রবোনগরী
রবোনগরীতে একদিন একটা কালো ক্যাপসুল এসে হাজির হল। প্রথমে সেটি চোখে পড়েছিল যোগাযোগ কেন্দ্রের একজন শৌখিন জ্যোতির্বিদের। অবসর সময়ে সে টেলিস্কোপ চোখে মহাকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে, এভাবে তাকিয়ে থাকার সময় সে প্রথম একটি মহাকাশযানকে দেখতে পায়। মহাকাশযানটি ছিল একটি বিধ্বস্ত মহাকাশযান এবং শৌখিন জ্যোতির্বিদ সেটিকে প্রথমে শক্র মহাকাশযান হিসেবে ভুল করেছিল। তারা মহাজাগতিক ইতিহাসের একটি ক্রান্তিলগ্নে বাস করছে, গ্রহে গ্রহে হানাহানি, ধ্বংসযজ্ঞ, শক্তি প্রয়োগ হচ্ছে–সবাইকেই তাই সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। রবোনগরীর সবাই তাই তাদের অস্ত্র উদ্যত করে সতর্ক হয়ে থাকল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা দেখতে পেল মহাকাশযানটি বিধ্বস্ত এবং তার মাঝে কারগো বলতে একটি কালো ক্যাপসুল। ক্যাপসুলটি খুলে দেখা গেল তার মাঝে জীবন রক্ষাকারী প্রক্রিয়া ব্যবহার করে কোনোভাবে একজন মানুষের জীবনকে বাচিয়ে রাখা হয়েছে।
রবোনগরীর জন্যে সেটি ছিল একটি খুব বড় ঘটনা, তার কারণ রবোনগরী হচ্ছে রবোটদের নগর, এখানে সবাই রবোট। তাদের অনেকে শুধু মানুষের নাম শুনেছে, কখনো নিজের চোখে কোনো মানুষ দেখে নি। ক্যাপসুলের মানুষটিকে তারা খুব অবাক হয়ে দেখল। তারা জানত মানুষ অত্যন্ত কোমল প্রাণী, তাপ চাপ বা শক্তির অত্যন্ত ক্ষুদ্র তারতম্যেই তাদের শরীর বিধ্বস্ত হয়ে যায়। কিন্তু মানুষ যে প্রকৃত অর্থে কী পরিমাণ অসহায় সেটা তারা আবিষ্কার করল জীবন রক্ষাকারী প্রক্রিয়ায় বেঁচে থাকা এই অসহায় মানুষটিকে দেখে।
মানুষটির কী হয়েছে তারা জানত না এবং তাকে নিয়ে কী করবে সেটাও তারা বুঝতে পারল না। নিজেদের কপোট্রন, রবোনগরীর মূল তথ্যকেন্দ্র হাতড়ে নানারকম তথ্য জড়ো করে তারা মানুষটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করল, কিন্তু দেখা গেল সেটি সম্ভব নয় :
রবোনগরীর সব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় দলপতি কুরোশিয়া। কুরোশিয়ার মূল কপোট্রন যদিও প্রাচীন পি–৪৬ ধরনের কিন্তু নূতন প্রজন্মের মডিউলগুলো তার কপোট্রনে জুড়ে দেয়া আছে। তার কার্যকর স্মৃতির পরিমাণ বিশাল এবং মূল তথ্যকেন্দ্রে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকায় রোশিয়া অন্য যে–কোনো রবোট থেকে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সে তার বিশাল যান্ত্রিক মাথা নেড়ে সবুজ ফটোসেলের চোখ পিটপিট করে কয়েকবার বন্ধ করে এবং খুলে বলল, আমার মনে হয় মানুষটিকে আর কষ্ট দেয়া ঠিক নয়।
প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা একজন রবোট জিজ্ঞেস করল, কষ্ট মানে কী?
কুরোশিয়া বলল, কষ্ট এক ধরনের মানবিক প্রক্রিয়া। মানুষের মূল মানবিক প্রক্রিয়া দুই ধরনের। একটির নাম কষ্ট অন্যটির নাম আনন্দ। আনন্দ নামের প্রক্রিয়াটি তারা পেতে চায়, কষ্টটি পেতে চায় না।
তার কারণ কী?
কুরোশিয়া মূল তথ্যকেন্দ্রের সাথে খানিকক্ষণ তথ্য বিনিময় করে বলল, কারণটি সম্ভবত তাদের মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কম্পনের সাথে জড়িত। কষ্ট প্রক্রিয়াটি তাদের স্বাভাবিক কম্পনকে ব্যাহত করে।
নগরীর উন্নয়নের দায়িত্বে থাকা অন্য একটি রবোট বলল, মানুষটি কি এখন কষ্ট পাচ্ছে?
