ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

রোমীয় ১১

১ তাহলে আমি জিজ্ঞাসা করি, ‘ঈশ্বর কি তাঁর লোকদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন?’ নিশ্চয়ই না, কারণ আমিও অব্রাহামের বংশধর, বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন ইস্রায়েলী।
২ পূর্বেই ঈশ্বর যাদের তাঁর নিজের লোক বলে মনোনীত করেছিলেন তাদের তিনি দূরে সরিয়ে দেন নি। শাস্ত্রে এলিয় সম্বন্ধে কি বলে তোমরা কি জান না? এলিয় যখন ইস্রায়েলীদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন,
৩ তখন তিনি বললেন, ‘প্রভু তারা তোমার ভাববাদীদের হত্যা করেছে, তোমার সমস্ত যজ্ঞবেদী ধ্বংস করেছে। আমিই একমাত্র ভাববাদী এখনও জীবিত আছি আর লোকরা আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করছে।’
৪ কিন্তু ঈশ্বর তখন এলিয়কে কি উত্তর দিয়েছিলেন? ঈশ্বর বললেন, ‘এখনও আমার সাত হাজার লোককে বাঁচিয়ে রেখেছি, যাঁরা আমার উপাসনা করে। এই সাত হাজার লোক বালের সামনে জানুপাত করে নি।’
৫ ঠিক সেই ভাবেই এখনও কিছু লোক আছে, ঈশ্বর যাদেরকে নিজ অনুগ্রহে মনোনীত করেছেন।
৬ ঈশ্বর যদি তাঁর লোকদের অনুগ্রহে মনোনীত করেছেন, তবে তাদের কৃতকর্মের ফলে তারা ঈশ্বরের লোক বলে গন্য হয় নি, কারণ তাই যদি হত তবে ঈশ্বরের অনুগ্রহ আর অনুগ্রহ হত না।
৭ তবে ব্যাপারটি দাঁড়াল এই: ইস্রায়েলীয়রা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হতে চাইলেও সফলকাম হয় নি। কিন্তু ঈশ্বর যাদের মনোনীত করলেন, তারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হল। বাকি ইস্রায়েলীয়রা তাদের অন্তঃকরণ কঠোর করে তুলল ও ঈশ্বরের কথা অমান্য করল।
৮ শাস্ত্রে তাই লেখা আছে: ‘ঈশ্বর তাদের এক জড়তার আত্মা দিয়েছেন।’যিশাইয় ২৯:১০‘ঈশ্বর তাদের চক্ষু রুদ্ধ করেছেন, তাই তারা চোখে সত্য দেখতে পায় না। ঈশ্বর তাদের কান বন্ধ করে দিয়েছেন, তাই তারা কানে সত্য শুনতে পায় না, এ কথা আজও সত্যি।’দ্বিতীয় বিবরণ ২৯:৪
৯ দাযূদ এ সম্বন্ধে বলেছেন:‘তাদের ভোজ হোক ফাঁদের মতো, জালের মতো যা তাদের ধরে। তাদের পতন হোক্ ও তারা দণ্ড ভোগ করুক্।
১০ তাদের চোখ রুদ্ধ হয়ে যাক্ যাতে তারা দেখতে না পায় আর তারা কষ্টের ভারে সর্বদা নুয়ে থাকুক।’গীতসংহিতা ৬৯:২২-২৩
১১ আমি বলি ইহুদীরা হোঁচট খেয়েছিল। সেই হোঁচট খেয়ে তারা কি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল? না। বরং তাদের ভুলের জন্যই অইহুদীরা পরিত্রাণ পেয়েছে। এটা ইহুদীদের ঈর্ষাতুর করে তোলার জন্য ঘটেছিল।
১২ ইহুদীদের সেই ভুল, জগতের জন্য মহা আশীর্বাদ নিয়ে এসেছে। ইহুদীরা যা হারাল তাদের সেই ক্ষতি অইহুদীদের সমৃদ্ধ করল। তবে একথা নিশ্চিত য়ে পর্য়াপ্ত সংখ্য়ক ইহুদীরা যদি ঈশ্বরের দিকে মন দেয় তবে জগত কত না আশীর্বাদ পূর্ণ হবে।
১৩ এখন আমি অইহুদীদের বলছি, আমি অইহুদীদের জন্য একজন প্রেরিত, আর আমি এই কাজ সাধ্যমত করব।
১৪ আমি আশা রাখি য়ে আমার স্বজাতীয় ইহুদীদের এতে অন্তর্জ্বালা হবে আর হয়তো সেইভাবে কিছু লোককে আমি সাহায্য করতে পারব, য়েন তারা উদ্ধার পায়।
১৫ ঈশ্বর ইহুদীদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে জগতের অন্য লোকদের মিত্র করে নিলেন। তাই ঈশ্বর ইহুদীদেরআবার যখন গ্রহণ করবেন তার ফল কি হতে পারে? সে কি মৃতের জীবন পাওয়ার মত অবস্থা হবে না?
