সব্যসাচীর গোয়েন্দাগিরি – ১

এক

ধীর শ্লথগতিতে শ্রীজগন্নাথ এক্সপ্রেস যখন পুরীতে এসে পৌঁছল আকাশ তখনও অন্ধকার। ভোরের আলো একেবারে ফুটে না উঠলেও ফুটিফুটি করছে। পাখির কলরব শোনা যাচ্ছে চারদিক থেকে। সেই সঙ্গে শত শত যাত্রীর চরণের ছন্দ ও কুলিদের হাঁকডাক। সমুদ্রের ডাকে আসা শহরের মানুষগুলোর কয়েকটি দিনের জন্য উদ্দাম হবার সে কী অসীম চঞ্চলতা। এ হল রোজের ব্যাপার। সমুদ্রের ঊর্মিমালার মতো যাত্রীর ঢেউ জলতরঙ্গে জনতরঙ্গ হয়ে দিবারাত্রই আছড়ে পড়ে পুরীর সৈকতে। আসে আর যায়। যায় আর আসে।

এখন জানুয়ারি মাস।

যদিও সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চল বলে পুরীতে শীতের কামড় কলকাতার চেয়ে অনেক কম, তবুও স্নেহাংশুবাবু সবকিছুই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে। দীর্ঘ কুড়ি বছর পরে পুরীতে এলেন তিনি। এর আগে যখন এসেছিলেন তখন বিয়ে করেননি। ছাত্র ছিলেন। বাবা-মা ছিলেন সঙ্গে। এখন তাঁরা কেউ নেই। স্ত্রী এবং ছেলে আছে। একমাত্র ছেলে, সব্যসাচী। বড়ই আদরের।

প্রতিবছর এই সময়টায় স্নেহাংশুবাবু দিন কয়েকের ছুটি নিয়ে বাইরে বেড়াতে যান। কখনও রাজগির, কখনও বিন্ধ্যাচল, কখনও বারাণসী। তবে বারাণসীতেই বেশি যান। কেন না ওখানে গেলে কেমন যেন একটা মাটির টান অনুভব করেন স্নেহাংশুবাবু। তার কারণ ছেলেবেলায় বেশ কয়েকটা বছর বারাণসীতেই কেটেছিল তাঁর। কিন্তু স্ত্রী সরমা এবং ছেলে সব্যসাচীর সাধ মেটাতেই এই বছর তিনি পুরীতে এলেন।

সব্যসাচীর স্কুলের বন্ধুরা বছর বছর পুরী আসে। সমুদ্রের ঢেউ খায়, কত গল্প করে। তাই সমুদ্রের ডাক কলকাতার ঘরে বসেও যেন শুনতে পায় সব্যসাচী। সমুদ্র ওকে ডাকে। বারে বারে। হাতছানি দিয়ে। সেই সমুদ্রের ডাকে সাড়া দিতে সব্যসাচী ওর বাবার গলা জড়িয়ে আবদার করে বলে, এবারে আর কোথাও নয় বাবা। এবার আমাকে পুরী নিয়ে চলো। আমার অনেকদিনের সাধ। একমাত্র ছেলের আবদার স্নেহাংশুবাবুর মতো সহৃদয় বাবা কি না রেখে থাকতে পারেন? তাই এককথায় রাজি হয়ে গেলেন। সেই সঙ্গে স্ত্রীর মনটাও যাচাই করে নিলেন একবার। স্ত্রীও মত দিলেন পুরী যাওয়ার পক্ষে। বললেন, বিশ্বনাথকে তো বছর বছর দর্শন করি। এ বছরে বরং শ্রীক্ষেত্রে গিয়ে জগন্নাথেরই দর্শন হোক। ছেলেটারও এত আশা যখন।

