১ ভবিষ্যতে য়ে সকল উত্কৃষ্ট বিষয় আসবে, বিধি-ব্যবস্থা হচ্ছে তারই অস্পষ্ট ছায়া মাত্র। বিধি-ব্যবস্থা ঐসব বিষয়ের বাস্তবরূপ নয়। তাই যাঁরা ঈশ্বরের উপাসনা করতে আসে, বছর বছর তারা একই রকম বলিদান বারবার করে, কিন্তু বিধি-ব্যবস্থা সেই লোকদের সিদ্ধি দিতে পারে না।
২ বিধি-ব্যবস্থা যদি পারত, তবে ঐ বলিদান কি শেষ হত না? কারণ যাঁরা উপাসনা করে তারা যদি একবার শুচি হয় তবে তাদের পাপের জন্য নিজেকে আর দোষী ভাববার প্রযোজন নেই। কিন্তু বিধি-ব্যবস্থা তা করতে সক্ষম নয়।
৩ ঐসব লোকের বলিদান বছর বছর তাদের পাপের ক্ষমা স্মরণ করিয়ে দেয়,
৪ কারণ বৃষের কি ছাগের রক্ত পাপ দূর করতে পারে না।
৫ সেইজন্যই খ্রীষ্ট এ জগতে আসার সময় বলেছিলেন:‘তুমি বলিদান ও নৈবেদ্য চাও নি, কিন্তু আমার জন্য এক দেহ প্রস্তুত করেছ।
৬ তুমি হোমে ও পাপার্থক বলিদান উত্সর্গে প্রীত নও।
৭ এরপর তিনি বললেন, ‘এই আমি! শাস্ত্রে আমার বিষয়ে য়েমন লেখা আছে, হে ঈশ্বর দেখ, আমি তোমার ইচ্ছা পূর্ণ করতেই এসেছি।’গীতসংহিতা ৪০:৬-৮
৮ প্রথমে তিনি বললেন, ‘বলিদান, নৈবেদ্য, হোমবলি ও পাপার্থক বলি তুমি চাও নি; আর তাতে তুমি প্রীত হও নি।’ যদিও সেইসব বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে উত্সর্গ করা হয়।
৯ এরপর তিনি বললেন, ‘দেখো, আমি তোমার ইচ্ছা পালন করবার জন্যই এসেছি।’ তিনি দ্বিতীয়টি প্রবর্তন করার জন্য প্রথমটিকে বাতিল করতে এসেছেন।
১০ ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারেই তিনি এই কাজ সমাপ্ত করেছেন। এইজন্যই খ্রীষ্ট তাঁর দেহ একবারেই চিরকালের জন্য উত্সর্গ করেছেন যাতে আমরা চিরকালের জন্য পবিত্র হই।
১১ প্রত্যেক যাজক প্রত্যেকদিন দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের সেবা করেন তাঁরা বারবার সেই একই বলি উত্সর্গ করেন। কিন্তু তাদের বলিদান কখনও পাপ দূর করতে পারে না।
১২ খ্রীষ্ট পাপের জন্য একটি বলিদান উত্সর্গ করলেন যা সকল সময়ের জন্য যথেষ্ট। তারপর তিনি ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে বসলেন।
১৩ তাঁর শত্রুদের মাথা তাঁর পায়ের নীচে অবনত না হওয়া পর্যন্ত এখন তিনি সেখানে অপেক্ষা করছেন।
১৪ তিনি একটি বলিদান উত্সর্গ করে চিরকালের জন্য তাঁর লোকেদের নিখুঁত করেছেন। তারাই সেই লোক যাদের পবিত্র করা হয়েছে।
১৫ পবিত্র আত্মাও আমাদের কাছে এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন। প্রথমে তিনি বলেন:
১৬ ‘ঐ সময়ের পর প্রভু বলেছেন, আমি তাদের সঙ্গে এই চুক্তি করব। আমি তাদের হৃদয়ে আমার নিয়মগুলো গেঁথে দেব, আর তাদের মনে আমি তা লিখে দেব।’যিরমিয় ৩১:৩৩
১৭ এরপর তিনি বলেন: ‘আমি তাদের সব পাপ ও অধর্ম আর কখনও মনে রাখবো না।’ যিরমিয় ৩১:৩৪
১৮ তাই একবার যখন সেইসব পাপ ক্ষমা করা হল, তখন পাপের জন্য বলিদান উত্সর্গ করার আর কোন প্রযোজন নেই।
১৯ তাই আমার ভাই ও বোনেরা, মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আমাদের আছে। যীশুর রক্তের গুণে আমরা নির্ভীকতার সঙ্গে সেখানে প্রবেশ করতে পারি।
২০ খ্রীষ্ট এই নতুন পথ একটি পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাত্ তাঁর দেহের মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য খুলে দিয়েছেন। এ এক জীবন্ত পথ। এই নতুন পথে আমরা পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাত্ খ্রীষ্টের দেহের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে পারি।
২১ তাই আমাদের এক মহান যাজক রয়েছেন যিনি ঈশ্বরের গৃহের ওপর কর্তৃত্ত্ব করেন।
২২ আমাদের শুচি করা হয়েছে ও দোষী বিবেকের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে। আমাদের দেহকে শুচিশুদ্ধ জলে ধৌত করা হয়েছে। তাই এস, আমরা শুদ্ধ হৃদয়ে বিশ্বাসের কৃত নিশ্চয়তায় ঈশ্বরের সামনে হাজির হই।
