রহস্যময় দুর্গ – ৩

তিন

‘জানেন?’ অফিসার্স’ কোয়ার্টার থেকে সবাই বেরিয়ে এলে চেঁচিয়ে উঠল কিশোর। ‘গারফিল্ড বেঁচে আছে!’

রেজিনা আঁতকে উঠলেন।

‘ঠাট্টা করছ?’

‘এই ফোর্ট ইয়র্কে আমি তাকে নিজের চোখে দেখেছি-জলজ্যান্ত। থার্ড ডিগ্রি দিতেই গড়গড় করে একটা কু দিয়ে ফেলল। আর আমিও বুঝে গেলাম কাকে সন্দেহ করতে হবে।’

‘সাসপেক্ট? কে সে?’ ক্যাথরিনের প্রশ্ন।

‘এখন বলব না, লোকটা যদি নির্দোষ হয় তাহলে বেচারার সম্মানহানি হবে।’

কিশোরের মুখখানা খুঁটিয়ে নিরীখ করলেন রেজিনা।

‘একদম ঠিক বলেছ।’ পার্কিং লটের দিকে গড়িয়ে নিলেন হুইলচেয়ারটা। অন্যরা অনুসরণ করল, এবং শীঘ্রি ওরা দুর্গের উদ্দেশে ফিরে চলল।

কাসা লোমার টাওয়ারগুলো অপূর্ব দেখাল, ওরা যখন কাছাকাছি পৌঁছল।

‘কী অসাধারণ লাগছে!’ প্রশংসা ঝরল টিনার কণ্ঠে। ‘শয়তানরা হীরেগুলোর হদিস পেয়ে না থাকলে ওগুলো দুর্গের আটানব্বইটা রুমের কোন একটায় লুকানো রয়েছে। কোন্টায় কে জানে!’

ঘন কোঁকড়া চুল পেছনে ব্রাশ করলেন রেজিনা।

‘স্যর ডয়েল আমাকে একবার একটা ক্লু দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি তা থেকে কিছুই বের করতে পারিনি।’

‘সূত্র! প্লিজ, আমাদেরকে বলুন না!’ বায়না করল টিনা।

‘তিনি ঠিক এশব্দগুলো বলেছিলেন: ছবিগুলো পাঠানো হয়েছে এটা ঠিক সেই জায়গা, ওরা যখন সব তালগোল পাকিয়ে ফেলে।’

‘সত্যিই আজব,’ স্বীকার করল কিশোর।

.

দুর্গে ফিরে, কিশোর আর টিনা টম মামাকে বিলিয়ার্ড রুমে খুঁজে পেল। গারফিল্ডের কথা বলতেই, তিনিও লোকটির অদ্ভুত আচরণে অবাক হয়ে গেলেন। পুলিস যদিও গতকালের ঘটনাগুলোর তদন্ত করতে এখনও এসে পৌঁছয়নি, তারপরও সকালটা টম মামার ব্যস্ততা আর তিক্ততার মধ্যে কেটেছে।

‘কাজের লোকেরা জনের ব্যাপারে আপত্তি করছে, বলছে আগের খানসামা ফিরে না এলে সবাই চাকরি ছেড়ে দেবে।’

‘কিন্তু আগের খানসামা কোথায়?’ টিনা জানতে চাইল।

‘কেউ জানে না তার খবর। স্যর ডয়েল নিখোঁজ হওয়ার পরপরই চলে যায় সে, তারপর জন আসে তার বদলী হিসেবে। অন্যান্য কাজের লোকেরা বলছে, জন নাকি সব গুবলেট করে দিচ্ছে। লোকটা নাকি অযোগ্য।’

‘তাহলে ওকে বিদায় করে দিচ্ছ না কেন?’ টিনা জবাব চাইল।

অপ্রসন্ন দেখাল টম মামার মুখের চেহারা।

‘চেষ্টা করেছিলাম, মা, কিন্তু পারিনি। জনকে আমি চলে যাওয়ার কথা বলতেই লোকটা ভেঙে পড়ে। তাই মত পাল্টাতে বাধ্য হই আমি। কিন্তু সতর্ক করে দিয়েছি হয় সব ঠিকঠাকমত সামলাও আর নয়তো দূর হও।’

মুচকি হাসল টিনা।

‘ওর জন্যে বাঁচা-মরার প্রশ্ন।’

‘তা যা বলেছিস!’ মুখের চেহারা কঠোর করে তুলতে চাইলেন টম মামা।

‘মামা, আমরা দুর্গের টাওয়ারগুলো ঘুরে দেখতে পারি?’

