন ঘোষ ছাড়া আর কেউ নয়।
রমা কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। তারপর বলল, রাত অনেক হয়েছে। এবারে শোবে চল।
আর এক পেগ হুইস্কি খাবে রমা? সুদীপ বলল।
না।
একটা কথা ভাবছি রমা।
কি?
কলকাতায় একটা ফ্ল্যাট কিনবো।
ফ্ল্যাট কিনবে কলকাতায়! কি বলছো? রমার কণ্ঠে বিস্ময় স্পষ্ট হয়ে ওঠে, অত টাকা তুমি পাবে কোথায়?
ফ্ল্যাট আমি দেখেছি—এখন হাজার দশেক মত দিতে হবে, তারপর বাকী চল্লিশ হাজার টাকা মাসে মাসে ত্রিশটা ইনস্টলমেন্টে—সে হয়ে যাবে।
কিন্তু ওই দশ হাজার টাকা কোথা থেকে আসবে? রমা আবার প্রশ্ন করে।
ব্যাঙ্কে কিছু আছে। কিছু ফিক্সড ডিপোজিট তোমার নামে আছে—আর বাকীটা ধার করবো বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে।
না না—এই তো বেশ আছি আমরা। ফ্ল্যাট নিয়ে কি হবে?
ফ্ল্যাটটা দেখলে তোমার খুব পছন্দ হবে দেখো। বালিগঞ্জে—একেবারে স্টেশনের কাছাকাছি। সাততলার উপরে। হু হু করে বাতাস বইতে থাকে সর্বক্ষণ। রাত্রে ট্রেনের শব্দ শুনতে পাবে। ট্রেন আসছে-যাচ্ছে–
না। ওসব ধার-কর্জের মধ্যে যেও না।
সত্যি রমা তোমার কোন অ্যামবিশন নেই। আমি কিন্তু ফ্ল্যাটটা কিনবো ঠিক করেছি।
দেখো ধার-কর্জর মধ্যে যেও না।
চল-শুইগে। সুদীপ গা-ঝাড়া দিয়ে উঠে পড়ল।