এই কবিতার খাতা ছাড়া আর কার কাছে এমন অঝোরে
অশ্রুপাত করা যায়
কার কাছে প্রাণখুলে লেখা যায় চিঠি,
বলা যায় সব দুঃখ, পাপ, অধঃপতনের কথা
আর কার বুকে আঁকা যায় রবীন্দ্রনাথের মতো
অসংলগ্ন, বিপর্যস্ত ছবি!
একমাত্র কবিতার খাতা ছাড়া কোথায় লুকানো যায় মুখ
আর কোন নীলিমায় এমন স্বচ্ছন্দ ওড়া যায়
কোন স্বচ্ছতোয়া নদীজলে ধোয়া যায় সমস্ত কালিমা
বুক ভরে আর কোন উদার প্রান্তরে নেয়া যায় বিশুদ্ধ বাতাস!
শুধু এই কবিতার কাতা বিরহী যক্ষের মতো সযত্নে
আগলে রাখে স্মৃতি
বহু নিদ্রাহীন রাত্রির দুঃস্বপ্ন, অনন্ত দুঃখের দাহ
আর কতো নীরব নিবিড় অশ্রু বর্ষার মেঘের মতো অবিরাম ঝরে
একমাত্র এই কবিতার খাতা আপাদমস্তক ব্যর্থ মানুষের
চাষযোগ্য একখণ্ড জমি।
এ তার সবচে’ বিশ্বস্ত গৃহ, অন্তরঙ্গ নারী
এই কবিতার খাতা তার একমাত্র নিজস্ব আকাশ,
কেবল নিজের নদী, কেবল নিজের নারী, নিজের সংসার
এই কবিতার খাতা রক্তমাংস স্বপ্নময় শুদ্ধ ভালোবাসা।
এখানেই শুধু অশ্রু সোনালি ডানার চিল হয়ে যায়
দুঃখ হয়ে যায় মেঘ, স্বপ্ন হয়ে যায় শেশবের ঘুড়ি,
নিঃসঙ্গতা হয়ে ওঠে মনোরম হার্দ্য বেলাভূমি
উপেক্ষার ধূলি হয়ে ওঠে মুহূর্তে রঙিন স্নিগ্ধ ফুল।
এই কবিতার খাতা শুধু সহ্য করে অবৈধ মৈথুন
সহ্য করে ব্রভিচার, পরকীয়া প্রেমের সান্নিধ্য,
এই কবিতার খাতা নিমজ্জমানের একমাত্র ভেলা
শুধু তার কাছে ফেলা যায় দুচোখের জল, বলা যায় হৃদয়ের কথা।