১৬ ময়দার তালের থেকে তৈরী প্রথম রুটি যদি ঈশ্বরকে নিবেদিত করা হয় তাহলে পুরো তালটাই পবিত্র; আর একটি গাছের শিকড় পবিত্র হলে তার সব শাখাই পবিত্র হবে।
১৭ সেই জলপাই গাছের কয়েকটি শাখা ভেঙ্গে গেলে সেই জায়গায় তোমার মত বুনো জলপাইয়ের এক শাখা, ঐ গাছে কলম করে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন তুমি আসল জলপাই গাছের বাকী শাখা প্রশাখার সঙ্গে শেকড়ের রস ও জীবনী শক্তি টেনে নিচ্ছ।
১৮ সুতরাং,তুমি সেই ভাঙ্গা শাখাগুলির চেয়ে নিজেকে উন্নত ভেবে গর্ব করো না; কিন্তু যদি কর তাহলে মনে রেখো য়ে শেকড়কে তুমি ধারণ করছ না বরং শেকড়ই তোমাকে ধারণ করে আছে।
১৯ তাহলে তুমি বলতেই পার য়ে তোমাকে কলম লাগাবার জন্যেই শাখাগুলো ভাঙা হয়েছিল।
২০ হ্যাঁ, ঠিক। ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল না বলেই তাদের ভাঙ্গা হয়েছিল, আর তোমার বিশ্বাস ছিল বলেই তুমি সেই গাছের অংশরূপে আছ, এর জন্য গর্ব না করে বরং ভয় কর।
২১ ঈশ্বর যখন সেই প্রকৃত শাখাগুলিই কেটে ফেলেছিলেন তখন বিশ্বাস না থাকলে তিনি তোমাকেও রেহাই দেবেন না।
২২ তাহলে ঈশ্বরের দয়ার ভাব ও কঠোরভাব দেখ। যাঁরা আর ঈশ্বরের অনুগামী হয় না তাদের তিনি দণ্ড দেন। কিন্তু ঈশ্বর তোমার প্রতি দয়াবান হন যদি তুমি তাঁর দয়ায় অবস্থান করতে থাক। যদি না থাক তাহলে তোমাকে সেই প্রকৃত গাছ থেকে কেটে ফেলা হবে;
২৩ আর ইহুদীরা যদি ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসে, তাঁকে বিশ্বাস করে তবে ঈশ্বর ইহুদীদের আবার গ্রহণ করবেন। তারা য়েখানে ছিল ঈশ্বর তাদের সেখানে আবার জুড়ে দেবেন।
২৪ বুনো জলপাই গাছের শাখা স্বাভাবিকভাবে উত্তম জলপাই গাছে লাগানো হয় না; কিন্তু তোমরা অইহুদীরা বুনো জলপাই গাছের শাখার মত হলেও তোমাদের সকলকে উত্তম জলপাই গাছের সঙ্গে যুক্ত করা হল। সুতরাং ইহুদীরা উত্তম জলপাই গাছের শাখা-প্রশাখা বলে তাদের ভেঙ্গে ফেলা হলেও তাদের নিজস্ব উত্তম গাছের সঙ্গে আবার কত সহজেই না যুক্ত করা যাবে।
২৫ ভাই ও বোনেরা, আমি চাই য়ে তোমরা নিগূঢ় সত্য বোঝ যাতে নিজের চোখে নিজেকে জ্ঞানী না মনে কর। এই হল সত্য য়ে ইস্রায়েলীয়দের কিছু অংশ শক্তগ্রীব হয়েছে। অইহুদীদের সংখ্যা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ইহুদীদের সেই মনোভাব বদলাবে না।
২৬ এইভাবে সমগ্র ইস্রায়েলের উদ্ধার হবে। শাস্ত্রে লেখা আছে:‘সিযোন থেকে ত্রাণকর্তা আসবেন। তিনি যাকোবের বংশ থেকে সব অধর্ম দূর করবেন।
২৭ আর তখন এই লোকদের সব পাপ হরণ করে আমি তাদের সঙ্গে আমার চুক্তি স্থাপন করব।’যিশাইয় ৫৯:২০-২১; ২৭:৯
২৮ সুসমাচার গ্রহণ করতে অস্বীকার করে ইহুদীরা ঈশ্বরের শত্রু হয়েছে। তোমরা যাঁরা অইহুদী তোমাদের সাহায্য করতেই এমন হয়েছে; কিন্তু বেছে নেবার দিক থেকে ইহুদীরা এখনও ঈশ্বরের মনোনীত লোক। তাদের পিতৃপুরুষদের কাছে ঈশ্বর য়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেই সুবাদে তিনি তাদের ভালবাসেন।
২৯ ঈশ্বর কাউকে আহ্বান জানিয়ে ও দান করে অনুশোচনা করেন না।
৩০ একসময় তোমরা ঈশ্বরের অবাধ্য ছিলে, কিন্তু এখন ইহুদীদের অবাধ্যতার জন্য তোমরা তাঁর করুণা পেয়েছ।
৩১ ঠিক তেমনই তোমরা করুণা পেয়েছ বলে ইহুদীরা ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছে য়েন ইহুদীরা ঈশ্বরের করুণা পেতে পারে।
৩২ ঈশ্বর তাদের সকলকেই অবাধ্যতায় বন্দী করে রেখেছেন যাতে তিনি সকলের প্রতি দয়া করতে পারেন।
৩৩ হ্যাঁ, ঈশ্বর তাঁর করুণায় কতো ধনবান, তাঁর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা কতো গভীর। তার বিচারের ব্যাখ্যা কেউ করতে পারে না। তাঁর পথ কেউ বুঝতে পারে না।
৩৪ শাস্ত্রে য়েমন বলে,‘প্রভুর মন কে জেনেছে? কেই বা তাঁর মন্ত্রণাদাতা হয়েছে?’যিশাইয় ৪০:১৩
৩৫ ‘আর কে-ই বা প্রথমে ঈশ্বরকে কিছু দান করেছে? এমন কে আছে যার কাছে ঈশ্বর ঋণী?’ইযোব ৪১:১১
৩৬ কারণ ঈশ্বরই সবকিছু নির্মাণ করেছেন; সবকিছু তাঁর মধ্য দিয়েই অস্তিত্বে আছে এবং তাঁর জন্যেই রয়েছে। চিরকাল ঈশ্বরের মহিমা অটুট থাকুক! আমেন।