১ বৈত্লেহমে এক জন ধনী বাস করত। তার নাম বোয়স। ইলীমেলক পরিবারের অন্তর্গত নয়মীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে বোয়স ছিল এক জন।
২ এক দিন রূত্ নয়মীকে বলল, “আমি ভাবছি, মাঠে মাঠে একটু ঘুরে বেড়াই। এমনি করেই হয়তো এক দিন এমন কাউকে পাব য়ে আমায় দয়া করবে, য়ে আমায় মাঠের পড়ে থাকা শস্যের দানা তুলে নিতে বলবে।”
৩ নয়মী বলল, “আচ্ছা বাছা, যাও।”রূত্ মাঠের দিকে চলে গেল। যারা সেখানে শস্য কাটছে তাদের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরল। ক্ষেতের পড়ে থাকা শস্যগুলো সে সংগ্রহ করল।ঘটনাএমে এরকম একটা মাঠের মালিক ছিল বোয়স। বোয়স ছিল ইলীমেলক পরিবারের এক জন।
৪ এক দিন বৈত্লেহম থেকে বোয়স তার জমিতে চলে এলো। চাষীদের সে আদর ভালবাসা জানিয়ে বলল, “প্রভু তোমাদের সহায় হোন!”চাষীরাও বলল, “প্রভু আপনার মঙ্গল করুন!”
৫ বোযসের একজন ভৃত্য চাষীদের কাজের তদারকি করছিল। রূতকে দেখতে পেয়ে বোয়স ভৃত্যকে জিজ্ঞাসা করল, “এ কাদের মেয়ে?”
৬ ভৃত্যটি বলল, “মেয়েটি একজন মোয়াবী। সে নয়মীর সঙ্গে মোয়াব থেকে এসেছে।”
৭ আজ খুব ভোরবেলা সে আমার কাছে আসে অনুমতি চাইতে যাতে চাষীদের পিছু পিছু ঘুরে মাঠ থেকে সে শস্য কুড়িয়ে নিতে পারে। সেই সকাল থেকে সে এই মাঠে রযেছে। ঐ তো ওখানে তার বাড়ী।”
৮ বোয়স তখন রূতকে বলল, “শোনো মেয়ে, তুমি এই ক্ষেতেই থেকে যাও এবং তোমার জন্য শস্য কুড়িযে নিও। অন্য কোথাও আর তোমাকে য়েতে হবে না। আমার ক্ষেতের দাসীদের সঙ্গে সঙ্গে তুমি ঘুরবে।
৯ কোন্ কোন্ জমিতে তারা যাচ্ছে দেখবে, তাদের সঙ্গে থাকবে। যুবকদের আমি সাবধান করে দিচ্ছি, তারা য়েন তোমায় বিরক্ত না করে। পিপাসা পেলে আমার লোকরা য়ে মগ ব্যবহার করে তুমিও তা ব্যবহার করতে পারো। বুঝলে?”