মাথা ঝাঁকালেন টম মামা, মৃদু হাসলেন।

‘চল, জনকে বলি আমাদেরকে নিয়ে যেতে। এতে হয়তো একটু সহজ হবে ও।’

.

খানিক পরেই, এক অন্ধকারাচ্ছন্ন টাওয়ারের ভেতরে পাক খেয়ে উঠে যাওয়া সিঁড়ি ভাঙতে লাগল ওরা। কিশোর আশঙ্কা করছে, যে কোন মুহূর্তে বাদুড়ের আক্রমণ আসতে পারে, শেষমেশ মুক্ত হাওয়ায় বেরিয়ে আসতে পেরে হাঁফ ছাড়ল।

‘সাবধান,’ ওরা ছাদ ঘিরে রাখা পাথুরে র‍্যামপার্টের দিকে এগোতেই সাবধান করল জন। আত্মরক্ষার জন্য কেল্লার ওপরে সমতল উপরিভাগ নিয়ে ঢিবি বানানো হয়েছে। ‘বৃষ্টির পানিতে ছাদটা স্যাঁতসেঁতে হয়ে রয়েছে।’

‘বহুদূর পর্যন্ত দেখা যায় এখান থেকে,’ বলল টিনা, শহরের বিখ্যাত সিএন টাওয়ার আর লেক অন্টারিওর পাড় বরাবর দাঁড়িয়ে থাকা সুউচ্চ, ঝিকমিকে অট্টালিকাগুলোর দিকে চেয়ে। ‘দুর্গ বানানোর আদর্শ জায়গাই বটে এটা।’

‘স্প্যানিশে কাসা লোমার অর্থ ‘পাহাড়ের ওপর বাড়ি’।’

‘আর বাড়িও বটে একখান!’ মুগ্ধকণ্ঠে বলল টিনা।

টাওয়ারের ছাদের ওপাশে চলে গেল কিশোর আর টিনা। র‍্যামপার্টের ওপর দিয়ে ঝুঁকে, নিচের লাল টালি আর পাথুরে ইউনিকর্নগুলোর দিকে চাইল।

‘ওগুলো নিশ্চয়ই আস্তাবল,’ ফিসফিস করে বলে, দূরের এক দালানের দিকে তর্জনী দেখাল কিশোর। ‘ওখানে একটু তদন্ত করবে নাকি?’

‘তোমাকে গারফিল্ড যে কথাগুলো বলেছে সেজন্যে?’

‘হ্যাঁ। সে বলেছিল- ‘

আচমকা গগনবিদারী এক আর্তচিৎকার শোনা গেল। চরকির মতন ঘুরতেই, টম মামা আর জনকে র‍্যামপার্টের কিনারায় যুঝতে দেখল কিশোর। ভয়ঙ্কর একটি মুহূর্তের জন্য ওর মনে হলো জন বুঝি টম মামাকে ঠেলে ফেলে দিতে চাইছে। পরক্ষণে বুঝল খানসামা টম মামাকে ধরে রেখেছে, নইলে পড়ে যেতেন তিনি। কিশোর দৌড়ে গেল সাহায্য করতে, কিন্তু ও পৌঁছনোর আগেই, টম মামা হাঁচড়ে পাঁচড়ে নিরাপদ জায়গায় ফিরে এলেন।

‘আরেকটু হলেই পড়ে যেতাম! র‍্যামপার্টে হেলান দিয়েছিলাম হঠাৎই কী যেন হড়কে গেল। ভাগ্যিস জন আমার ঠিক পাশেই ছিল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জন, আপনি আমার জীবন বাঁচিয়েছেন!’