তাই অনেক জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে পুরীতে আসাই ঠিক হল। দাঁইহাটের ব্যানার্জিদা পুরীতে একটি হলিডে হোম দেখাশোনা করেন। তিনিই ব্যবস্থা করে দিলেন একটা ঘরের। তাঁর সহকর্মী মৃগেনবাবু নিউ কয়লাঘাটা বুকিং অফিস থেকে রেলের স্লিপার কোচে তিনটে বার্থও রিজার্ভ করিয়ে আনলেন। শুধু রিটার্ন রিজার্ভেশনটা কনফর্ম হল না বলে, আসবার সময় ক্যানসেল করিয়ে এলেন টিকিটটা।

ট্রেন থেকে নেমে প্লাটফর্মে পা রেখেই সরমা বললেন, ওমা! এখানে একদম শীত নেই দেখো। অথচ সারারাত গাড়িতে কী শীত।

স্নেহাংশুবাবু বললেন, সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে শীত একটু কমই হয়। গরমও বেশি হয় না।

সরমা বললেন, শীত যে বেশি হয় না, তার প্রমাণ এখনই পাচ্ছি। কিন্তু গরমের কথা বোলো না। ছোটবেলায় একবার বাবার সঙ্গে দ্বারকা গিয়েছিলাম। সেও তো সমুদ্রতীর। আরব সাগরের তীরে রণছোড়জির বিশাল মন্দির। সকাল আটটার পর বালি এমন তেতে উঠত যে সমুদ্রের ধারেকাছেও যেতে পারতুম না।

স্নেহাংশুবাবু বললেন, বালি তো তাতবেই। কিন্তু ঘরের ভেতর ভ্যাপসা গরম কি টের পেয়েছ? গায়ে ঘামাচি?

না তা অবশ্য পাইনি। পেলেও মনে নেই।

এমন সময় কানের কাছে কে যেন এসে বলল, আপনমানস্কর পণ্ডা কেএ? বৃন্দাবন খুনটিয়া নয়তো?

হঠাৎই আলোচনায় ছেদ পড়ল। একজন নয়, একাধিকজন এসে হেঁকে ধরল ওঁদের, পণ্ডা কেএ বাবু?

স্নেহাংশুবাবু বললেন, আমাদের পাণ্ডা হচ্ছেন লিঙ্গরাজ মিশ্র।

কেউঠু আসুছত্তি? রহিবে কেউঠি?

আমরা গৌরবাটশাহীতে হলিডে হোমে উঠব।

আবার একজন এগিয়ে এলেন, পণ্ডা কেএ বাবু?

স্নেহাংশুবাবু বললেন, মোটা ভীম।

সরমা বললেন, কী যা তা বলছ? মুখে কিছু আটকাচ্ছে না? ওরা রেগে যাবে যে !

স্নেহাংশুবাবু বললেন, রাগ করবেন কেন? পাণ্ডার নামই যে ওই। ভাল নাম তাঁর অবশ্য নিশ্চয়ই আছে। তবে স্থানীয়দের কাছে উনি ওই নামেই পরিচিত। আসলে ব্যানার্জিদা আমাকে বলে দিয়েছেন।

সরমা যেতে যেতে বললেনযেন বিরক্ত ধরে যায়। এত পাণ্ডার অত্যাচার কিন্তু আর কোথাও নেই। স্নেহাংশুবাবু হেসে বললেন, অত্যাচার। অত্যাচার কোথায় দেখলে? অত্যাচার করেনি তো কেউ। শুধু জানতে চেয়েছে কোথা থেকে আসছি, পাণ্ডা কে?

কথার জবাব দিতে দিতে

তাই বলে সবাই মিলে এইভাবে একসঙ্গে?

তুমি কতদিন কালীঘাট আর তারকেশ্বরে যাওনি?

