এক
একেবারে ময়ূরভঞ্জ!
তাই ঠিক হল। ব্রিগেডিয়ার ভার্গব চাকরি থেকে অবসর নেবার পর ঠিক করলেন তাঁর শেষজীবনটা ময়ূরভঞ্জেই কাটাবেন। ময়ূরভঞ্জে যাওয়ার আরও একটা কারণ আছে। কিছুটা স্বাস্থ্যের কারণও বটে, আবার কিছুটা শৈশবের দিনগুলির কথা ভেবে। চিরটা কাল বাইরে বাইরেই কাটিয়েছেন তিনি, তাই কলকাতার জলহাওয়া তাঁর একদম সহ্য হয় না।
স্ত্রী বিনতা প্রথমে একটু আপত্তি করেছিলেন। কিন্তু ভার্গবের মন কিছুতেই থাকতে চাইল না এখানে। তিনি অনেক করে বোঝালেন স্ত্রীকে, জীবনের শেষদিনগুলি সত্যিই যদি সুখেশান্তিতে কাটাতে হয় তো কলকাতায় কখনও নয়, ময়ূরভঞ্জেই ভাল।
চারদিকে পাহাড় আর পাহাড়। গভীর অরণ্যানি। সবুজের মেলা যেন চারদিকে। কী রমণীয় পরিবেশ। যদিও আগের সেই পরিবেশ এখন আর নেই। শৈশবে যখন তিনি এইখানে মাতুলালয়ে মানুষ হয়েছিলেন, তখন প্রকৃতির যে অনবদ্য রূপ ছিল, এখন তা অনেকাংশে হারিয়ে গেছে। তবু অন্যান্য জায়গাগুলোর মতো শহর-সভ্যতার সংস্পর্শে এসে হতশ্রী নয়।
এখনও কত লোক দু’-চারদিনের ছুটি কাটাতে ময়ূরভঞ্জে বেড়াতে যায়।
কলকাতার ধর্মতলা থেকে বাস ছাড়ে।
এখানকার জলহাওয়া এত ভাল যে মানুষের হৃত যৌবন যেন ফিরে আসে। একটিই মাত্র ছেলে। নাম সৌরভ। ওর ভবিষ্যতের কথা ভেবেও কিছু একটা করতে হবে বইকী। বিশেষ করে এখন যা দিনকাল পড়েছে তাতে। ভারী সুন্দর ছেলেটি। মায়ের মতোই চোখমুখের গড়ন। আর গায়ের রং যেন ফেটে পড়ছে। টানা টানা চোখ, টিকলো নাক, মাথায় ঘন চুল। ময়ূরভঞ্জের প্রাকৃতিক পরিবেশে সৌরভের আরও সৌন্দর্য হবে। নীরোগ শরীর নিয়ে সুস্থসুন্দর দেহে ঝলমল করবে। এত সব চিন্তা করে তবেই তিনি ময়ূরভঞ্জে যাবার পরিকল্পনা করলেন। ওড়িশার এই পাহাড়ি অঞ্চলের প্রতি তাঁর বরাবরেরই দুর্বলতা। তা ছাড়া
ময়ূরভঞ্জ এখন সব দিক থেকেই উন্নত। ব্যাঙ্ক, পোস্টঅফিস, বড় বড় বাড়ি, বাজার-হাট কী নেই ময়ূরভঞ্জে?
ছেলেটা সেখানে মন দিয়ে লেখাপড়া শিখবে।
মাধ্যমিক পরীক্ষা যখন হয়ে গেছে, তখন ওইখানকার কলেজেই ভরতি হয়ে কলেজের পড়াটা পড়ে নেবে।
সৌরভেরও কলকাতার প্রতি টান একদমই নেই।
তাই বাবার সঙ্গে একমত হল সে। কী আছে কলকাতায়? ব্রিটিশ আমলের পুরনো নোংরা শহর আর নোংরা রাজনীতি ছাড়া আছেটা কী?
