১ ফীষ্ট সেই প্রদেশে এলেন, এর তিনদিন পর তিনি কৈসরিয়া থেকে জেরুশালেমে গেলেন।
২ সেখানে প্রধান যাজকরা ও ইহুদী সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে পৌলের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ জানাল।
৩ ফীষ্টের কাছে তারা এই আবেদন জানাল য়েন তিনি পৌলকে জেরুশালেমে পাঠাবার ব্যবস্থা করেন। তারা এই অনুগ্রহ দেখানোর অনুরোধ করেছিল কারণ তারা পথেই পৌলকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল।
৪ কিন্তু ফীষ্ট বললেন, ‘না, পৌল কৈসরিয়ায় বন্দী হয়ে আছে এবং আমি শিগ্গির কৈসরিয়ায় যাব।
৫ তাই তোমাদের মধ্যে যাঁরা ক্ষমতায় আছে, তারা আমার সঙ্গে সেখানে চলুন। এই লোকটি যদি কিছু ভুল করে থাকে তবে তা সেখানেই পেশ করুক।’
৬ ফীষ্ট জেরুশালেমে প্রায় আট দশদিন থাকার পর কৈসরিয়ায় চলে গেলেন। পরের দিন তিনি বিচারালয়ে নিজের আসনে বসে পৌলকে সেখানে হাজির করতে হুকুম করলেন।
৭ পৌল সেখানে এলে জেরুশালেম থেকে য়েসব ইহুদীরা এসেছিল তারা চারপাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এমন সব জঘন্য অপরাধের কথা বলতে লাগল, যার কোন প্রমাণ তারা নিজেরাই দিতে পারল না।
৮ পৌল আত্মপক্ষ সমর্থন করে বললেন, ‘আমি ইহুদীদের বিধি-ব্যবস্থা বা মন্দির কিংবা কৈসরের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ করি নি।’
৯ কিন্তু ইহুদীদের কাছে সুনাম পাবার আশায় খ্রীষ্ট পৌলকে বললেন, ‘তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে সেখানে আমার সামনে এসব বিষয়ে তোমার বিচার হয় তা চাও?’
১০ পৌল বললেন, ‘আমি কৈসরের বিচারালয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এখানেই আমার বিচার হওয়া উচিত। আমি ইহুদীদের বিরুদ্ধে কিছুই করি নি, একথা আপনি ভালোভাবেই জানেন।
১১ আমি যদি কোন অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হই ও মৃত্যুদণ্ড পাবার য়োগ্য হই, তবে আমি মৃত্যু থেকে রক্ষা পাবার জন্য বলব না। কিন্তু এরা আমার বিরুদ্ধে য়েসব অভিযোগ করছে, এসব যদি সত্য না হয় তবে এদের হাতে কেউ আমাকে তুলে দিতে পারবে না, কারণ আমি কৈসরের কাছে আপীল করছি!’
১২ তখন খ্রীষ্ট তাঁর পরামর্শদাতাদের সঙ্গে কথা বললেন, পরে ফীষ্ট পৌলকে বললেন, ‘তুমি কৈসরের কাছে আপীল করেছ, তোমাকে কৈসরের কাছে পাঠানো হবে।’
১৩ এর কিছু দিন পর রাজা আগ্রিপ্প ও বর্ণীকী কৈসরিয়ায় এসে খ্রীষ্টের সঙ্গে দেখা করলেন।
১৪ তাঁরা সেখানে বেশ কিছু দিন থাকলেন। রাজার কাছে ফীষ্ট পৌলের বিষয় এইভাবে বললেন, ‘ফীলিক্স কোন একজন লোককে এখানে বন্দী করে রেখেছেন।
১৫ আমি যখন জেরুশালেমে ছিলাম, সেই সময় ইহুদীদের প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তার বিরুদ্ধে আবেদন করে বিচার ও শাস্তি চেয়েছিল।
১৬ আমি তাদের বলেছিলাম য়ে, ‘যার নামে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, সে যতক্ষণ পর্যন্ত না অভিযোগকারীদের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পাচ্ছে, ততক্ষণ কোন লোককে তাদের হাতে তুলে দেওয়া রোমাণদের নিয়ম নয়।
১৭ আর তারা আমার সঙ্গে এখানে এলে, আমি আর দেরী না করে, পরদিনই সেই বন্দীকে বিচারের জন্য আমার বিচারালয়ে আনাই।
১৮ যখন তারা দাঁড়িয়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করতে গেল তখন তাঁর বিরুদ্ধে য়ে রকম দোষের কথা আমি অনুমান করেছিলাম, তার অভিযোগকারীরা সেই রকম কোন দোষই দেখাতে পারল না।
১৯ তার সাথে তাদের ধর্ম সম্বন্ধে এবং যীশু নামে এক ব্যক্তিযিনি মারা গিয়েছিলেন কিন্তু যাকে পৌল জীবিত বলে প্রচার করত সে সম্বন্ধে কিছু মতপার্থক্য ছিল।
২০ আমি বুঝে উঠতে পারলাম না য়ে এই ধরণের প্রশ্নগুলির উত্তর কিভাবে অনুসন্ধান করা হবে, তাই তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তুমি কি জেরুশালেমে গিয়ে সেখানে এই বিষয়ের বিচার হোক তাই চাও?’
২১ কিন্তু পৌল কৈসরের কাছে বিচার চেয়ে কারাগারে থাকার জন্য আপীল করায়, যতদিন না আমি তাকে কৈসরের কাছে পাঠাতে পারছি ততদিন কারাগারে রাখার নির্দেশ দিয়েছি।’
২২ আগ্রিপ্প বললেন, ‘হ্যাঁ, আমিও নিজে তার কথা শুনতে চেয়েছিলাম।’ফীষ্ট বললেন, ‘বেশ, কালই শুনবেন।’
২৩ পরদিন রাজা আগ্রিপ্প ও বর্নীকী খুব জাঁকজমকের সাথে এসে সভা ঘরে ঢুকলেন, তাঁদের সঙ্গে সেনাপতিরা ও শহরের গন্যমান্য লোকেরাও ছিলেন। ফীষ্টের হুকুমে পৌলকে সেখানে নিয়ে আসা হল।
২৪ তখন ফীষ্ট বললেন, ‘হে রাজা আগ্রিপ্প ও আমাদের সঙ্গে যাঁরা উপস্থিত আছেন তারা এই লোককে দেখছেন, যার বিরুদ্ধে এখানকার ও জেরুশালেমের সমস্ত ইহুদী সমাজ আমার কাছে চিত্কার করছে য়ে এই লোকের আর বেঁচে থাকা উচিত্ নয়।
২৫ কিন্তু এর মৃত্যুদণ্ডের য়োগ্য কোন অপরাধই আমি পাই নি। এ যখন নিজে সম্রাটের কাছে আপীল করেছে, তখন আমি সেখানে একে পাঠাব বলে স্থির করেছি।
২৬ কিন্তু সম্রাটের কাছে এর বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কি বলব তা জানি না। সেইজন্য আমি আপনাদের সামনে, বিশেষ করে রাজা আগ্রিপ্পর সামনে একে হাজির করেছি। য়েন একে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর আমি কিছু পাই য়ে সম্বন্ধে লিখতে পারি।
২৭ কারণ বন্দীকে পাঠাবার সময় তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ না দেওয়া আমি যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি না।’