সরমা আর কিছুই বললেন না। একেবারে মুখের মতন জবাব।

স্নেহাংশুবাবু বললেন, এরা নিশ্চয়ই তাদের চেয়ে বেশি কিছু করছে না? কথা বলতে বলতেই সকলে গেট পেরিয়ে বাইরে এলেন। সঙ্গে সঙ্গে হেঁকে ধরল রিকশাওয়ালার দল।

স্নেহাংশুবাবু আট টাকায় একজন রিকশাওয়ালাকে রাজি করিয়ে, তাতেই চেপে বসলেন। একটা রিকশাতেই ধরে গেল তিনজনকে। ওঁরা স্বামী-স্ত্রী পাশাপাশি বসলেন। সব্যসাচী কোলে। একটা চামড়ার সুটকেশ, সেটা রইল পা-তলায়।

রিকশা তির তির করে এগিয়ে চলল।

কিছু পথ আসার পরই জগন্নাথমন্দিরের চূড়া চোখে

সরমা দু’হাত জোড় করে কপালে ঠেকালেন।

এত সকালেও পুরীর পথঘাট কিন্তু নির্জন নয়।

ভোরের আলো একটু একটু করে ফুটে উঠছে। পথের ধারে চা-দোকানগুলোতে স্থানীয় লোকজনদের ভিড় হচ্ছে। পুরী যে শুধু তীর্থক্ষেত্র বা ট্যুরিস্ট স্পট তা তো নয়, পূরী এখন মস্ত শহর। রাজধানী ভুবনেশ্বরের পাশেই মহাপ্রভুর পদরেণুধন্য এই নীলাচলে সমুদ্রের ডাকে সারা ভারতবর্ষই হাজির।

যেতে যেতে এক জায়গায় হঠাৎ এমনভাবে ব্রেক কষল রিকশাটা যে, বাবা-মায়ের কোল থেকে একেবারে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ল সব্যসাচী। পড়ামাত্রই রাস্তার খোয়ায় কপালের একটা পাশ কেটে গেল ছোট্ট করে। টপ টপ করে রক্ত ঝরতে লাগল ক্ষতস্থান দিয়ে।

ততক্ষণে হই হই করে অনেক লোকজন ছুটে এসেছে। তার পরে যা হয়। সব্যসাচীকে তুলে দাঁড় করিয়ে মারমুখি হয়ে রিকশাওয়ালাকে ধরে মারতে গেল সবাই।

স্নেহাংশুবাবু বললেন, না না। মারবেন না। ও বেচারার কী দোষ?

অ্যাকসিডেন্ট ইজ অ্যাকসিডেন্ট। হঠাৎ একটা ষাঁড় এসে পড়ায় ব্রেক কষতে গিয়ে উলটে গেছে রিকশাটা।

ঘটানাটা তাই। সব্যসাচী রুমাল দিয়ে ওর ক্ষতস্থানটা চেপে ধরল শক্ত করে। রিকশাওয়ালা নিজেই তখন কাঁচুমাচু মুখে পাশের একজনদের বাড়ি থেকে কয়েকটা গাঁদা গাছের পাতা এনে দু’হাতে কচলে সেটা ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিল। গাঁদাপাতার রস অ্যান্টিসেপটিক। এতে অল্পস্বল্প রক্তক্ষরণও বন্ধ হয়।

রিকশা আবার চলতে শুরু করল।

একটু পরেই সকল ব্যথা ভুলে আনন্দে উল্লসিত হয়ে উঠল সব্যসাচী, মা! ওই—ওই দেখো, সমুদ্র।

সত্যই তো! জগন্নাথ স্বামী, নয়নপথগামী। এই সমুদ্রই তো সাক্ষাৎ জগন্নাথ। আকাশ তখন বেশ ভালরকম ফর্সা হয়ে গেছে।

রিকশা স্বর্গদ্বারের পথ ধরে ভেঁপু বাজিয়ে এগিয়ে চলল। কত লোক—— কত লোক—এখন সমুদ্রতীরে।

সামুদ্রিক বাতাসে মনপ্রাণ যেন ভরে উঠল।

নীল সমুদ্র সাদা-ফেনার রাশি নিয়ে বালির বুকে

আছড়ে পড়ছে। পায়ের পাতা

ডুবিয়ে, হাঁটু ডুবিয়ে, এই শীতকালেও সমুদ্রের স্বাদ নিচ্ছে কত লোক। সব্যসাচী বলল, সত্যি, আর যেন তর সইছে না। আমার মনে হচ্ছে এখুনি ছুটে যাই সমুদ্রের কাছে।

স্নেহাংশুবাবু বললেন, আর তো এসে গেছি। এবার সমুদ্র আর ঘর এই করতে হবে।

সব্যসাচী বলল, মন্দির! মন্দিরে যাবে না?

