নড়বড়ে ঘরে ওরা ক’জন জিরোয়া। কারো কারো
নিশ্বাসের শব্দ শোনা যায়,
কেউ হাই তোলে, কেউ বাঁশিটিকে পাশে রেখে রুখু
চুল টানে অভ্যসবশত; কারো হাতে
দোতারা নিদ্রিত, কেউ তার বীণা বুকে
চেপে চোখ রাখে দরজার দিকে, তার
ঠোঁট ছুঁয়ে যায় প্রজাপতি, মনে পড়ে,
ক্ষণিকের চুমো খাওয়া। কেমন শূন্যতা-ছাওয়া হৃদয় এখন।
দত্যি-দানো রাজ্য ছেড়ে পালিয়েছে ভেবে তারা
স্বস্তিতে জিরিয়ে নিচ্ছে, অথচ এখনও
রুক্ষ পথে স্লান মুখে হেঁটে যায় বিপন্ন সুন্দর।
যে ব্যাপক অমাবস্যা নেমেছিলো, তার
বুকে জাগেনিতো মুকুটের মতো পূর্ণিমার চাঁদ;
ছন্নছাড়া পথে ছোটে প্রেতায়িত ঘোড়ার কংকাল।
ঢুলুনির আঠা চোখে, মাঝে-মাঝে এ ওর গায়ের
ওপর গড়িয়ে পড়ে, মালগাড়ির সামগ্রী যেন।
হঠাৎ বাতিটা উস্কে দিয়ে একজন
বলে বিচলিত কণ্ঠস্বরে,
‘জাগো, জেগে থাকো;
ভাল করে পরস্পর মুখ দেখে নিই।
অনন্তর এ ওকে ঝাঁকুনি দিয়ে বলে,
‘আমাদের সহযাত্রী বেশি বাকি নেই। স্নায়ু রোগে
কাতর হলে কি চলে? অসমাপ্ত পর্যটন; কায়ক্লেশে
হেঁটে চলা, বেঁচে থাকবার সাধ আছে, আছে আরও কত কিছু,
জাগো, জেগে থাকো, বিশেষত কৃষ্ণপক্ষে
লাল কমলের সঙ্গে জেগে থাকা চাই।
কে লাল কমল? সকলের চোখে মুখে আকুলতা;
এ ওর মুখের দিকে তাকায়, প্রত্যেকে জিজ্ঞাসার
প্রতিকৃতি; মীমাংসায় পৌঁছার আগেই আসমান
পিচকারি মেরে পথে ছড়ায় আবীর।
৪।৪।৯১