১ লোকরা দায়ূদকে বলল, “দেখুন, পলেষ্টীয়রা কিযীলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। তারা ফসল ঝাড়াইযের জায়গা থেকে সব ফসল লুঠপাট করে নিচ্ছে।”
২ দায়ূদ প্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই করব?”প্রভু উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, কিযীলাকে বাঁচাও। পলেষ্টীয়দের আক্রমণ কর।”
৩ এদিকে দাযূদের লোকরা দায়ূদকে বলল, “শুনুন, আমরা যিহূদায় থাকতেই বেশ ভয় পাচ্ছি। তাহলে চিন্তা করুন পলেষ্টীয় সৈন্যদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইতে আমরা আরও কতখানি ভয় পেতে পারি।”
৪ দায়ূদ আবার প্রভুকে জিজ্ঞেস করলো। প্রভু বললেন, “কিযীলায চলে যাও। আমি তোমাকে পলেষ্টীয়দের হারাতে সাহায্য করব।”
৫ তাই সঙ্গীদের নিয়ে দায়ূদ কিযীলায গেলেন। তাঁর সঙ্গীরা পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করল। যুদ্ধে তারা পলেষ্টীয়দের হারিয়ে তাদের গরু, মোষ সব দখল করে নিল। এভাবেই দায়ূদ কিযীলার লোকদের বাঁচালেন।
৬ (যখন অবিয়াথর দাযূদের কাছে গিয়েছিলেন, তখন তিনি তাঁর সঙ্গে একটা এফোদ নিয়েছিলেন।)
৭ লোকরা শৌলকে বলল, “দায়ূদ এখন কিযীলায আছে।” শৌল বললেন, “ঈশ্বর দায়ূদকে আমার হাতেই দিয়েছেন। দায়ূদ নিজের জালেই নিজেকে জড়িয়েছে। সে এমন একটা শহরে গেল যেখানে অনেক ফটক এবং ফটক বন্ধ করার অনেক খিল আছে।”
৮ শৌল তাঁর সব সৈন্যদের যুদ্ধ করার জন্য ডাকলেন। তারা দায়ূদ ও তাঁর লোকদের আক্রমণ করার জন্য কিযীলায যাবার জন্য প্রস্তুত হলো।
৯ শৌলের এই মতলব দায়ূদ জানতে পারলেন। তিনি যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “এই খানে সেই এফোদ আনো।”
১০ দায়ূদ প্রার্থনা করলো, “হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি শুনেছি শৌল আমার জন্য কিযীলায এসে শহর ধ্বংস করার মতলব করেছে।
১১ শৌল কি কিযীলায আসবে? কিযীলায লোকরা কি ওর হাতে আমায় তুলে দেবে? হে প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আমি আপনার সেবক। দয়া করে আমায় বলুন!”প্রভু বললেন, “শৌল আসবে।”
১২ আবার দায়ূদ জিজ্ঞেস করলো, “কিযীলার লোকরা কি আমায় এবং আমার লোকদের শৌলের হাতে ধরিয়ে দেবে?”প্রভু বললেন, “হ্যাঁ, ধরিয়ে দেবে।”
১৩ তখন দায়ূদ সঙ্গীদের নিয়ে কিযীলা ছেড়ে চলে গেলেন। দাযূদের সঙ্গে ছিল ৬০0 জন পুরুষ। তারা বিভিন্ন জায়গায় চলে গেল। শৌল জানতে পারলেন দায়ূদ কিযীলা থেকে চলে গেছেন। তাই তিনি আর ওখানে গেলেন না।
১৪ দায়ূদ মরুভূমিতে গিয়ে সেখানকার উঁচু পাঁচিল ঘেরা দুর্গ নগরে কিছুকাল থেকে গেলেন। তিনি সীফ মরুভূমির পাহাড়ি দেশেও থাকলেন। প্রতিদিন শৌল দায়ূদদের খোঁজ করতেন; কিন্তু প্রভু শৌলের হাতে দায়ূদকে সঁপে দিলেন না।
