১ অহীথোফল অবশালোমকে বলল, “আমাকে ১২,000 লোক বেছে নিতে দাও। আজ রাতেই আমি দায়ূদকে তাড়া করব।
২ যখন সে ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে যাবে তখন আমি তাকে ধরব। আমি তাকে ভীত ও আতঙ্কিত করে তুলব। তার সব লোকরা দৌড়ে পালিয়ে যাবে। কিন্তু আমি শুধু রাজা দায়ূদকেই হত্যা করব।
৩ তারপর আমি সব লোককে তোমার কাছে ফিরিযে নিয়ে আসব। যদি দায়ূদ মারা যায়, তাহলে সব লোকরা শান্তিতে ফিরে আসবে।”
৪ অবশালোম এবং ইস্রায়েলের সব নেতার কাছেই এই প্রস্তাব ভাল বলে মনে হল।
৫ কিন্তু অবশালোম বলল, “এখন আমি অকীয হূশযকে ডাকি। সে কি বলে তাও আমি শুনতে চাই।”
৬ হূশয অবশালোমের কাছে এল। অবশালোম হূশযকে বলল, “অহীথোফল এই পরামর্শ দিয়েছে। আমরা কি এটাই অনুসরণ করব? তা যদি না হয় তাহলে বল কি করা উচিত্?”
৭ হূশয অবশালোমকে বলল, “অহীথোফলের উপদেশ এই সমযে উপযোগী নয়।”
৮ হূশয আরও বলল, “তুমি জানো যে তোমার পিতা এবং তার লোকরা খুবই শক্তিশালী। বাচ্চা কেড়ে নিলে বুনো ভাল্লুক যেমন হিংস্র হয়ে ওঠে ওরাও তেমনিই ভয়ঙ্কর। তোমার পিতা একজন দক্ষ য়োদ্ধা। তিনি কখনও সারারাত ওই লোকদের সঙ্গে থাকবেন না।
৯ সম্ভবতঃ তিনি কোন গুহা বা অন্য কোথাও ইতিমধ্যে লুকিয়ে পড়েছেন। যদি তোমার পিতা তোমার লোকদের আগে আক্রমণ করে, লোক এই সংবাদ জানতে পারবে। এবং তারা ভাববে, ‘অবশালোমের লোকরা হেরে যাচ্ছে!’
১০ তখন সিংহের মত সাহসী য়োদ্ধারাও ভীত ও আতঙ্কিত হবে। কেন? কারণ গোটা ইস্রাযেল এই কথা জানে যে তোমার পিতা শক্তিশালী য়োদ্ধা এবং তাঁর লোকরা অত্যন্ত সাহসী।
১১ “আমার প্রস্তাব হল এই; তুমি অবশ্যই দান থেকে বের্-শেবা পর্য়ন্ত সব ইস্রায়েলীয়দের একসঙ্গে জড়ো করবে। সমুদ্রে যেমন অগুনতি বালি থাকে সেরকমই সেখানে অনেক লোক হবে। তারপর, তুমি নিজে অবশ্যই যুদ্ধে যাবে।
১২ দায়ূদ যেখানে লুকিয়ে আছে সেখানেই আমরা তাকে ধরব। অগণিত সৈন্যসহ আমরা দায়ূদকে আক্রমণ করব। ভূমিকে ঢেকে দেওয়া অসংখ্য় শিশির কণার মত আমরা ওদের ঢেকে দেব। আমরা দায়ূদ এবং তাঁর লোকদের হত্যা করব। কাউকে জীবিত ছাড়া হবে না।
১৩ যদি দায়ূদ নগরের ভিতরে পালিয়ে যান সকল ইস্রায়েলীয় মিলে দড়ি দিয়ে আমরা নগরের প্রাচীর ভেঙ্গে দেব। তাদের সবাইকে আমরা উপত্যকায টেনে নামাব। নগরের একটা ছোট্ট পাথর পর্য়ন্ত আমরা রাখতে দেব না।”
১৪ অবশালোম এবং সকল ইস্রায়েলীয় বলল, “অকীয হূশযের উপদেশ অহীথোফলের উপদেশের চেয়ে ভাল।” তারা একথা বলল কারণ তা ছিল প্রভুর পরিকল্পনা। অবশালোমকে শাস্তি দেবার জন্য প্রভু অহীথোফলের সত্ উপদেশকে বিফল করার ফন্দি এঁছেিলেন।
১৫ ঐ সব কথা হূশয সাদোক এবং অবীযাথর এই দুই যাজকদের বলল। অহীথোফল অবশালোম এবং ইস্রায়েলের নেতাদের যে পরামর্শ দিয়েছে হূশয তাও বলল। হূশয নিজে যা যা পরামর্শ দিয়েছিল তাও তাদের বলল। হূশয বলেছিল,
১৬ “খুব শীঘ্র দায়ূদকে এই খবর দাও। তাঁকে বল, যেখান দিয়ে নদী পার হয়ে লোকে মরুভূমিতে ঢোকে তিনি যেন সেখানে আজ রাতে না থাকেন। তাঁকে এখুনি যর্দন নদী পার হয়ে যেতে বল। যদি তিনি নদী পার হয়ে চলে যান তবে রাজা এবং তাঁর লোকরা ধরা পড়বে না।”
