শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা
কতকগুলো সদ্যযুবা আড্ডা দিত শ্যামবাজারের পাঁচমাথায়
বিকেল-সন্ধে ফুটপাথের রেলিং-এ ঠেস, এক সিগারেট দু-তিন জন
কখনও কফি হাউসে ঢুকে পকেট খালি, ফের রাস্তায় দু’পায়ে ভর
কীসের টান? শুধু কবিতা? কবিতা ছাড়াও বক্ষ্যমান জীবনস্রোত
কতকগুলো সদ্যযুবা আড্ডা দিত শ্যামবাজারের পাঁচমাথায়।
সেখানে ছিল চোখে-না-দেখা কালপুরুষ, পাশে দাঁড়িয়ে সব শুনত
মাঝে মাঝেই হেসে উঠত, তার আঙুলে খেলা করত ভবিষ্যৎ
যে চ্যাঁচাচ্ছে গলা ফাটিয়ে, সে-ই একদিন নামবে গভীর খনিগর্ভে
যে জানাচ্ছে প্রতি রাত্রে ঘুমের চেয়েও কবিতা লেখা বেশি জরুরি
সে পালাবে তিন সমুদ্র সাতাশ নদী পেরিয়ে এক ঘুমের দেশে
প্রেমে পাগল ছেলেটি বলত, শরীর ছাড়া সমস্ত গান-বাজনা মিথ্যে
সে কি জানবে রূপের সত্য, সে কি জানবে সুর হারানো দিনের দুঃখ?
যেখানে ছিল চোখে-না-দেখা কালপুরুষ, পাশে দাঁড়িয়ে সব শুনত।
শ্যামবাজারের মোড়ের আড্ডা কবে উধাও, কেউ যেন তা টের পেল না
সে সব নভোচারীর দল মেঠো রাস্তায় হারিয়ে গেল কঠিন রোদে
বিদায় শব্দ কেউ বলেনি, তবু বিদায়, ছন্দ ভুলের মতো বিদায়
কে যে কোথায় পৌঁছল বা পৌঁছল না, তা নিয়েও তো তর্ক অনেক
কালপুরুষের হাতের লেখা চিরকুটটি আজও হাওয়ায় ভেসে বেড়ায়
মাঝে মাঝেই কালপুরুষের গায়ে লাগে সেই যুবাদের স্বপ্নের আঁচ
যা দৃশ্যমান তাও তো মিথ্যে হতেই পারে, স্বপ্ন কখনও মিথ্যে হয় না।