ও পাড়ার নন্দ গোঁসাই, আমাদের নন্দ খুড়ো,
স্বভাবেতে সরল সোজা অমায়িক শান্ত বুড়ো।
ছিল না তার অসুখ বিসুখ, ছিল সে যে মনের সুখে,
দেখা যেত সদাই তারে হুঁকোহাতে হাস্যমুখে।
হঠাৎ কি তার খেয়াল হ’ল চল্ল্ সে তার হাত দেখাতে-
ফিরে এল শুকনো সরু, ঠকাঠক্ কাঁপছে দাঁতে
শুধালে সে কয় না কথা, আকাশেতে রয় সে চেয়ে,
মাঝে মাঝে শিউরে ওঠে, পড়ে জল চক্ষু বেয়ে।
শুনে লোকে দৌড়ে এল, ছুটে এলেন বদ্যিমশাই,
সবাই বলে, “কাঁদছ কেন? কি হয়েছে নন্দ গোঁসাই?”
খুড়ো বলে, “বলব কি আর হাতে আমার স্পষ্ট লেখা
আমার ঘাড়ে আছেন শনি, ফাঁড়ায় ভরা আয়ুর রেখা।
এতদিন যায়নি জানা ফির্ছি কত গ্রহের ফেরে-
হঠাৎ আমার প্রাণটা গেলে তখন আমায় রাখ্বে কে রে?
ষাটটা বছর পার হয়েছি বাপদাদাদের পুণ্যফলে-
ওরে তোদের নন্দ খুড়ো এবার বুঝি পটোল তোলে।
কবে যে কি ঘট্বে বিপদ কিছু হায় যায় না বলা”-
এই ব’লে সে উঠলো কেঁদে ছেড়ে ভীষণ উচ্চ গলা।
দেখে এলাম আজ সকালে গিয়ে ওদের পাড়ার মুখো,
বুড়ো আছে, নেই কো হাসি, হাতে তার নেই কো হুঁকো।