সিন্ধ্রিতে এক উৎসবে
নর্তকী, তুমি তাকাও আমার দিকে ক্ষণকাল
আজ এ সভায় আমিই প্ৰধান অতিথি, আমার
চোখে চোখ রাখে একবার।
সবুজ আলোর পরে ঝলসালো মসৃণ মঅভ
দুই সখী এসে দাঁড়ালো দু’পাশে লাল ও হলুদ
ওরা তো স্বপ্ন
রেশমী রুমাল, পীত আঙরাখা, জরির ঝালর-এসব স্বপ্ন
প্রহরীর মতো ঘাগরা কচুলি সাজানো মঞ্চ–এসব স্বপ্ন
বাহু ঢাকা ফুল, ফুলের দুকুল রুপোর নুপুর-এবারও স্বপ্ন?
শুধু ঘোরে রং, ঝম-ঝম-ঝুম রঙের শব্দ, নর্তকী, তুমি
তাকাও আমার দিকে ক্ষণকাল, আজ এ সভায়
আমিই প্রধান অতিথি, আমার
চোখে চোখ রাখো একবার।
শত জনতার ঠিক মাঝখানে আমার আসন, নর্তকী, তুমি
যে দিকেও যাও, প্রোসেনিয়ামের যে-কোনো সীমায়–
আমার দু’চোখ তোমার অঙ্গে-লীলাময় হাত, মৃদু অঙ্গুলি–
লঘুপদযুগ, ক্ষীণ কটিতট দারুণ দোলানি দেখে ঊরুদেশ
হেম দুই বুক জেগে ওঠে আজ স্তননে বর্ণেনাচ কি শিল্প?
ঝম-ঝম-ঝুম রঙের শব্দ, নর্তকী আজ তুমিই শিল্প?
এক মুহূর্ত ফেরাও চক্ষু আমার দু’চোখে, ছবির নারীরা
ঠিক যে রকম চিরকাল শুধু আমাকেই দেখে, এক মুহুৰ্ত
তুমি দেখা দাও, আজ এ সভায় তুমিই শিল্প।
উইংসে এসেছে রাজার কুমার, সেও তো রমণী,
ছোট শহরের নৃত্যসভায় সবাই রমণী, ওকে ভয় নেই
সাত সখী এসে তিনজন গেল, নর্তকী শুধু তুমিই শিল্প
দুই ভুরু হেনে একবার চাও, শরীর দেখেছি, তোমাকে দেখিনি
নাচ কি শিল্প? ঢের শিল্পের দেখা হলো আজ
চোখোচোখি ছাড়া কোনো দেখা নেই
এক মুহূর্ত তাকাও…আমার সহিষ্ণুতার শেষ হয়ে এলো
এবার চেয়ারে দাঁড়িয়ে উঠবো, সিটি দিয়ে আমি ডিগবাজি খাবো
মাটিতে গড়িয়ে হামাগুড়ি দিয়ে উলটে পালটে লোভী জনতার
সারি সারি পায়ে চিমটি কাটবো
নাচ কি শিল্প? ঢ়ের শিল্পের দেখা হলো আজ মঞ্চ শিল্প
এবার সেসব ভাঙা শুরু হোক, শরীর দেখেছি তোমাকে দেখিনি
হাওয়া ভাঙে মেঘ, মেঘ কি শরীর? শরীর আমার সহ্য হয় না
শিল্প আমার সহ্য হয় না, স্বপ্নের মতো ঝমকুমে রং,
এক মুহূর্ত
দুই চোখে শুধু আমাকেই দেখো, আমি আজ বড় অস্থির আছি
আমি আজ এক নক্ষত্ৰকে হৃদয় সঁপেছি
নর্তকী তুমি সুন্দর, আমি তোমাকে চাই না, তোমার চোখের
নক্ষত্রকে খুঁজে নিতে দাও।