১ নবাটের পুত্র ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের ১৮ বছরের মাথায় অবিয়াম যিহূদার নতুন রাজা হলেন।
২ অবিয়াম জেরুশালেমে তিন বছর রাজত্ব করেন। তাঁর মা মাখা ছিলেন অবীশালোমের কন্যা।
৩ অবিয়ামও তাঁর পিতার মতো যাবতীয় পাপ করেছিলেন। তিনি মোটেই তাঁর পিতামহ দায়ূদের মতো প্রভুর একনিষ্ট ভক্ত ছিলেন না।
৪ প্রভু দায়ূদকে ভালবাসতেন বলে অবিয়ামকে জেরুশালেমে রাজত্ব করতে দিয়েছিলেন। প্রভু দায়ূদকে পুত্রলাভ করতে দিয়েছিলেন এবং তিনি দায়ূদের জন্য জেরুশালেমকে নিরাপদে রেখেছিলেন।
৫ একমাত্র হিত্তীয় ঊরিযর ঘটনা ছাড়া দায়ূদ জীবনের সব ক্ষেত্রেই কাযমনোবাক্যে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন।
৬ রহবিয়াম ও যারবিয়াম দুজনেই সব সময় পরস্পরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গিয়েছেন।
৭ অবিয়াম আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।অবিয়ামের রাজত্বের গোটা সময়টুকু কেটেছিল যারবিয়ামের সঙ্গে যুদ্ধ বিগ্রহ করে।
৮ অবিয়ামের মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর পুত্র আসা নতুন রাজা হলেন।
৯ ইস্রায়েলে যারবিয়ামের রাজত্বের ২০ বছরের মাথায় আসা যিহূদার রাজা হলেন।
১০ আসা জেরুশালেমে ৪১ বছর রাজত্ব করেছিলেন। অবীশালোমের কন্যা মাখা ছিলেন আসার ঠাকুরমা।
১১ আসা তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতো প্রভু নির্দেশিত সত্ পথে জীবনযাপন করেন।
১২ তাঁর রাজত্বের সময় য়ে সমস্ত ব্যক্তি অন্য মূর্ত্তির সেবার জন্য রতিক্রিযার্থে নিজেদের দেহ বিক্রয় করেছিল তাদের তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন। তিনি সেই দেশ থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের তৈরী সমস্ত মূর্ত্তিও সরিয়ে ফেলেছিলেন।
১৩ আসা তার ঠাকুরমা মাখাকেও রাণীর পদ থেকে অপসারণ করেন। কারণ মাখা বিধর্মী দেবী আশেরার ঐ বীভত্স মূর্ত্তিসমূহ নির্মাণ করিযে ছিলেন। এই মূর্ত্তিটিকে ভেঙে আসা কিদ্রোণ নদীর ধারে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
১৪ উচ্চ বেদীগুলিকে ধ্বংস না করলেও আসা আজীবন প্রভুর প্রতি অনুরক্ত ছিলেন।
১৫ সমস্ত সোনা, রূপো এবং প্রভুর জন্য দেওয়া অন্যান্য উপহারসামগ্রী য়েগুলি তাঁর পিতা দায়ূদের দ্বারা সংরক্ষিত ছিল এবং য়েগুলি লোকে দান করেছিল, আসা সেগুলি প্রভুর মন্দিরে রেখে দিয়েছিলেন।
১৬ যিহূদায় রাজত্ব কালে গোটা সময়টাই আসার কেটেছিল ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে যুদ্ধ করে।
১৭ বাশা যিহূদার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন কারণ কোনো লোককে আসার রাজত্ব থেকে বাইরে য়েতে দিতে বা সেখানে য়েতে দেওয়া বন্ধ করতে চেয়েছিলেন। একারণে তিনি রামা শহরটিকে খুব সুরক্ষিত ভাবে বানিয়ে ছিলেন।
১৮ আসা তাই প্রভুর মন্দিরের কোষাগার থেকে এবং রাজপ্রাসাদ থেকে সমস্ত সোনা ও রূপো বের করে ভৃত্যদের হাত দিয়ে সে সব হিষিযোণের পৌত্র টব্রিম্মোণের পুত্র অরামের রাজা বিন্হদদকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। দম্মেশক ছিল বিন্হদদের রাজ্যের রাজধানী।