ভালমত লক্ষ করতেই দেখা গেল র‍্যামপার্টের একটা পাথর আলগা হয়ে গেছে। যদিও টম মামার ধারণা ওটার কারণেই মারাত্মক দুর্ঘটনাটা ঘটতে যাচ্ছিল, কিন্তু টাওয়ারের সরু সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় জনের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখল কিশোর। সাবধানের মার নেই।

‘চলো, আমরা ওই আস্তাবলটায় যাই,’ একাকী হওয়ার পর টিনাকে ফিসফিস করে বলল কিশোর।

এমুহূর্তে, মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। ওরা ছপ-ছপ করে পানি ভেঙে আস্তাবলের দিকে দৌড়ে গেল।

‘কাকভেজা হয়ে গেছি!’ কুয়াশাচ্ছন্ন চশমার কাঁচ মুছল টিনা। ‘শোফারকে বলা উচিত ছিল আমাদেরকে গাড়িতে করে এখানে নামিয়ে দিতে।’

হেসে উঠল কিশোর।

‘তুমি দুর্গের বড়লোকি চাল ভালই রপ্ত করেছ, টিনা। শীঘ্রি দেখা যাবে তুমি দুধ দিয়ে গোসল করছ।’

ওর কথা গায়ে না মেখে, ঝট করে এক ফিড রুমের দিকে চাইল টিনা, তবে খালি ওটা। কোনাগুলোতে পুরু হয়ে জমেছে মাকড়সার জাল।

‘আস্তাবল নিশ্চয়ই…এহ!’

এসময় অন্ধকার এক কোনা ঘুরে উদয় হলো বিশালদেহী এক লোক। মুহূর্তখানেক ওদের দিকে কঠোর দৃষ্টিতে চেয়ে রইল সে।

‘বেরোও এখান থেকে,’ বলল লোকটা, পেল্লায় এক হাত দেখিয়ে ইশারা করল।

‘শুনুন,’ প্রতিবাদ করল কিশোর। ‘আমরা আস্তাবল দেখতে এসেছি।’ জবাব না পেয়ে মৃদুস্বরে বলল, ‘প্লিজ।’

‘এখানে দেখার কিছু নেই। ঘোড়াগুলো দক্ষিণ ইউএসএ-তে উইন্টার কোয়ার্টার্সে আছে।’

‘তবুও আমরা একটু ঘুরে দেখতে চাই,’ বলল কিশোর।

‘হবে না।’

‘আচ্ছা, ঠিক আছে,’ শ্রাগ করল টিনা। ‘আমরা নাহয় টম মামার সাথেই আসব। নতুন মালিককে নিশ্চয়ই ঘুরে দেখতে দেবেন আপনি?’

লোকটার চোখে-মুখে হিংস্র অভিব্যক্তি ফুটল। মুহূর্ত পরে, প্রায়ান্ধকার এক প্যাসেজের দিকে আঙুল নির্দেশ করল। ‘ওখান দিয়ে গেলেই ঘোড়ার স্টলগুলো পাবে।’

‘ধন্যবাদ।’

কিশোর আর টিনা অন্ধকার প্যাসেজটা ধরে টলমল পায়ে এগোল, কিন্তু ওটা গিয়ে শেষ হয়েছে এক দেয়ালে। ফেরার পথে, ধাতবের সঙ্গে ধাতবের সংঘর্ষের মৃদু ঠং-ঠং শব্দ পেল ওরা এবং আওয়াজটাকে অনুসরণ করে বিশাল এক কামরায় চলে এল। বেড়া দেয়া দু’সারি ঘোড়ার স্টল দেখল ওখানে। এক কামারশালার কাছে, এক কামার-যে শত্রুভাবাপন্ন লোকটিকে একটু আগে দেখেছে ওরা-নেহাইতে এক হর্সশু পিটছে। কিশোর মনে-মনে বলল, কামারশালায় আগুন জ্বললে ভাল হত। বড্ড ঠাণ্ডা এখানে।