তাই সৌরভও বাবাকে বলল, দরকার নেই এই শহরে। তুমি ময়ূরভঞ্জেই চলে চলো।
ভার্গব বললেন, অনেক ভেবেচিন্তে আমিও এই সিদ্ধান্তেই এসেছি বাবা। তা ছাড়া আমার আর ক’টা দিন? তবু ওখানকার জলহাওয়া পেলে হয়তো আরও কিছুদিন সুস্থ শরীরে থাকব।
সৌরভ বলল, আচ্ছা বাবা, আমরা যে আসামে ছিলাম ক’বছর, সেখানকার বন-জঙ্গল পাহাড়-পর্বতের সঙ্গে এখানকার মিল আছে?
না একদমই নেই। এখানকার মাটি গাছপালার রূপই আলাদা। ময়ূরভঞ্জ আরও সুন্দর। নামের মধ্যেই কেমন একটা মাধুর্য আছে দেখছিস না?
সৌরভ বলল, ওখানেই যদি আমাদের বরাবর থাকা হয় তা হলে তুমি ওখানে গিয়েই আমাকে একটা স্কুটার কিনে দেবে।
অবশ্যই। না হলে ওই পাহাড়ি এলাকায় চলাফেরা করবি কী করে? আজকাল অনেক হালকা ধরনের স্কুটার বেরিয়েছে। তারই একটা কিনে দেব তোকে। আমি আগে নিজে গিয়ে সব ব্যবস্থা করে আসি।
বিনতা বললেন, ছেলে পাশ করে কলেজে পড়ে বেরিয়ে এলে ওখানেই চাকরি বাকরি পাবে তা?
না পেলেই বা ক্ষতি কী? আমার যা সঞ্চয় তাতে ওর কি বড় হয়ে চাকরি করার কোনও প্রয়োজন আছে?
আছে। তোমার আছে বলেই যে ছেলে নিষ্কর্মা হয়ে বসে বসে তোমার টাকায় তার দিন কাটাবে এরকম কথা তুমি বললে কী করে? তোমার যত টাকাই থাকুক ওকে ওর পায়ে দাঁড়াতে দাও।
তা দেব। তবে তুমি আমার কথার অর্থ ভুল বুঝেছ। আমি ব্রিগেডিয়ার ভার্গব। আমি কখনওই চাইব না আমার একমাত্র ছেলের ক্যারিয়ার নষ্ট হোক। তবু আমার এই যে পঁচিশ-ত্রিশ লাখ টাকা, এগুলোকে খরচাও তো করতে হবে? এই টাকা খাটিয়ে যাতে ও ব্যবসা করে খেতে পারে সেই কথাই বলছি আমি। অর্থাৎ আমার ছেলের চাকরির প্রয়োজনটা কী?
বিনতা বললেন, তাই বলো।
এখন ময়ূরভঞ্জে গিয়ে একটা মনোমতো জায়গা খুঁজে বার করতে পারলেই হয়।
তুমি তা হলে নিজে একবার ময়ূরভঞ্জে যাও। তবে একটা কথা, সব সময়ে মনে রেখো দেশের মাটির একটা আলাদা আকর্ষণ আছে। তাই আমার কথাটাও একটু মাথায় রেখো।
কীরকম!
ময়ূরভঞ্জের ব্যাপারে আমারও আপত্তি নেই। তবে কিনা আমি কলকাতার মেয়ে। যদিও কোনও চুলোয় কেউ নেই আমার তবু কলকাতার টান আমার রক্তে আছে। সাত আট লাখ টাকা খরচা করে আমি বলি কী কলকাতায় একটা ফ্ল্যাট কিনে রাখো। মাঝে মধ্যে আসা যাবে। জিনিসপত্তর কিছু রাখব না। একমাত্র খাট বিছানা ছাড়া। ভবিষ্যতের মুখ চেয়েই একথা বলছি।
সৌরভ বলল, মায়ের এই প্রস্তাবটা কিন্তু অযৌক্তিক নয়। তার কারণ ময়ূরভঞ্জ যত ভাল জায়গাই হোক, আমাদের কিন্তু বিদেশ। আমরা বাংলার মানুষ। ময়ূরভঞ্জ ওড়িশায়। আজকাল তো এক দেশের এক ভাষার মানুষের সঙ্গে অন্যদেশের অন্য ভাষার মানুষের বিবাদ লেগেই আছে। তাই সেইরকম পরিস্থিতি কখনও হলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে যাতে পালিয়ে আসতে পারি সেই ব্যবস্থাটা করে রাখতে হবে।
বিনতা বললেন, তা ছাড়া বছরে একবার পুজোর সময় তো আসবই। কলকাতার মতো পুজো কোথাও কি আছে? কলকাতার পুজো ছেড়ে কোথাও থাকতে পারব না আমি।
ভার্গব হাসলেন। বললেন, হ্য!। কলকাতায় একটা ফ্ল্যাট রাখার ইচ্ছে আমারও যে নেই তা নয়। একথাটা অবশ্য মন্দ বলনি। ময়ূরভঞ্জে বাংলো, বাগান সব কিছুই থাক। কলকাতায় থাক ছোট্ট একটা ফ্ল্যাট।
তুমি তা হলে কবে যাচ্ছ ময়ূরভঞ্জ?
