লোকে তার কথা বলে

লোকে তার কথা বলাবলি করে,
গ্রামে ও শহরে।

শোনা যায়, লোকালয়ে থেকে বহুদূরে নদীতীরে
এবং পাহাড়ে বন-বনান্তরে ঘুরে ঘুরে সে এসেছে ফিরে
আপন নিবাসে। ভেবেছিল নির্জনতা
শান্তি দেবে তাকে, লতা-
গুল্ম, নদী, পাখি, পাহাড়ের চূড়া তার সত্তা থেকে
ফেলবে গ্লানির কালি মুছে, দেবে ঢেকে
খানাখন্দ আহত মনের। মানুষের আচরণ, বলা যায়,
বড় বেশি ক্লান্ত করেছিল তাকে, তাই অসহায়
ব্যক্তির ধরনে
করেছে সে পর্যটন জনহীন মাঠে আর বনে।

আখেরে ভেঙেছে তার ভুল।
এবং সবাই দ্যাখে সে এখন লোকালয়ে ফুল
তোলে, কেনাকাটা করে দোকানে এবং ঝকঝকে
সেলুনের ছাঁটায় চুল, রকে
আড্ডায় শামিল হয়, বলে
নানা কথা বস্তুত সেসব কথা সঙ্গীদের কানের বদলে
মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। কারো কারো হাত
অকস্মাৎ
হয়ে ওঠে অতিশয় ঝোড়ো দাঙ্গাবাজ।
ফলত সে আজ
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে, হয় না বিমুখ
তবু মানুষের প্রতি। ভাবে ভুলচুক
এই মর্ত্যবাসীদেরই হয়
আর ব্যান্ডেজের ঘেরাটোপ থেকে তার চক্ষুদ্বয়
স্বপ্নের মতোই জেগে থাকে, জ্বলজ্বলে। মাঝে-মাঝে গল্পচ্ছলে
শহরে ও গ্রামে লোকে তার কথা বলে।