আরেকবার টাল সামলে নিতেই শুনি
দশদিক কাঁপিয়ে
চিৎকার করছে সবাই, হাজার-হাজার
ঝাড়লণ্ঠন যাচ্ছে গুঁড়িয়ে। মনে-মনে গুনি
ক’ রাউন্ড হলো। ইতিমধ্যেই কয়েকবার
হাঁসের মতো গোত্তা মেরে উঠেছি হাঁপিয়ে।
আমার চোয়ালে মারাত্মক
আপারকাটের চিহ্ন, নাক বেয়ে রক্ত ঝরছে
ক্রমাগত। প্রতিপক্ষের প্রতিটি লড়াকু
জ্যাব ক্ষত তৈরি করছে
নিমেষে এবং বলছে, ‘তুমি যাও। হৈ-হল্লা, তীক্ষা সিটি
ভীষণ বিঁধছে আমাকে, ছিঁড়ে যেতে চাইছে মুখমন্ডলের ত্বক।
সান্ত্বনার কথা, এখনো মুখ
থুবড়ে পড়িনি অথবা
ছিটকে চলে যাইনি রিং-এর বাইরে। ভুলচুক
হচ্ছে মাঝে-মধ্যে, চোখজোড়া রক্তজবা
এবং আপাতত
আহত চিতাবাঘের মতো
মহুর লাফাচ্ছি দড়িঘেরা জায়গাটায়;
রাউন্ড-অন্তে বিরতি আমাকে বাঁচায়।
চারদিকে লোকের ভিড় আর তুমুল
জনগর্জন, তবু কেমন নিঃসঙ্গ লাগে নিজেকে।
আমি কি ভুল
করে বেছে নিয়েছি এমন খেলা-থেকে-থেকে
এই প্রশ্ন কাঠঠোকরা হয়ে ব্যবহার
করে আমাকে। এমন চারদিকের মুখগুলি
ঢেউয়ের চূড়ায় ফুল, আমার দু’চোখ অন্ধকার,
কানের ঘুলঘুলি
অজস্র ঝিঁ ঝিঁ পোকার দখলে।
বেল্টের নিচে আঘাত পেয়েও টিকে থাকতে হবে
এই রাউন্ডে কব্জির জোরে, অভিজ্ঞ কৌশলে।
বস্তুত আবার ওস্তাদের বৈভবে
আমার লড়াই শুরু করবার পালা।
সপ্তম রাউন্ডে আমি রিং-এর ভেতরে
কোনোমতে পা দুটো খাড়া রেখে, সাহস সঞ্চয় করে,
টাল সামলে, ঘোর অন্তর্জ্বালা
নিয়ে জয়ের সূর্যোদয়ের কাছাকাছি
আরেক রাউন্ডের প্রতীক্ষায় আছি!