অরবিন্দর চিঠিটা কবে আসে দেখি।
চিঠি তো তুমি অনেকদিন দিয়েছ? এখনও উত্তর আসছে না কেন?
আসবে আসবে। ক্যুরিয়ার সার্ভিসের চিঠি। সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে গেছে। এখন একটু খোঁজখবর নেবে, দেখাশোনা করবে, তবে তো।
সৌরভ বলল, কিন্তু বাবা অরবিন্দকাকুর তো দেখাই ছিল জায়গাটা। উনিই তো পছন্দ করে তোমাকে নিতে বলেছিলেন।
তা ঠিক। তবুও জমি জায়গার ব্যাপার তো। দরদামের প্রশ্ন আছে। তা ছাড়া ময়ূরভঞ্জ এখন অনেক উন্নত মানের জায়গা।
আমার স্কুলের বন্ধুরা গতবছর ধর্মতলা থেকে বাসে কেওনঝোড় গিয়েছিল। ওখান থেকে ময়ূরভঞ্জ কতদূর?
কেওনঝোড়ই তো ময়ূরভঞ্জ। ময়ূরভঞ্জ নামে আলাদা কোনও জায়গা নেই।
ওঁদের এই আলোচনার ফাঁকেই ডাক পিওন এসে একটা চিঠি দিল। চিঠিটা খামে করে এবং অর্ডিনারি পোস্টে পাঠানো। পোস্ট অফিসের ছাপ দেখে বোঝা গেল সেটার কেওনঝোড় থেকে আসতে সময় লেগেছে দশদিন। এবং প্রেরকের নাম দেখে বোঝা গেল অরবিন্দ গাঙ্গুলিই পাঠিয়েছেন চিঠিটা।
ভার্গব চিঠিটা খুললেন। তারপর দু’-এক ছত্রে চোখ বুলিয়েই বললেন, যাক, এতদিনে আমার স্বপ্ন বুঝি সফল হতে চলেছে।
বিনতা বললেন, কার চিঠি? অরবিন্দর?
হাি
কী লিখেছে একটু পড়ে শোনাও?
অরবিন্দ লিখেছে, তোমার চিঠি পেয়েছি। একটা জায়গা আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। জায়গাটা মেইন রোডের ওপরে সিনেমা হলের দিকে। আর একটা জায়গা আছে সেটা দামে খুব কম, তবে অত্যন্ত লোভনীয়। কিন্তু শহর থেকে সামান্য একটু দূরে পাহাড়ের কোলে।
ভার্গব বললেন, আমি তো ওইরকম জায়গাই খুঁজছিলাম। একেবারে আইডিয়াল জায়গা যাকে বলে।
সৌরভ বলল, থাকতে গেলে ওই রকম জায়গাতেই থাকতে হয়। বিনতা বললেন, না। তোমাদের বাপ-ব্যাটার দু’জনেরই মাথায় দেখছি ছিট আছে।
ভার্গব বললে, কেন কেন?