২৩ তাই এস, আমরা আমাদের প্রত্যাশাকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে থাকি এবং অপরের কাছে তাকে জানাতে ব্যর্থ না হই। আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে পারি য়ে, তিনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তিনি পূরণ করবেন।
২৪ আমাদের উচিত একে অপরের বিষয়ে চিন্তা করা, য়েন ভালবাসতে ও সত্ কাজ করতে পরস্পরকে উত্সাহ দান করতে পারি।
২৫ আমরা য়েন একত্র সমবেত হওয়ার অভ্যাস ত্যাগ না করি, য়েমন কেউ কেউ সেইরকম করছে। কিন্তু এস, আমরা পরস্পরকে উত্সাহ ও চেতনা দিই। তোমরা যতই সেই দিন এগিয়ে আসতে দেখছ, ততই এ বিষয়ে আরো বেশী করে উদ্যোগী হও।
২৬ সত্যের জ্ঞানলাভের পর যদি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে চলি, তবে সেই পাপের জন্য বলিদান উত্সর্গ করার মতো আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না।
২৭ আমরা যদি পাপ করেই চলি তবে বিচারের জন্য সেই ভয়ঙ্কর প্রতীক্ষা আর প্রচণ্ড ক্রোধাগ্নি সমস্ত ঈশ্বর বিরোধীকে গ্রাস করবে।
২৮ কেউ যদি মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা লঙঘন করতো তবে দুজন কিংবা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে নিষ্ঠুরভাবে তাকে হত্যা করা হত, তাকে ক্ষমা করা হত না।
২৯ ভেবে দেখো, য়ে লোক ঈশ্বরের পুত্রকে ঘৃণা করেছে, চুক্তির য়ে রক্তের মাধ্যমে সে শুচি হয়েছিল তা তুচ্ছ করেছে, আর যিনি অনুগ্রহ করেন সেই অনুগ্রহের আত্মাকে অপমান করেছে – হ্যাঁ, নতুন চুক্তির রক্তকে য়ে অবমাননা করেছে সেই ব্যক্তির কতোই না ঘোরতর শাস্তি হওয়া উচিত।
৩০ আমরা জানি, ঈশ্বর বলেন, ‘যাঁরা মন্দ কাজ করে, তাদের আমি শাস্তি দেব; তাদের প্রতিফল দেব।’ঈশ্বর আবার বলেছেন, ‘প্রভু তাঁর লোকদের বিচার করবেন।’
৩১ জীবন্ত ঈশ্বরের হাতে গড়া পাপী মানুষের পক্ষে কি ভয়ঙ্কর বিষয়।
৩২ সেই আগের দিনগুলির কথা মনে করে দেখ, প্রথমে যখন তোমরা সত্য গ্রহণ করলে, তখন তোমাদের অনেক কষ্ট ও দুঃখভোগ করতে হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা বেশ অটল ছিলে।
৩৩ কখনও কখনও লোকেরা প্রকাশ্যে তোমাদের বিদ্রূপ করেছে ও অনেক লোকের সামনে তোমাদের নির্যাতিত হতে হয়েছে। কখনও অন্যের ওপর তোমাদের মতো নির্য়াতিত হচ্ছে দেখে তোমরা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছ।
৩৪ যাঁরা কারাগারে বন্দী ছিল, তোমরা তাদের সাহায্য করেছ ও তাদের দুঃখভোগের অংশ নিয়েছ। তোমাদের সম্পত্তি লুঠ করে নিলেও তোমরা আনন্দ করেছ, কারণ তোমরা জানতে য়ে এসব থেকে উত্কৃষ্ট ও চিরস্থাযী এক সম্পদ তোমাদের জন্য আছে।
৩৫ তাই অতীতে তোমাদের য়ে সাহস ছিল তা হারিও না, কারণ সেই সাহস তোমাদের জন্য মহাপুরস্কার নিয়ে আসবে।
৩৬ তোমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে, ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার পর তোমরা তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ফল লাভ করবে।
৩৭ কারণ এখন থেকে অল্প সময়ের মধ্যে,‘য়াঁর আসবার কথা আছে তিনি আসবেন, তিনি দেরী করবেন না।
৩৮ আমার দৃষ্টিতে যাদের ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছি তারা বিশ্বাসের ফলেই বেঁচে থাকবে, কিন্তু সে যদি ভয়ে বিশ্বাস থেকে সরে যায় তবে আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট হব না।’হববকূক ২:৩-৪
৩৯ কিন্তু আমরা এমন লোক নই যাঁরা বিশ্বাস থেকে সরে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যায়, বরং আমরা সেই রকম লোক যাঁরা বিশ্বাসে রক্ষা পায়।