শহুরে বাগানে রাঙা প্রত্যুষে
রূপসী কুড়ায় শিউলী ফুল।
নুয়ে-পড়া তাকে দেখেছি তো ঠিক?
নাকি এ আমার চোখের ভুল?
গত রাত্রির স্বপ্নের ঢেউ
অবয়বে তার এখনো বয়।
তন্বী বুকের যুগল চূড়ায়
গোলাপ-জাগানো সূর্যোদয়।
এত ভোরে এই নির্জনে তার
চুপিসারে আসা হয়নি ঠিক;
মনে মনে বলি, তাকে ঘিরে থাক
সকল সময় মাঙ্গলিক।
গ্রীবা জুড়ে তার অতিশয় সাদা
কুয়াশার মতো রয়েছে কী-যে।
নাভিমূলে লাগে শিশিরের ছোঁয়া
পায়ের পাতাও উঠেছে ভিজে।
চুলে ভিড় করে শত প্রজাপতি,
কিটদেশে দোলে হাওয়ার মালা।
গোলাপি শিখার মতো যৌবন
হৃদয়ে ছড়ায় চৈত্রজ্বালা।
হঠাৎ একটি কালো ঘোড়া এসে
পিঠে নিয়ে ওকে মিলায় মেঘে।
ক্ষুরের শব্দ প্রতিধ্বনির
মতো চেতনায় রইল জেগে।
খোঁপা খসে যায় বেগানা রাতের
নিঝুম তৃতীয় প্রহর শেষে,
স্তন থেকে তার ডাগর গোলাপ
উড়ে যায় কোন্ নিরুদ্দেশে।
দূর থেকে দেখি রাঙা প্রত্যুষে
শিউলি গাছের অশ্রুপাত।
হাওয়ার দুয়ারে এক যেন নিয়ত
অদৃশ্য হাতে করে আঘাত।
ধু-ধু শূন্যতা গোঙায় কেবলি,
চারদিকে নেই কোথাও কায়া।
শিউলী তলায় ছায়ার মতন
হাতে কেউ শুধু কুড়ায় ছায়া।
সকাল-সন্ধ্যা আবার ব্যাকুল
চোখ খোঁজে তাকে দিগ্ধিদিক।
মনে মনে বলি, তার সত্তায়
নিয়ত ফুটুক মাঙ্গলিক।