হাতুড়ে

একবার দেখে যাও ডাক্তারি কেরামৎ-
কাটা ছেঁড়া ভাঙা চেরা চট্পট মেরামৎ
কয়েছেন গুরু মোর, “শোন শোন বৎস,
কাগজের রোগী কেটে আগে কর মক্স”
উৎসাহে কি না হয়? কি না হয় চেষ্টায়?
অভ্যাসে চটপট্ হাত পাকে শেষটায়।
খেটে খুটে জল হ’ল শরীরের রক্ত-
শিখে দেখি বিদ্যেটা নয় কিছু শক্ত।
কাটা ছেঁড়া ঠুক্ ঠাক। কত দেখ যন্ত্র,
ভেঙে চুরে জুড়ে দেই তারও জানি মন্ত্র
চোখ বুজে চটপট বড় বড় মুর্তি,
যত কাটি ঘ্যাঁস্ ঘ্যাঁস্ তত বাড়ে ফুর্তি।
ঠ্যাং কাটা গলা কাটা কত কাটা হস্ত,
শিরিষের আঠা দিয়ে জুড়ে দেয় চোস্ত।
এইবারে বলি তাই, রোগী চাই জ্যান্ত-
ওরে ভোলা, গোটাছয় রোগী ধরে আন্ত!

গেঁটেবাতে ভুগে মরে ও পাড়ার নন্দী,
কিছুতেই সারাবে না এই তার ফন্দি-
একদিন এনে তারে এইখানে ভুলিয়ে,
গেটেঁবাত ঘেঁটে- ঘুঁটে সব দেব ঘুলিয়ে।
কার কানে কট্ কট্ কার নাকে সর্দি,
এস, এস, ভয় কিসে? আমি আছি বদ্যি।
শুয়ে কে রে? ঠ্যাং ভাঙা? ধরে আন্ এখেনে-
স্ক্রুপ্ দিয়ে এঁটে দিব কি রকম দেখে নে।
গলা ফোলা কাঁদ কেন? দাঁতে বুঝি বেদনা?
এস এস ঠুকে দেই আর মিছে কেঁদ না,
এই পাশে গোটা দুই, ওই পাশে তিনটে-
দাঁতগুলো টেনে দেখি কোথা গেল চিমটে?
ছেলে হও, বুড়ো হও, অন্ধ কি পঙ্গু,
মোর কাছে ভেদ নাই, কলেরা কি ডেঙ্গু-
কালাজ্বর, পালাজ্বর, পুরানো কি টাটকা,
হাতুড়ির একঘায়ে একেবারে আটকা!