১৫ সীফ মরুভূমির হোরেশে দায়ূদ গেলেন। শৌল তাকে হত্যা করতে আসছেন বলে তিনি বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন।
১৬ কিন্তু শৌলের পুত্র য়োনাথন হোরেশে দাযূদের সঙ্গে দেখা করতে গেল। য়োনাথন দায়ূদকে ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখতে সাহায্য করেছিলো।
১৭ য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “ভয় পেও না। আমার পিতা শৌল তোমাকে মারবে না। তুমি হবে ইস্রায়েলের রাজা। আমি হব তোমার দ্বিতীয় জন। এমনকি আমার পিতাও সেটা জানে।”
১৮ য়োনাথন এবং দায়ূদ দুজনে প্রভুর সামনে এক চুক্তি করলো। তারপর য়োনাথন ঘরে ফিরে গেলো। দায়ূদ হোরেশে থেকে গেলেন।
১৯ সীফের বাসিন্দারা শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গিবাযায় এল। তারা শৌলকে বলল, “দায়ূদ আমাদের দেশেই লুকিয়ে আছে। দায়ূদ যেশিমোনের দক্ষিণে হখীলা পাহাড়ের ওপর হোরেশের দুর্গে রযেছেন।
২০ সুতরাং হে রাজন, যে কোন দিন আপনি আমাদের এখানে চলে আসুন। দায়ূদকে আপনার হাতে ধরিয়ে দেওয়া আমাদের কর্তব্য।”
২১ শৌল বললেন, “তোমরা আমাকে সাহায্য করেছ। প্রভু তোমাদের মঙ্গল করুন।
২২ যাও, দায়ূদ সম্বন্ধে আরও খোঁজখবর করো। দেখ, কোথায় সে রযেছে, কে কে দায়ূদকে সেখানে দেখেছে। শৌল ভাবলেন, ‘দায়ূদ চালাক ও চতুর তাই হয়তো আমার সঙ্গে চালাকি করতে চাইছে।’
২৩ শৌল বললেন, “দাযূদের লুকোনোর সমস্ত জায়গা খুঁজে বের করো। তারপর ফিরে এসে আমাকে সমস্ত জানাও। জানার পর আমি তোমাদের সঙ্গে যাব। দায়ূদ এখানে থাকলে আমি তোমাদের সঙ্গে যাব। দায়ূদ এখানে থাকলে আমি তাকে খুঁজে বের করবই। যিহূদায় বাড়ী বাড়ী খোঁজ করলেও ওকে আমি পেয়ে যাব।”
২৪ সীফের বাসিন্দারা সীফে ফিরে গেল। পরে শৌল সেখানে গেলেন। দায়ূদ আর তাঁর লোকরা থাকতেন মাযোন মরুভূমিতে। জায়গাটা ছিল যেশিমোনের দক্ষিণে।
২৫ শৌল তাঁর লোকদের নিয়ে দাযূদের খোঁজ করতে লাগলেন। কিন্তু এখানে লোকরা দায়ূদকে সাবধান করে দিল যে শৌল তাঁকে খুঁজছে। দায়ূদ যখন এটা শুনলেন তিনি মাযোন মরুভূমির ‘রক’ অঞ্চলে চলে গেলেন। এ খবর শৌলের কাছে পৌঁছে গেল। সেখানে দায়ূদকে ধরতে ছুটলেন।
২৬ একই পাহাড়ের একদিকে শৌল আর উল্টোদিকে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীরা। দায়ূদ শৌলের কাছে থেকে পালিয়ে যাবার জন্য তীব্রবেগে ছুটছিলেন। শৌলও দায়ূদকে ধরবার জন্য সৈন্যদের নিয়ে পাহাড়ের চারিদিক ঘিরে ফেললেন।
২৭ সেই সময় শৌলের কাছে একজন দূত এসে বলল, “শিগ্গির এসো, পলেষ্টীয়রা আমাদের আক্রমণ করতে আসছে।”
২৮ তখন শৌল দাযূদের পিছু নেওয়া বন্ধ করলেন। তিনি পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়াই করতে গেলেন। সেই কারণে লোকরা ঐ জায়গার নাম দিয়েছিল ‘পিছল শিলা।’
২৯ দায়ূদ মাযোন মরুভূমি থেকে চলে গেলেন সুরক্ষিত দুর্গ নগরগুলোয। সেগুলি ঐন-গদীর কাছাকাছি অবস্থিত।