কুরোশিয়া তার মাথা নেড়ে বলল, আমি নিশ্চিত। কষ্ট পাওয়া মানুষের মুখভঙ্গির সাথে আমি পরিচিত। তখন তাদের ভুরু কুঞ্চিত থাকে, মুখমণ্ডল অল্প খোলা রাখে এবং তুলনামূলকভাবে দ্রুত নিশ্বাস নেয়। এই মানুষটি তাই করছে। আমি নিশ্চিত সে কষ্ট পাচ্ছে।
আমরা কীভাবে তাকে কষ্ট থেকে মুক্তি দেব?
তার মৃত্যুর ব্যবস্থা করতে হবে।
মৃত্যু? তুলনামূলকভাবে নূতন প্রজাতির একটি রবোট বলল, সেটি কী?
কুরোশিয়া উত্তর দেয়ার আগেই আরেকটি প্রাচীন রবোট বলল, মৃত্যু হচ্ছে চূড়ান্ত ধ্বংস প্রক্রিয়া। একজন মানুষের মৃত্যু হলে সে আর জীবনে ফিরে আসতে পারে না।
নূতন প্রজন্মের আরেকটি রবোট বলল, কী আশ্চর্য!
কুরেশিয়া মাথা নেড়ে বলল, হ্যাঁ, এটি খুব আশ্চর্য। মানুষ মাত্রই আশ্চর্য। মৃত্যু থেকে ফিরে আসা যায় না বলে মানুষ মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে খুব সাবধানে, শুধু যখন তাদের অন্য কোনো উপায় থাকে না তখন।
রবোটগুলো কোনো কথা না বলে নিঃশব্দে স্থির হয়ে বসে রইল। যান্ত্রিক অনুভূতিতে বিষণ্ণতা একটি দুঃসাধ্য প্রক্রিয়া, সে কারণে তারা সত্যিকার অর্থে বিষণ্ণ হতে পারল না।
পরদিন মানুষটির জীবন রক্ষাকারী যন্ত্রটি ব্যবহার করে মানুষটির জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হল। মানুষটি তার খোলা চোখ মেলে বলল, আমি কোথায়?
কুরোশিয়া বলল, তুমি রবোনগরীতে
রবোনগরী? এখানে মানুষ নেইঃ
না, আমরা সবাই রবোট। কিন্ধু আমরা তোমাকে সাহায্য করতে চাই।
মানুষটি যন্ত্রণাকাতর মুখে খানিকক্ষণ কুরোশিয়ার ধাতব মুখের দিকে তাকিয়ে রইল, তারপর দুর্বল গলায় বলল, তুমি সত্যিই আমাকে সাহায্য করতে চাও?
হ্যাঁ।
তাহলে মৃত্যুর আগে একবার আমাকে সত্যিকার একজন মানুষের সাথে কথা বলতে দাও।
কুরোশিয়া দীর্ঘ সময় চুপ করে থেকে বলল, আমরা যেখানে থাকি–গ্যালাক্সির এই কোনায় কোনো মানুষ নেই।
মানুষটি কোনো কথা না বলে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। কুরোশিয়ার মাঝে সত্যিকার মানবিক আবেগ নেই কিন্তু তবু সে মানুষের দুঃখটুকু অনুভব করতে পারল।
ধীরে ধীরে মানুষটির শরীরের অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে। তার গায়ের বর্ণ বিবর্ণ হয়ে আসে, নিশ্বাস নিতে কষ্ট হতে থাকে, হৃৎস্পন্দন কমে আসে, শরীরের তাপমাত্রা নিচে নেমে যায়। কুরোশিয়া মাথা নেড়ে অন্য রবোটদের বলল, আর কিছুদিনের মাঝেই মানুষটির মৃত্যু হবে।
নতুন প্রজন্মের একটি রবোট বলল, আমরা কি তার মৃত্যু ত্বরান্বিত করতে পারি না? জীবন রক্ষাকারী প্রক্রিয়াটিতে কি হাত দেয়া যায় না?
কুরোশিয়া মাথা নেড়ে বলল, মানুষের মৃত্যু একটি চূড়ান্ত প্রক্রিয়া, এর থেকে ফিরে আসার কোনো উপায় নেই। আমি সেখানে হাত দেয়া পছন্দ করি না
কাজেই রুগণ মানুষটি কালো ক্যাপসুলে শুয়ে শুয়ে মৃত্যুর প্রতীক্ষা করতে থাকে। কুরোশিয়া আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করে বলল, মানুষের জীবনীশক্তি অপরিসীম। এই মানুষটি মৃত্যুকে গ্রহণ করে নি বলে তার মৃত্যু হচ্ছে না।
নিরাপত্তা কেন্দ্রের চতুর্থ মাত্রার একটি রবোট বলল, কেন সে মৃত্যুকে গ্রহণ করে নি?
