পঞ্চদশ অধ্যায়
সর্পরক্ষার সংক্ষিপ্ত কথা
উগ্রশ্রবাঃ মহর্ষি শৌনককে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, হে ব্রহ্মজ্ঞানপারদর্শিন্! পূর্ব্বকালে সর্পগণ স্বীয় জননীর নিকট এইরূপ শাপগ্রস্ত হইয়াছিল যে, রাজা জনমেজয়ের যজ্ঞে অগ্নি তাহাদিগকে দগ্ধ করিবেন। ভুজঙ্গরাজ বাসুকি সেই শাপবিমোচনের অভিসন্ধি করিয়া মহাত্মা জরৎকারুকে স্বীয় ভগিনী প্রদান করেন। জরৎকারু বিধিপূর্ব্বক তাঁহার পাণিগ্রহণ করিয়া তদ্গর্ভে আস্তীক নামে পুৎত্র উৎপাদন করেন। মহাত্মা আস্তীক বেদবেদাঙ্গশাস্ত্রে পারদর্শী, সর্ব্বভূতে সমদৃষ্টি ও তপশ্চর্য্যায় নিতান্ত অনুরক্ত ছিলেন। তিনি পিতৃকুল মাতৃকুল উভয় কুলের দাহভয় নিবারণ করেন। পাণ্ডুকুলোদ্ভব রাজা জনমেজয় বহুকালের পর সর্পসত্র নামে এক মহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। সেই সর্পকুলকালান্তক যজ্ঞ আরব্ধ হইলে মহাতপ আস্তীক ভ্রাতৃগণ, মাতুলগণ ও অন্যান্য সর্পগণকে রক্ষা করিয়াছিলেন।
জরৎকারু পুৎত্রোৎপাদন ও তপশ্চর্য্যা দ্বারা পিতৃলোকের উদ্ধারসাধন, বিবিধ ব্রতানুষ্ঠান ও বেদাধ্যয়ন দ্বারা মুনিগণের তুষ্টি সম্পাদন এবং নানাবিধ যজ্ঞানুষ্ঠান দ্বারা দেবগণের পরিতোষ সমাধান করিলেন। তিনি এইরূপে পুৎত্রোৎপাদন, ব্রহ্মচর্য্য ও যজ্ঞানুষ্ঠান দ্বারা পিতৃঋণ, ঋষিঋণ ও দেবঋণ স্বরূপ গুরুতর ভার হইতে মুক্ত হইয়া পূর্ব্বপুরুষগণের সহিত স্বর্গে আরোহণ করেন। হে ভৃগুবংশাবতংস! আমি যথাক্রমে এই আস্তীকোপাখ্যান কহিলাম, এক্ষণে আর কি কহিতে হইবে, আজ্ঞা করুন।