১৭ যাজকের দুই পুত্র য়োনাথন এবং অহীমাস ঐন্-রোগেলে অপেক্ষা করছিল। তারা চাইত না কেউ তাদের শহরে প্রবেশ করতে দেখুক। শুধুমাত্র এক দাসী এসে তাদের সব খবরাখবর দিয়ে যেত। তারপর য়োনাথন এবং অহীমাস রাজা দায়ূদের কাছে গিয়ে সব কথা বলত।
১৮ কিন্তু এক বালক য়োনাথন এবং অহীমাসকে দেখে ফেলল। এই ঘটনা অবশালোমকে বলার জন্য বালকটি ছুটে চলে গেল। য়োনাথন এবং অহীমাসও তাড়াতাড়ি দৌড়ে পালাল এবং বহুরীমে এক লোকর বাড়ীতে এসে উপস্থিত হল। লোকটার বাড়ীর বাইরের প্রাঙ্গণে একটা কুযো ছিল। য়োনাথন এবং অহীমাস সেই কুযোতে নেমে গেল।
১৯ সেই লোকটির স্ত্রী কুযোর ওপর একটা আচ্ছাদন রেখে দিল। তারপর সে সেই কুযোর ওপর গমের বীজ বিছিযে দিল, তাই সেটি শস্যের স্তুপের মতই দেখতে লাগছিল। তাই লোকরা জানতে পারল না যে য়োনাথন এবং অহীমাস তার মধ্যে লুকিয়ে রযেছে।
২০ অবশালোমের ভৃত্যরা সেই বাড়ীতে এসে সেই মহিলাকে জিজ্ঞাসা করল, “অহীমাস এবং য়োনাথন কোথায?”মহিলা অবশালোমের ভৃত্যদের বলল, “ইতিমধ্যেই তারা নদী পার হয়ে গেছে।”তখন অবশালোমের ভৃত্যরা য়োনাথন ও অহীমাসের সন্ধানে চলে গেল। কিন্তু তারা তাকে খুঁজে পেল না। অতঃপর অবশালোমের ভৃত্যরা জেরুশালেমে ফিরে এল।
২১ অবশালোমের ভৃত্যরা চলে যাওয়ার পর, য়োনাথন ও অহীমাস কুযো থেকে বাইরে বেরিয়ে এল। তারা রাজা দায়ূদের কাছে গেল এবং দায়ূদকে বলল, “খুব তাড়াতাড়ি নদী পার হয়ে চলে যান। অহীথোফল আপনার বিরুদ্ধে এই সব ষড়যন্ত্র করেছে।”
২২ তখন দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা যর্দন নদী পার হয়ে গেল। সূর্য়োদযের আগেই দায়ূদের সব লোকরা যর্দন নদী পার হয়ে গেল।
২৩ অহীথোফল দেখল যে তার উপদেশ ইস্রায়েলীয়রা গ্রহণ করে নি। সে তার গাধার পিঠে জিন চড়িযে তার নিজের নগরে ফিরে এল। তার পরিবারের যথাবিহিত ব্যবস্থা করে সে গলায দড়ি দিল। অহীথোফল মারা গেলে লোকরা তাকে তার পিতার কবরেই কবর দিল।
২৪ দায়ূদ মহনযিমে এলেন।অবশালোম এবং তার সঙ্গে যে সব ইস্রায়েলীয়রা ছিল তারা যর্দন নদী পার হয়ে গেল।
২৫ অবশালোম অমাসাকে তার সৈন্যদলের অধিনাযকরূপে নিযুক্ত করল। অমাসা য়োয়াবের জায়গা নিল। অমাসা ছিল য়িথ্র, একজন ইস্মাযেলীযছেলে। অমাসার মাযের নাম অবীগল। সে সরূযার বোন নাহশের মেয়ে। সরূযা ছিল য়োয়াবের মা।
২৬ অবশালোম এবং ইস্রায়েলীয়রা গিলিয়দে তাঁবু ফেলে অবস্থান করল।
২৭ দায়ূদ মহনযিমে এলেন। শোবি, মাখীর এবং বর্সিল্লয সেইখানেই ছিল। শোবি অম্মোনদের রব্বা শহরের নাহশের পুত্র। মাখীর হল লোদবার নিবাসী অম্মীযেলের পুত্র। আর বর্সিল্লয গিলিয়দের, রোগলীমের থেকে এসেছিল।
২৮ সেই তিনজন লোক বলল, “মরুভূমিতে যে লোকরা রযেছে তারা ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত।” তাই তারা দায়ূদের জন্য এবং তাঁর সঙ্গে যে লোকরা ছিল তাদের জন্য অনেক কিছু জিনিস এনেছিল। তারা বিছানা এবং অন্যান্য পাত্রাদি এনেছিল। এছাড়াও তারা গম, যব, মযদা, ভাজা শস্য, বীন, শাক, শুকনো বীজ, মধু, মাখন, মেষ এবং পনীর এনেছিল।
২৯