সৌন্দর্য আমার ঘরে চলে আসে কখনও সখনও
চুপিসারে, বসে মুখোমুখি,
মাঝে মাঝে ঠারে-ঠোরে কথা
বলে কিনা, সহজে যায় না বোঝা, আর
কখনও তাকায় যেরকম ঝিল থেকে
মুখ তুলে পরিতৃপ্ত তরুণী হরিণী।
সৌন্দর্যের কোনও মান-অভিমান নেই, নেই উষ্মা
তর্কের ঊর্ধ্বেই থাকে সর্বক্ষণ, কলহে মাতে না
কোনওদিন। তার আসা-যাওয়া
সর্বদা নিভৃতে অমাবস্যা, পূর্ণিমায়, অকস্মাৎ
চৈত্রের দুপুরে কিংবা শারদ সন্ধ্যায়, মধ্যরাতে; বস্তুত সে
কখনও ধারে না ধার বাঁধা-ধরা কোনও
প্রহরের অথবা ঋতুর,
এমনই খেয়ালী তার আগমন অথবা প্রস্থান।
নিরর্থক সব কিছু জেনেও যখন দেখি খরখরে দুপুরে
গাছতলা ছায়ার প্রলেপে মুগ্ধতায়
নিমজ্জিত, বিকেলে পাখির ঝাঁক আকাশে আল্পনা
হ’য়ে ওঠে, পরিচিত ব্যালকনিটিতে
কেউ এসে বসে, রবিশঙ্করের সেতারের সুর
ভেসে আসে কিয়দ্দূর থেকে, মনে হয়
সুন্দর নাস্তির ছায়া ঈষৎ সরিয়ে
অন্তত রচনা করে ক্ষণকাল নিজস্ব আবছা ব্যাকরণ!
কী ব্যাকুল প্রতীক্ষায় থাকি প্রতিক্ষণ,
কখন সুন্দর এসে দাঁড়ায় এখানে নিরিবিলি
পোড়-খাওয়া আমার সত্তায়
চকিতে জাগিয়ে দিতে ঝর্ণাধারা। তাই
দরোজা উন্মুক্ত রাখি সর্বদাই, যদি
সব পাখি ঘুমিয়ে পড়ার পরে আমার এ ঘরে
নিস্তব্ধ প্রহরে ফের কাউকে কিছু না ব’লে স্বপ্ন উড়ে গেলে
নয়টি বীণার সুরসভা ব’সে যায় অমলিন কুয়াশায়।
১৮.৩.৯৭