শিল্পের নিয়মে
পুকুরে তেজি শরীর নিয়ে ড়ুব দিচ্ছে একটা পানকৌড়ি
তিনটে হাঁস আড়ষ্ট হয়ে জল ছেড়ে উঠে গিয়ে
বসে রইল কদম গাছের তলায়
ওরা কি পানকৌড়িটিকে ভয় পায়?
এই বহমান জীবনের যে-কোনও একটা টুকরোই হয়ে
উঠতে পারে কবিতা
দোতলার জানলা দিয়ে আমি দেখছি পানকৌড়িটার
চোরা ড়ুব সাঁতার
ওকে নিয়ে একটা কবিতা লেখা যায় না?
কাগজ কলম নিয়ে বসতেই প্রথমে এই লাইনটা আসে:
‘যেন একটা উলকা ফুল, ঝুপ শব্দে পড়ল এসে জলে
রাজকন্যার মতন এক মাছরাঙা—’
আমি কলম থামাই, পানকৌড়িটা মাছরাঙা হয়ে গেল
কী করে?
আমি তো মাছরাঙা দেখছি না, তবু কবিতায় সেই পাখিটা
এসে গেল, সে কি নানা রঙে সুন্দর বলে?
কিংবা নিছক বাস্তব নিয়ে কবিতা হয় না, শিল্পের নিজস্ব
নিয়মে দৃশ্য বদলে যায়?
অথবা পানকৌড়িটা বঞ্চিত হল তার কালো রঙের জন্য?
আমরা কালো দেশের মানুষ, তবু আমরা বর্ণবিদ্বেষী
আমার গায়ের রঙও ঝিরকুট্টি কালো, নিজের হাতখানার দিকে
চেয়ে আমার হাসি পেয়ে গেল
আমাকে নিয়েও কেউ কোনওদিন লিখবে না প্রেমের কবিতা।