১০ রূত্ মাথা নীচু করে শ্রদ্ধা জানাল। সে বোয়সকে বলল, “আমার মতো এক জন সামান্য মেয়েকেও আপনি লক্ষ্য করেছেন, এতে আমি খুবই অবাক হয়ে গেছি! যদিও আমি একজন অপরিচিত কিন্তু তবুও আপনি আমার প্রতি কত সদয়।”
১১ বোয়স উত্তর দিল, “তোমার শাশুড়ি নয়মীকে তুমি কি রকম সেবা করেছ আমি সবই জানি। আমি জানি তোমার স্বামী মারা গেলেও তুমি তাকে কত সাহায্য করেছ। আর আমি এও জানি মাতাপিতা, নিজের দেশ সব কিছু ছেড়ে তুমি এখানে চলে এসেছ। এদেশের কাউকেই তুমি চেন না, তা সত্ত্বেও নয়মীর সঙ্গে তুমি এদেশে এসেছ।
১২ তোমার সত্ কাজের জন্য প্রভু তোমায় পুরস্কার দেবেন। তুমি যা কিছু করেছ তার জন্য প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর তোমাকে সম্পূর্ণ ভাবে পুরস্কৃত করবেন। তুমি সুরক্ষার জন্য তাঁর কাছে এসেছো, সুতরাং তিনি তোমাকে রক্ষা করবেন।”
১৩ রূত্ বলল, “আপনি আমাকে খুবই দয়া করেছেন। আমি তো এক জন দাসী মাত্র, তাও আপনার দাসীদের মধ্যে কারও সমান নই। তবুও আপনি কত দরদের কথা বলেছেন, আমায সান্ত্বনা দিয়েছেন।”
১৪ দুপুরের খাওয়ার সময় বোয়স রূতকে বলল, “এদিকে এসো! আমাদের রুটি থেকে তুমিও কয়েকটা খাও। সিরকায় তোমার রুটি ডুবিয়ে নাও।”রূত্ চাষীদের পাশে বসে গেল। বোয়স তাকে সেঁকা শস্য দিল। রূত্ পেট ভরে খেল। কিছু খাবার পড়ে রইলো।
১৫ খাবার পর রূত্ আবার কাজে মেতে উঠলো।বোয়স ভৃত্যদের বলল, “শস্যের গাদার পাশ থেকেও রূতকে দানা কুড়িয়ে নিতে দিও। ওকে বাধা দিও না।
১৬ কিছু দানা ভরা শীষ তার জন্যে ফেলে দিয়ে তার কাজটা বরং আরও সহজ করে দিও। হ্যাঁ তাকে শস্য কুড়োতে দিও, বাধা দিও না।”
১৭ সন্ধ্যে পর্য়ন্ত রূত্ মাঠে কাজকর্ম করত। কাজের পর ভুষি থেকে শস্যদানা বেছে আলাদা করে রাখত। সে প্রায় ১/২ বুশেল বার্লি পেত।
১৮ সে ঐ শস্যগুলি নিয়ে শহরে তার শাশুড়ীর কাছে য়েত। তাছাড়া তাকে পাতের বাড়তি খাবারটাবারও খেতে দিত।
১৯ শাশুড়ী তাকে জিজ্ঞাসা করল, “এই সব শস্য কোত্থেকে পেলে? তুমি কোথায় কাজ করো? তোমার প্রতি য়ে সদয় হয়েছিল তার কল্যাণ হোক।”তখন রূত্ কার কাছে কাজ করছে বলল। সে বলল, “যার কাছে কাজ করছি তার নাম বোয়স।”নয়মী পাত্রবধূকে বলল, “প্রভু তার মঙ্গল করুন। কি জীবিত, কি মৃত সকলের প্রতিই তাঁর দয়ার শেষ নেই।”
২০ তারপর সে রূতকে বলল, “বোয়স আমাদের আত্মীয়দের এক জন। বোয়স আমাদের রক্ষাকর্তা।”
২১ রূত্ বলল, “বোয়স আমাকে ফিরে আসতে বলেছে। বলেছে কাজ করে য়েতে। বোয়স বলেছে ফসল কাটার কাজ শেষ হওয়া অবধি আমি য়েন তার ভৃত্যদের সঙ্গে ভাল ভাবে কাজকর্ম করি।”
২২ নয়মী উত্তর দিল, “বোযসের ভৃত্য দাসীদের সঙ্গে কাজ করাটা তোমার পক্ষে ভাল। অন্য কোনো ক্ষেতে কাজ করলে হযতো কোনো ছেলে তোমার গায়ে হাত দিত।”
২৩ অতএব রূত্ বোয়সের দাসীদের বার্লি এবং গম কাটার সময় পর্য়ন্ত থেকে গেল। শাশুড়ীর সঙ্গে রূত্ থেকে গেল।