তা নয় তো কী? আমরা কি বনবাসে যাচ্ছি? আমরা যাচ্ছি একটা জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে। একদিন দু’দিনের জন্য নয়, বরাবরের জন্য। অতএব এমন একটা জায়গা নির্বাচন করতে হবে যেখানে ডাক্তারবদ্যি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্তর কেনার দোকান বাজার হাট ইত্যাদি সবকিছুই হাতের মুঠোয় পাওয়া যায়। এ না হলে তো দু’দিনে হাঁফিয়ে উঠবে। তা ছাড়া অন্য ভয়ও আছে। চুরিডাকাতি আজকাল কোন জায়গায় নেই? কাজেই রাত-বিরেতে বিপদ-আপদ কিছু হলে কারও সাহায্য পাবে?
ভার্গব বললেন, আমি যতদূর জানি ময়ূরভঞ্জ কিন্তু এখনও ওই সবের ঊর্ধ্বে। হোক। তবু আমি ওই রকম পরিবেশে কিছুতেই যাব না। শহরে লোক্যালিটির মধ্যে জায়গা কেনো, আমি যেতে রাজি।
সৌরভ বলল, মায়ের সঙ্গে এই ব্যাপারে আমি একমত। তবে কিনা দুটো জায়গাই দেখা হোক। পাহাড়তলির জায়গাটা যদি সত্যিই লোভনীয় হয় তা হলে সেটাও কিনে রাখলে ক্ষতি কী?
ভার্গব বললেন, কোনও ক্ষতি নেই। ব্যাঙ্কে টাকা রাখার চেয়ে জমি কিনে সৌরভ বলল, ফেলেই বা রাখব কেন? শহরের জমিতে আমাদের বসতবাড়িটা হোক, আর ওইখানে একটা ছোট্ট বাগান, সেইসঙ্গে ছোটখাটো একটা কুঁড়েঘর। বিনতা বললেন, তাতে অবশ্য আমার আপত্তি নেই। ব্রিগেডিয়ারসাহেব একটা বাড়ি হাঁকিয়ে পাহাড়ের কোলে থাকবেন, অথচ সে বাড়িতে রাত্রিবেলা ডাকাতি হবে না, এ আমি কিছুতেই বিশ্বাস করব না। আজকাল স্বর্গেও ডাকাতি হয়।
ভার্গব হাসলেন। বললেন, অরবিন্দ লিখেছে আমাদের সবাইকেই যেতে। বিশেষ করে সৌরভকে কবে সেই দু’বছরেরটি দেখেছিল, এখন সে কত বড় হয়েছে সেটা দেখার ইচ্ছেই তার প্রবল। কেন না ওর মেয়েটাও তো ওরই জুড়ি। তুমি তা হলে কবে যাবে ঠিক করলে?
আমি কেন? তোমরা যাবে না?
শুধু শুধু গিয়ে কী করব।
কী আবার করবে? জায়গা পছন্দ করবে।
ওর ভেতরে আমি নেই। বলে উঠে গিয়ে চায়ের কেটলি নিয়ে চা করতে বসলেন। তারপর পেয়ালায় টুং টাং করতে করতেই বললেন, তোমরা দু’বাপ-ব্যাটায় যাও গিয়ে জমি পছন্দ করে এসো। আমি যাব একেবারে গৃহপ্রবেশের সময়। তবে বাপু একটা কথা। আমার একটা ঠাকুরঘর তোমরা করে দিয়ো।
আমরা চলে যাব, তুমি একা থাকবে?
ক্ষতি কী?
সৌরভ বলল, একা থাকতে মায়ের অবশ্য তা হয়তো হবে না। কিন্তু যাবে না কেন?
কোনও অসুবিধেই হবে না।
ধ্যুৎ। কারও বাড়িতে গিয়ে ওঠা আমার পোষাবে
বেশ তো, না পোষায় হোটেলে উঠব। ওখানে কি হোটেল-লজের অভাব আছে? পঞ্চাশ-ষাট টাকায় ভাল ঘর পাওয়া যায়।
না।
সেটা কি ঠিক হবে? যার এত উৎসাহ তার বাড়িতে না উঠলে সে কী ভাববে বলো তো? তাই বলি কী, তোমরাই যাও।
সৌরভ বলল, আমরাই যাব। কিন্তু বাবা, যাব কীসে আমরা?