১৯ আসা বিন্হদদকে বলে পাঠান, “আমার পিতা ও আপনার পিতার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এখন আমি আপনার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে চাই। তাই আমি আপনাকে এই সমস্ত সোনা-রূপো উপহারস্বরূপ পাঠালাম। অনুগ্রহ করে আপনি ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে আপনার সন্ধি ভঙ্গ করুন, যাতে সে আপনাদের নিজেদের মতো থাকতে দিয়ে তার নিজের দেশে ফিরে যায়।”
২০ বিন্হদদ আসার সঙ্গে চুক্তি করে তার সেনাবাহিনীকে ইযোন, দান, আবেল-বৈত্-মাখা, নপ্তালি ও গালীলী হ্রদের আশেপাশের ইস্রায়েলীয় শহরগুলোতে যুদ্ধ করতে পাঠালেন।
২১ এ খবর পেয়ে বাশা রামা শহর সুদৃঢ় করার কাজ বন্ধ করে তির্সাতে ফিরে এলেন।
২২ তখন রাজা আসা যিহূদার সমস্ত লোকদের সাহায্য প্রার্থনা করে নির্দেশ দিলে সকলে মিলে রামাতে গেল। তারপর সেখান থেকে রামা শহরটাকে শক্ত করে বানানোর জন্য বাশা য়ে সব পাথর ও কাঠ এনেছিল সেই সব বিন্যামীনের দেশ গেবা ও মিস্পাতে বয়ে আনা হলো। এরপর আসা এই দুটো শহরকে সুদৃঢ় করে তুললেন।
২৩ আসা সম্পর্কিত অন্যান্য যাবতীয় তথ্য় উনি য়ে সমস্ত কাজ করেছিলেন বা য়ে সব শহর বানিয়ে ছিলেন সে সবই ‘যিহূদার রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। য়েহেতু আসা বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁর পাযে একটা রোগ হয়।
২৪ আসার মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে দায়ূদ নগরীতে কবর দেওয়া হল। এরপর আসার পুত্র যিহোশাফট নতুন রাজা হলেন।
২৫ যিহূদায় আসার রাজত্বের দ্বিতীয় বছরের সময় যারবিয়ামের পুত্র নাদব ইস্রায়েলের রাজা হন। তিনি দু বছর রাজত্ব করেছিলেন।
২৬ নাদব তাঁর পিতা যারবিয়ামের মতোই যাবতীয় পাপ কর্মে লিপ্ত হলেন। যারবিয়াম রাজা থাকাকালীন তিনি ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়েছিলেন।
২৭ ইষাখর পরিবারগোষ্ঠীর অহিযের পুত্র বাশা, রাজা নাদবকে হত্যার একটি চক্রান্ত করেছিলেন। এসময় নাদব ও ইস্রায়েলের সবাই গিব্বথোন শহরের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। গিব্বথোন শহরটি পলেষ্টীয় অধিকৃত ছিল।
২৮ এই শহরেই বাশা নাদবকে হত্যা করেছিলেন। আসার যিহূদার রাজত্বের তৃতীয় বছরে এ ঘটনা ঘটে। এরপর বাশা ইস্রায়েলের নতুন রাজা হলেন।
২৯ ইস্রায়েলের রাজা হবার পর বাশা যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে একে একে হত্যা করলেন। প্রভু য়ে ভাবে সেই শীলোনীয অহিযের মাধ্যমে ভাববাণী করেছিলেন, ঠিক সে ভাবেই এই সমস্ত ঘটনা ঘটলো।
৩০ যারবিয়ামের পাপের ফলেই তার বংশের সবাইকে মরতে হলো। ইস্রায়েলের লোকদের পাপাচরণের কারণ হয়ে যারবিয়াম প্রভুকে খুবই ক্রুদ্ধ করে তুলেছিল।
৩১ নাদব আর যা কিছু করেছিলেন সে সব ‘ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।
৩২ বাশার ইস্রায়েলে রাজত্বের গোটা সময়টাই যিহূদার রাজা আসার সঙ্গে যুদ্ধ করে কেটেছিল।
৩৩ আসার যিহূদার রাজত্বের তৃতীয় বছরের মাথায় অহিযর পুত্র বাশা ইস্রায়েলের রাজা হলেন। বাশা তির্সাতে ২৪ বছর রাজত্ব করেছিলেন।
৩৪ কিন্তু বাশা তাঁর পিতা যারবিয়ামের মতোই পাপাচরণ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের এমনসব পাপাচরণের কারণ হয়েছিলেন যা প্রভুর মন:পুত ছিল না।