‘টিনা, চলো,’ কামারের লোহা পেটানোর শব্দ ছাপিয়ে চিৎকার করে বলল কিশোর।

ওরা যেই বাইরের দরজার কাছে পৌঁছেছে, অমনি আঁধার প্যাসেজটি ফুঁড়ে উদয় হলো এক লোক, হাতে ধোঁয়া ওঠা খাবারের ট্রে। গতকাল এই শোফারটির সঙ্গেই এয়ারপোর্টে দেখা হয় ওদের।

‘ওহ,’ বলে উঠল লোকটি। ‘চমকে গেছি! আমি, উম, কাসা লোমা থেকে আমার লাঞ্চ নিয়ে এলাম। একা-একা খেতে ভাল লাগে।’

‘আপনার খাওয়া হলে আমাদেরকে একটু গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দেবেন?’ টিনা প্রশ্ন করল।

শোফার মুচকি হাসল, তবে তার চোখের পাতার একটি নার্ভ কেঁপে উঠল।

‘সম্ভব নয়, মিস, লিমুজিনটা দুর্গে।’

‘ও, আচ্ছা, আপনার গায়ের কাপড় শুকনো কিনা, তাই ভাবলাম গাড়ি নিয়েই এখানে এসেছেন বুঝি।’

ঘোড়ার স্টলগুলোর দিকে চলেছে, অস্পষ্টস্বরে বিড়বিড় করে কীসব যেন আওড়াল শোফার। বাইরে এসে, বৃষ্টির দিকে মুখ করল টিনা।

‘স্টলগুলোর দরজায় সোনালী হরফে ঘোড়াগুলোর নাম লেখা ছিল দেখেছ? আমার ধারণা ভেতরে অনেক জায়গা। যে কোন ঘোড়া চাইলেই বন্ধুবান্ধবদের চায়ের দাওয়াত দিতে পারবে।’

‘আমি শুধু ওই কামার লোকটার শক্তিশালী বাহুজোড়া খেয়াল করেছি। হীরেগুলো দুর্গের নিচে লুকানো থাকলে ও শুধু দুর্গটা তুলে ধরত আর আমরা তলা থেকে ওগুলো বের করে নিতাম। ভাবছি ঘোড়ার স্টলগুলোর লোকেশন সম্পর্কে মিথ্যে বলল কেন ও?’

গারফিল্ড আস্তাবলের কথা যা বলেছিল, সে ব্যাপারে কামারের সঙ্গে আলাপ করার ইচ্ছে ছিল কিশোরের, কিন্তু বেয়াড়া লোকটার হাব-ভাব দেখে ওকে আর ঘাঁটাতে যায়নি। বড়রা কেউ সঙ্গে নেই, ব্যাটা কিছু একটা করে বসে যদি? উদ্দেশ্য হাসিল হয়নি, বৃষ্টির পর মন খারাপ, গরম শাওয়ার নিয়ে শরীর-মন চাঙা করবে ঠিক করল কিশোর।

স্যর ডয়েলের ব্যক্তিগত সুইটের ভিন্ন ধরনের শাওয়ারটার কথা ভেবে, টম মামার অনুমতি নিয়ে, সেদিকে চলল ও।

সুইটে যখন ঢুকল, ওর পদশব্দ চাপা পড়ল পুরু গালিচায়। এবার বিস্ময়ে থমকে দাঁড়াল ও। টেবিলের পাশে, রুপোলী ফ্রেমে বাঁধানো এক ছবি হাতে দাঁড়িয়ে মেইড ক্যাথরিন।

কিশোরকে দেখেনি ও, এবং কিশোর নীরব রইল। ফটোগ্রাফটা ক’মুহূর্ত খুঁটিয়ে দেখে, ওটা নামিয়ে রাখল ক্যাথরিন এবং দরজার দিকে ঘুরে দাঁড়াল।