দু’রকম উপায় আছে। এক হল ধর্মতলা থেকে সরকারি বাসে কেওনঝোড়। অথবা রাতের তিরুপতি এক্সপ্রেসে যাজপুর কেওনঝোড় রোড স্টেশনে নেমে কেওনঝোড়ে যাওয়া। সকাল ছ’টায় ধৌলি এক্সপ্রেসেও যাওয়া যায়। বেলা বারোটা-একটা নাগাদ পৌঁছে সেখান থেকে বাস। যেতে অবশ্য সন্ধে হয়ে যায়।
বিনতা বললেন, আমার কথা যদি শোনো, তা হলে শেষেরটাই করো। সৌরভ বলল, বাসে যেতে আমার একটুও ইচ্ছে নেই। ট্রেন জার্নির চেয়ে আরামদায়ক কীসে আছে আর? তবে বাবা ওই সকালবেলার ধৌলিতে যাওয়া নয়। রাতের তিরুপতিতেই যাওয়া ভাল।
বিনতা বললেন, তিরুপতি এক্সপ্রেস? ওটা তো
চোরডাকাতের গাড়ি। রোজ কাগজ খুলেই দেখি যত চুরিডাকাতি সব ওই গাড়িতে।
ভার্গব বললেন, সেটা দুর্ভাগ্যের ব্যাপার। কপাল ফাঁসলে কালকা মেল অথবা
রাজধানী এক্সপ্রেসেও ডাকাতি হতে পারে।
সৌরভ বলল, আমি রাতের গাড়িই পছন্দ করছি। কখন পৌঁছবে গাড়িটা? এই ধরো না কেন, সকাল ছ’টা সাড়ে-ছ’টা নাগাদ।
এখানে ছাড়ছে ক’টায়?
রাত এগারোটা কুড়িতে।
চমৎকার হবে তা হলে। খেয়েদেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে স্টেশনে যাওয়া। তারপর থ্রি-টায়ার শিল্পার কোচে হাত-পা ছড়িয়ে একটা চাদর চাপা দিয়ে শুয়ে পড়া।
সকাল যখন হবে তখন বাথরুমের কলে মুখহাত ধুয়ে স্টেশন এলেই নেমে পড়া।
ভার্গব বললেন, আমারও ওই একইরকম ইচ্ছা। কেন না সারাটা দিন ধরে বসে বসে যাওয়ার চেয়ে রাতের গাড়িতে জার্নি করা অনেক ভাল। ট্রেনের দোলায় ঘুমোতে ঘুমোতে গেলে সময়টা যে কোথা দিয়ে কীভাবে কেটে যাবে তা বোঝাও যাবে না।
তা হলে আমরা যাব কবে?
ভার্গব হাসলেন। বললেন, টিকিট যেদিনের পাব। কাল পেলে কাল, পরশু পেলে পরশু।
বিনতা চা তৈরি করে মাখনটোস্ট সহযোগে চা দিলেন টি-টেবিলে। ঠিক হল চা-টা খেয়েই ভার্গব টিকিটের জন্য যাবেন।
বিনতা বললেন, সেই যাবেই যখন ঠিক করছ রাতের গাড়িতে, তখন যাও।
তাই বলে যেন দয়া করে ফার্স্ট ক্লাসের টিকিট কেট না। থ্রি-টায়ার শিল্পার ক্লাসেই কেটো। লোকজন থাকবে অনেক।
ভার্গব বললেন, তাই তো কাটব। শুধু শুধু ফার্স্ট ক্লাসে কেটে কতকগুলি টাকা ফালতু নষ্ট করে লাভ কী?
চা খাওয়া শেষ হলে ভার্গব পোশাক পরিবর্তন করে নিউ কয়লাঘাটা বুকিং অফিসের দিকে চললেন।
সৌরভ গেল তার বন্ধুদের কাছে এই সুখবরটা পৌঁছে দিতে। অবশ্য জমি কেনার ব্যাপারস্যাপারগুলো ও বলবে না কাউকে। শুধু বেড়াতে যাওয়ার কথাটাই জানবে সকলে। সবাই জানবে এক অনবদ্য প্রাকৃতিক পরিবেশে কাজলনয়না হরিণীর দেশে সৌরভ যাচ্ছে কয়েকদিনের ভ্রমণবিলাসে।