সীতার অগ্নিপরীক্ষা
রামচন্দ্র ছিলেন নেত্ররোগী, দীপশিখা তাঁর সহ্য হত না
আর কতবার তুমি অগ্নিপরীক্ষায় যাবে, সীতা?
লক্ষ্মণকে একটি চুম্বন দিলে তেমন কিছু পাপ হত কী?
অগ্নি যে সবার সামনে তোমাকে আলিঙ্গনের সুখ ভোগ করে নিল
তা কেউ বুঝল না?
রাম বরাবরই আগুনকে ভয় পান
সীতাকে জীবনসঙ্গিনী করার মতন পৌরুষই ছিল না রামচন্দ্র বেচারির
সীতাকে উদ্ধার করার জন্যও তিনি লঙ্কা অভিযানে যাননি
লোকে কী বলবে, সেই ভয়েই তো তাঁকে অত ঝুঁকি নিতে হল
লোক, লোক, লোক, তারা সবাই হাত না তুললে সিংহাসন
ফিরে পাওয়া যায় না
বীরশ্রেষ্ঠ ইন্দ্রজিৎকে যুদ্ধে হারাবার মতন ক্ষমতা ছিল না
রামচন্দ্র আর তাঁর দলবলের
তাই বিশ্বাসঘাতক বিভীষণের সাহায্য নিতে হয়েছিল
সেই শুরু হল ছলে, বলে, কৌশলে, সমস্ত ন্যায়নীতি বিসর্জন দিয়ে
ক্ষমতা দখলের রাজনীতি
শ্রীরামচন্দ্রই এর প্রবর্তক
যারা রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠার কথা বলে তারা সবাই
ওই বিভীষণের বংশধর!
সেই প্রথমবারই যদি তুমি অগ্নিপরীক্ষা অস্বীকার করতে, সীতা?
সগর্বে অসতীত্ব মেনে নিয়ে উড়িয়ে দিতে আত্মসম্মানের জয়ধ্বজ
তা হলে হয়তো লোক, লোক, লোক, অন্ধ লোকশক্তি
আর ফিরতেই দিত না রামকে
অযোধ্যায় রামের নামে মন্দিরও গড়া হত না
এবং সেই মন্দির ভেঙে মসজিদ বানাবার বর্বরোচিত অন্যায়
এবং আবার ভাঙাভাঙির দুঃসময় থেকে মুক্তি পেত কি
এই হতভাগ্য দেশ?