‘আরি, কিশোর, তুমি! ভয় পেয়ে গেছি! আমি, মানে এখানে সব কিছু ঠিকঠাক আছে কিনা দেখতে এসেছিলাম আরকী।’

কাঠের পালঙ্কটার দিকে চকিতে চাইল কিশোর, লকলকে জিভ বের করা অনেকগুলো সাপ খোদাই করা ওটায়।

‘কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে তো এই সুইটটায় কেউ নেই।’ স্মিত হাসল ক্যাথরিন, মুখের ওপর এসে পড়া কালো চুল সরাল।

‘তা ঠিক। আসলে আমি ঘরটার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি গোপন প্যানেলটা খোলা। ভেতরে আসি ওটা বন্ধ করতে, তখনই স্যর ডয়েল আর তোমার টম মামার ফটোটা চোখে পড়ে।’

‘গোপন প্যানেল! আমাকে দেখাবেন?’

ফায়ারপ্লেসের কাছে চলে গেল ক্যাথরিন।

‘ম্যান্টেলের নিচে একটা লুকানো বোতাম আছে। ওটা চাপ দিলেই দেখতে পাবে।’

ফায়ারপ্লেসের পাশের এক পাতলা প্যানেল হাট হয়ে খুলে গেল এবং কটি সরু-সরু তাক ভর্তি বই আর কাগজপত্র বেরিয়ে পড়ল।

‘হতাশ হলে?’ মুচকি হাসল ক্যাথরিন। ‘তুমি হীরেগুলো দেখবে ভেবেছিলে, তাই না?’

‘এই গোপন প্যানেলটাকে মোটেই গোপন মনে হচ্ছে না।’

‘হ্যাঁ। কাজের লোকেরা সবাই জানে এটার কথা। কিন্তু আমি ভাবছি কে এটা খুলল এবং কেনই বা।’

ক্যাথরিন চলে গেলে, স্যর ডয়েলের বাথরুমে ঢুকল কিশোর। মার্বেলে তৈরি দেয়ালগুলোতে হরেক রকম রঙের ছড়াছড়ি, এবং আরও অনেক কিছুর সঙ্গে এক টেলিফোন দেখতে পেল ও, দুর্গের প্রাইভেট ফোন সিস্টেমের সঙ্গে যেটির সংযোগ রয়েছে।

মেঝেতে ঝপ করে কাপড়চোপড় ফেলে, শাওয়ারের নিচে চলে এল কিশোর। ওকে রুপোলী রেইলে ঘিরে রাখা ছটি আলাদা কল পানি নিয়ন্ত্রণ করছে। চারদিক থেকে আসা উষ্ণ, তীরের ফলার মত পানি শরীরে-মনে এমনই তরতাজা অনুভূতি ছড়াল যে কিশোর খুশিতে গান গাইতে লাগল।

প্রতিবাদ জানাতেই হয়তো, মেইন পাইপটা হঠাৎই জোরাল ঘরঘর শব্দ করে উঠল এবং পানির ধারা ক্ষীণ হয়ে এল। কিশোর রীতিমত হতভম্ব! পানির প্রবাহ আবারও চালু করতে না পেরে, তুলোর মতন নরম এক তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে লাগল ও।

এবার ওর নজরে এল স্যর ডয়েলের টুথপেস্টের এক টিউব নিখুঁতভাবে কেটে দু’ভাগ করা হয়েছে ওটাকে। টিপে-টিপে বের করা টুথপেস্টটুকু এখনও জমাট বাঁধেনি। দেখে মনে হচ্ছে কেউ হয়তো ভেবেছিল এটার ভেতরই হীরেগুলো লুকানো আছে-এমন কেউ, ইদানীং যে এ বাথরুমটিতে ঢুকেছিল।

সচকিত হলো কিশোর। ওর আশপাশেই, এই দুর্গের মধ্যেই পরিচিত এমন কেউ রয়েছে, স্যর ডয়েলের অন্তর্ধানের পেছনে যার হাত আছে এবং যে হীরেগুলো খুঁজে পাওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

কিন্তু কে সে?