জন্মেজয় বলিলেন কহ মুনিবর।
কোন্ জন কি কর্ম্ম করিল অতঃপর।।
মুনি বলে দ্রোণপুত্র রাজার সাক্ষাতে।
মহাঅহঙ্কার করি লাগিল বলিতে।
অবধান মহারাজ কৌরব ঈশ্বর
এক কথা কহি আমি তোমার গোচর।।
ভীষ্ম দ্রোণ কর্ণ আর শল্য আদি বীরে।
সেনাপতি করিয়া পূজিলা সমাদরে।
কোন কর্ম্ম তোমার করিল কোন্ জন।
সবে পান্ডবের পক্ষ জানিহ রাজন।
সে কারণে তোমার না হৈল কিছু হিত।
মম ইচ্ছা হয়, কিছু করিব বিহিত।
সেনাপতি কর মোরে কুরু অধিকারী।।
আমর বীরত্ব তুমি জান ভালমতে।
কোন্ জন যুঝিবেক আমার অগ্রেতে।।
ইন্দ্র যম বরুণ কুবের হুতাশন।
মম সনে বিবাদে তরিবে কোন জন।।
একদিন যুক্তি না করিলে মম সনে।
আপন বৈভব তুমি নাশিলা আপনে।।
জনম অবধি আমি তোমার পালিত।
সে কারণে করিবারে চাহি তব হিত।।
আমার প্রতিজ্ঞা এই গুন নরনাথ।
পাঞ্চাল পান্ডবে আজি করিব নিপাত।।
দ্রৌণির বচন গুনি রাজা দুর্য্যোধন।
সাধু সাধু বলিয়া করে নিবেদন।।
যে সব কহিলা মোরে গুরুর নন্দন।
পান্ডবের প্রিয় সবে বুঝিনু এখন।।
আর কেহ নাহি মম গুন মহাশয়।
আপনি যদ্যপি মম ঘুচাও সংশয়।।
সেনাপতি তোমারে করিব আজি আমি।
যদবধি আছি, কিছু হিত করতুমি।।
রাজার বিনয় শুনি দ্রোণের নন্দন।
গর্ব্ব করি বলিল নাশিব সর্ববজন।।
কৌরবের পতি শুনি এতেক বচন।
কৃপেরে চাহিয়া তবে বলিছে তখন।।
শীঘ্রগতি জল আনি দেহ মহামতি।
আজি গুরুপুত্রেরে করিব সেনাপতি।।
এতেক বলিল যদি রাজা দুর্য্যোধন।
দুই বীর চলিলেক জলের কারণ।।
কৃপাচার্য্য কৃতবর্ম্মা চলিল তখনি।
জল অন্বেষণ করে আঁধার রজনী।।
স্থানে স্থানে ভ্রমে, জল খুঁজিয়া না পায়।
একএ হইয়া দোঁহে ভাবেন উপায়।।
রাজার বচনে আসি জল অন্বেষণে।
জল নাহি পাই কি করিব দুই জনে।।
বলিলেন কৃপ, গুন আমার বচন।
যুদ্ধকালে এনেছিল জল সৈন্যগণ।।
সেই জল বিনা আর না দেখি উপায়।
এত বলি দুইজন চলিল তথায়।।
মহাভারতের কথা সুধাসিন্ধুবত।
কাশীরাম দাস কহে পাঁচালীর মত।।