ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

শিষ্যচরিত ০৩

১ একদিন পিতর ও য়োহন মন্দিরে গেলেন, তখন বেলা প্রায় তিনটে। এই সময়েই মন্দিরে রোজ প্রার্থনা হত।
২ যখন তাঁরা মন্দির প্রাঙ্গনে যাচ্ছিলেন, সেখানে একটা লোককে দেখা গেল। সে জন্ম থেকেই খোঁড়া, চলতে পারত না। তার বন্ধুরা প্রতিদিন তাকে মন্দির চত্বরে বয়ে নিয়ে আসত আর মন্দিরের ‘সুন্দর’ নামে য়ে ফটক আছে সেখানে নিয়ে গিয়ে তাকে বসিয়ে রাখত। যাঁরা মন্দিরে ঢুকত, সে তাদের কাছে কিছু অর্থ ভিক্ষা চাইত।
৩ সেদিন এই লোকটা পিতর ও য়োহনকে মন্দিরে ঢুকতে দেখে তাদের কাছ থেকে ভিক্ষা চাইতে লাগল।
৪ পিতর ও য়োহন সেই খোঁড়া লোকটির দিকে একদৃষ্টে চেয়ে বললেন, ‘আমাদের দিকে তাকাও!’
৫ সেই লোকটা তখন কিছু অর্থ পাবার আশায় তাঁদের দিকে তাকালো।
৬ কিন্তু পিতর তাকে বললেন, ‘আমার কাছে সোনা বা রূপো নেই, আমার কাছে যা আছে আমি তোমাকে তাই দিচ্ছি। নাসরতীয় যীশুর নামে তুমি উঠে দাঁড়াও ও হেঁটে বেড়াও।’
৭ এই বলে পিতর তার ডান হাত ধরে তাকে তুললেন, সঙ্গে সঙ্গে সে তার পায়ে ও গোড়ালিতে বল পেল,
৮ আর লাফিয়ে উঠে দাঁড়াল ও চলতে লাগল। তারপর সে তাদের সঙ্গে মন্দিরের মধ্যে ঢুকে সেখানে হেঁটে লাফিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল।
৯ লোকেরা দেখল সেই লোকটি হাঁটছে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করছে। তারা চিনতে পারল মন্দিরের ‘সুন্দর’ নামে ফটকের সামনে বসে ভিক্ষা করত য়ে লোক, সেই লোকই হেঁটে বেড়াচ্ছে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করছে। ঐ লোকটির জীবনে যা ঘটেছে তা দেখে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল, তারা বুঝে উঠতে পারল না এমন বিস্ময়কর ব্যাপার কি করে ঘটল।
১০
১১ লোকটি পিতর ও য়োহনকে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল; তাই সকলেই এই লোকটির সুস্থতা দেখে আশ্চর্য হয়ে শলোমনের বারান্দায় পিতর ও য়োহনের কাছে দৌড়ে এল।
১২ এই দেখে পিতর জনতার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘হে আমার ইহুদী ভাইয়েরা, আপনারা এতে আশ্চর্য হচ্ছেন কেন? আপনারা আমাদের দিকে এমনভাবে দেখছেন, য়েন আমরা নিজেদের ক্ষমতার গুণে একে চলবার শক্তি দিয়েছি। আপনারা কি মনে করেন য়ে আমরা খুব ধার্মিক, তাই এই কাজ করতে পেরেছি?
১৩ না! ঈশ্বরই একাজ করেছেন। তিনি অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, তিনিই তাঁর দাস যীশুকে মহিমান্বিত করেছেন। এই যীশুকেই আপনারা মৃত্যুদণ্ডের জন্য শত্রুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সেদিন পীলাত যখন তাঁকে ছেড়ে দেবেন বলে মনস্থ করেছিলেন, তখন আপনারা তাঁকে অগ্রাহ্য করেছিলেন। আপনারা বলেছিলেন, যীশুকে আপনারা চান না।
১৪ আপনারা সেই পবিত্র ও নির্দোষ ব্যক্তিকে অগ্রাহ্য করে তাঁর বদলে একজন খুনীকে আপনাদের জন্য ছেড়ে দিতে বলেছিলেন।
১৫ যিনি জীবনদাতা, আপনারা তাঁকে হত্যা করেছিলেন; কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত করেছেন। আমরা এসবের সাক্ষী।
১৬ এই যীশুর পরাক্রমেই এই খোঁড়াটি সুস্থতা লাভ করেছে। এসব ঘটেছে কারণ আমরা যীশুর ক্ষমতায় বিশ্বাস করেছি। আপনারা এই লোকটিকে দেখেছেন ও তাকে চেনেন। যীশুর উপর নির্ভর করায় সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে গেছে; নিজ চক্ষে আপনারা তা দেখেছেন।’
১৭ ‘এখন আমার ভাইয়েরা, আমি জানি য়ে অজ্ঞতা বশতঃই আপনারা এমন কাজ করেছিলেন, আর আপনাদের নেতারাও তাই করেছিলেন।
১৮ কিন্তু ভাববাদীদের মাধ্যমে ঈশ্বর তাঁর খ্রীষ্টের দুঃখভোগের কথা যা জানিয়েছেন, সে সবই তিনি এইভাবে পূর্ণ করেছেন।
১৯ তাই আপনারা মন-ফিরান এবং ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসুন, য়েন আপনাদের পাপ মুছে দেওযা হয়।
২০ এইভাবে য়েন প্রভুর কাছ থেকে আত্মিক বিশ্রামের সময় আসে; আর তিনি য়েন আপনাদের জন্য আগেই য়ে খ্রীষ্টকে মনোনীত করেছেন সেই যীশুকে পাঠান।
২১ যতক্ষণ পর্যন্ত না সব কিছু পুনঃস্থাপন হয় যা বহুপূর্বে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের মুখ দিয়ে বলেছেন, ততক্ষণ খ্রীষ্টকে অবশ্যই স্বর্গে থাকতে হবে।
২২ কারণ মোশি বলেছেন, ‘প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের জন্য তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকে আমার মত এক ভাববাদীকে উত্‌পন্ন করবেন। তিনি তোমাদের যা যা বলবেন, তোমরা তাঁর সকল কথা শুনবে।
২৩ য়ে কেউ তাঁর কথা না শুনবে, সে লোকদের মধ্য থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হবে।’
২৪ হ্যাঁ, সমস্ত ভাববাদী এমনকি শমূয়েল ও তার পরে য়ে সকল ভাববাদী এসেছেন তাঁরা সকলে এই দিনের কথা বলে গেছেন।
২৫ আপনারা তো ভাববাদীদের বংশধর, আপনারা ঈশ্বরের সেই চুক্তির উত্তরাধিকারী, য়ে চুক্তি ঈশ্বর আপনাদের পিতৃপুরুষের সাথে করেছিলেন। তিনি তো অব্রাহামকে বলেছিলেন, ‘তোমার বংশ দ্বারা পৃথিবীর সকল জাতিই আশীর্বাদ লাভ করবে।’
২৬ ঈশ্বর তাঁর দাসকে পুনরুত্থিত করে প্রথমে তাঁকে আপনাদের কাছেই পাঠাবেন, য়েন আপনাদের প্রত্যেককে মন্দ থেকে ফিরিয়ে এনে আশীর্বাদ করতে পারেন।
২৭
২৮
২৯
৩০
৩১