মন্দিরে যাব বইকী। তবে রোজ তো নয়। একদিন যাব পুজো দিতে।

সরমা বললেন, আমি অবশ্য রিকশায় বসেই বাবার মন্দির দর্শন করে নিয়েছি। সব্যসাচী বলল, কই! কখন? আমাকে দেখালে না?

দেখাব কী? সেই মুহূর্তেই যা হয়ে গেল।

স্নেহাংশুবাবু বললেন, কেন এমন হল বলো তো? এতদিন বাইরে বেরোচ্ছি, কই কখনও তো এমন হয়নি।

সরমা বললেন, ওইজন্যই দিনক্ষণ দেখে ঘর থেকে বেরোতে হয়।

স্নেহাংশুবাবু বললেন, আমি না হয় দিনক্ষণ দেখে বেরোই না। যে সব ট্রেনের যাত্রী দুর্ঘটনায় পড়ে তাদের কেউ-ই কি দিনক্ষণ দেখে বেরোয় না? আসলে যখন যেটা হবার সেটা হবেই।

সব্যসাচী বলল, আমি বলব কেন হল? আমি প্রথম আসছি তো, তাই জগবন্ধু আমার রক্তেই তাঁর পূজা নিলেন।

সরমা বললেন, থাম তুই। বাজে বকিস না। আসতে না আসতেই কী বিপদ। পরে না জানি কী হবে।

স্নেহাংশুবাবু বললেন, সক্কালবেলাতেই মেজাজটা বিগড়ে গেল।

সরমা বললেন, আমি বাপু এর পর আর ওকে সমুদ্রে নামতে দেব না।

রিকশাওয়ালা বলল, এবার একবার আপনাদের নামতে হবে বাবু। একটু খাড়াই আছে এখানটা। খানিক উঠে আবার চাপবেন। মা বসে থাকুন, আপনারা নামুন।

সরমা বললেন, হলিডে হোমটা কতদূরে?

এসে গেছি মা, আর একটুখানি। শ্মশান পার হয়ে হরিদাস মঠ, তারপরই ডানদিকে।

স্নেহাংশুবাবু আর সব্যসাচী রিকশা থেকে নামলে রিকশাটাকে টেনে খাড়াই পথে একটু ওঠানো হল। শুধু ওদের রিকশা নয়, সব রিকশারই যাত্রীদের নামতে হল এখানে।

হলিডে হোমের আরও যাত্রী এসেছেন। দুটো রিকশা বোঝাই। ছোট বড় মিলিয়ে মোট ছ’জন। কুচোকাচাগুলো আনন্দে পাখির মতো কল কল করছে সব। কী আনন্দ তাদের। তারাও নেমে হাঁটা শুরু করল। বাঁদিকে নীল সমুদ্রের অশান্ত ঢেউ তখন বালুচরে লুটিয়ে পড়ছে।

সব্যসাচী সমুদ্রের রূপ দেখে অধীর হয়ে উঠল।

জীবনে প্রথম শীতের সোনালি রোদে নীল সমুদ্রের হাতছানি যে পেয়েছে তার মনের অবস্থা যে কী কাউকে কি বোঝানো যায়? ওর মনের অবস্থাও তাই, কাউকেই বলা যাবে না।

ওরা আবার রিকশায় চেপে বসলে, রিকশা তির তির করে এগিয়ে চলল। একটু পরেই রিকশা যেখানে এসে থামল সেই জায়গাটাকে এক কথায় হলিডে হোমের পাড়া বলা চলে।

রিকশাওয়ালা বলল, এই আপনার হলিডে হোম। বাঁদিকের রাস্তাটা সোজা চলে গেছে সমুদ্রের দিকে।

স্নেহাংশুবাবু রিকশা থেকে নেমে রিকশার ভাড়া দিলেন। রিকশাওয়ালা বেশ চকচকে নোট পেয়ে খুশি হয়ে চলে গেল।

এখানে চারদিকেই তো হলিডে হোম। তাই দলে দলে রিকশা এসে থামতে লাগল তাদের নির্দিষ্ট জায়গাগুলোতে। ডানদিকে, বাঁদিকে, সামনে, পেছনে, সর্বত্র।

স্নেহাংশুবাবু ঠিকানা লেখা কাগজটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিলেন। রিকশাওয়ালা ঠিক জায়গাতেই নিয়ে এসেছে। এই তো বাড়ির গায়ে লেখা আছে কৃষ্ণানন্দধাম। গৌরবাটশাহী। ওপরে হলিডে হোমের বোর্ড।

হলিডে হোমের লাগোয়া একটা গুমটি ঘরের মতো দোকান। এই দোকানটা হল সাধন তালুকদারের।

সাধনবাবু ফটোগ্রাফার। সমুদ্রতীরে যাত্রীদের কুইক সার্ভিসে ফোটো তুলে দেন। আর কয়েকটি হলিডে হোম দেখাশোনা করেন।

এই হলিডে হোমেরও উনি একজন কেয়ার টেকার। দোতলার বারান্দায় একজন মাসি দাঁড়িয়েছিল।

স্নেহাংশুবাবুকে হাতের কাগজে সব কিছু মিলিয়ে নিতে দেখে বলল, ওপরে উঠে আসুন।

স্নেহাংশুবাবু সুটকেস হাতে সপরিবারে ওপরে উঠলেন। খুব একটা উন্নতমানের না হলেও হলিডে হোমের অবস্থান এবং পরিবেশটা খুবই ভাল লাগল স্নেহাংশুবাবুর।

তখন ভালভাবে সকাল হয়ে গেছে। রোদে ঝলমল করছে চারদিক। সামনের রাস্তায় তাই সূর্যোদয় দেখে ফিরে আসা লোকজনের ভিড়। দলে দলে লোক এমনভাবে আসছে যেন কোনও মিছিলে গিয়েছিল তারা।

ওরা ওপরে উঠতেই মাসি ঘর খুলে দিল। একবার শুধু জিজ্ঞেস করল, আপনারা কি ব্যানার্জিবাবুর লোক?

স্নেহাংশুবাবু বললেন, হ্যাঁ।

তা হলে এই ঘর।

সরমা বললেন, আপনি আমাদের চিনলেন কী করে?

ব্যানার্জিবাবুর চিঠি পেয়েছিলাম। তাতেই উনি লিখেছিলেন আজকের তারিখে আপনাদের আসবার কথা। স্বামী-স্ত্রী একটা বাচ্চা।

সব্যসাচী বলল, উনি লিখলে কী হবে? আমি কিন্তু আর বাচ্চা নই। ওর কথায় হেসে উঠল সবাই।

মালপত্তর নিয়ে ঘরে ঢুকতেই সাধনবাবু উঠে এলেন ওপরে। স্নেহাংশুবাবুর হাত থেকে কাগজটা নিয়ে বললেন, ব্যানার্জিবাবুর চিঠি পেয়েছি। আমার আসতে একটু দেরি হয়ে গেল। কিছু মনে করবেন না যেন। এই মাসিই আপনাদের সব কাজকর্ম করে দেবে, জল এনে দেবে। কোনওরকম কিছু অসুবিধে হলে আমাকে বলবেন।

কথা শেষ হতে-না-হতেই অন্য ঘরের যাত্রীরা এসে পড়ল। এনারা এক নম্বরের বড় ঘরটা নিয়েছেন।

সাধনবাবু ওঁদের নিয়ে ব্যস্ত হলেন এবার।

বাইরে তখন একদল যাত্রীর সঙ্গে একটি ট্যুরিস্ট বাসের ড্রাইভার-কন্ডাক্টারের তুমুল বচসা শুরু হয়ে গেছে।