কারণ সে মৃত্যুর আগে একজন মানুষের সাথে কথা বলতে চেয়েছে। যতক্ষণ সে একজন মানুষের সাথে কথা বলবে না ততক্ষণ সে নিজে থেকে মৃত্যুকে গ্রহণ করবে না। মৃত্যুকে জোর করে তার ভিতরে প্রবেশ করতে হবে। যতক্ষণ সেটি না ঘটবে ততক্ষণ মানুষটি তার কালো ক্যাপসুলে শুয়ে কষ্ট ভোগ করবে।
চতুর্থ মাত্রার রবোটটি জিজ্ঞেস করল, মানুষটি কী নিয়ে কথা বলবে বলে তোমার মনে হয়?
কুরেশিয়া আবার মূল তথ্যকেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করে নানারকম তথ্য পর্যালোচনা করে বলল, আমি ঠিক জানি না। কিন্তু কথাটি হবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানব সভ্যতার গূঢ় তথ্যটি তার মাঝে লুকিয়ে থাকবে।
নূতন প্রজন্মের একটি রবোট তার কপোট্রনে উত্তেজনার টার্বো চ্যানেল চালু করে বলল, আমরা কি একজন মানুষকে খুঁজে আনতে পারি না? তাহলে অসুস্থ মানুষটির শেষ কথাটি শুনতে পেতাম। মানুষের সভ্যতার প্রকৃত অর্থ খুঁজে পেতাম।
উৎসাহী আরেকটি রবোট বলল, আমরাও তাহলে আমাদের সভ্যতা মানুষের সভ্যতার অনুকরণে তৈরি করতে পারতাম।
কুরোশিয়া খানিকক্ষণ নূতন প্রজন্মের এই উৎসাহী রবোটটির দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, তুমি ঠিকই বলেছ। আমারও খুব জানার কৌতূহল হচ্ছে এই মানুষটি কী কথা বলবে।
আমরা কি আন্তঃগ্যালাক্টিক বুলেটিন বোর্ডে ছোট একটি বিজ্ঞাপন বা খবর পাঠাতে পারি না?
ব্যাপারটি কষ্টসাধ্য, কিন্তু আমি চেষ্টা করব।
কয়েকদিন পর কুরোশিয়া এবং রবোনগরীর অন্য প্রবীণ রবোটেরা আন্তঃগ্যালাক্টিক বুলেটিন বোর্ডে এ রকম একটি খবর প্রচারের ব্যবস্থা করল :
রবোনগরীতে একজন মানুষ মৃত্যুর জন্যে অপেক্ষা করছেন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি অন্য একজন মানুষের সাথে কথা বলতে চান। কোনো দয়ার্দ্র মানুষ কি এই উদ্দেশ্যে অল্প সময়ের জন্যে রবোনগরীতে পদার্পণ করবেন?
বুলেটিন বোর্ডে খবর প্রচারিত হওয়ার পর দীর্ঘদিন কেটে গেল, কিন্তু কোনো মানুষ রবোনগরীতে দেখা করতে এল না। রুগ্ণ মানুষটির অবস্থা ধীরে ধীরে আরো খারাপ হয়ে গেল, তার নিশ্বাস প্রায় শোনা যায় না, হৃৎস্পন্দন কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে এসেছে। কুরোশিয়া মাথা নেড়ে তার সবুজ ফটোসেলের চোখ পিটপিট করে বলল, আমার মনে হচ্ছে এই মানুষটি সত্যিকার অর্থে দুর্ভাগা। সম্ভবত তাকে তার শেষ ইচ্ছা অপূর্ণ রেখেই মৃত্যুবরণ করতে হবে।
অন্য রবোটরাও মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল, কেউ কোনো কথা বলল না।
যখন রবোনগরীর সবাই আন্তঃগ্যালাক্টিক গ্রহাণুপুঞ্জ থেকে কোনো মানুষের এখানে। পদার্পণ করার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল ঠিক তখন তারা মহাকাশে একটি মহাকাশযান আবিষ্কার করল। হাইপার ডাইভ দিয়ে কাছাকাছি চলে আসার পর রবোনগরীর রবোটেরা মহাকাশযানের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারল সত্যি সত্যি বুলেটিন বোর্ডের তথ্য পড়ে একজন পরিব্রাজক মানুষ রুগ্ণ মানুষটির সাথে দেখা করতে আসছে।
পরদিন অপরাহ্নে মহাকাশযানটি রবোনগরীতে পৌঁছল এবং সেখান থেকে একজন মধ্যবয়স্ক মানুষ নেমে এল। তার চেহারায় ক্লান্তির ছাপ কিন্তু চোখ দুটি আশ্চর্য রকম সজীব। কুরেশিয়া মানুষটিকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বলল, আমাদের আহ্বানে সাড়া দেয়ার জন্যে তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। মধ্যবয়স্ক পরিব্রাজক মানুষটি বলল, একজন মানুষের অন্য মানুষের প্রতি একটি দায়িত্ব থাকে। আমি সেই দায়িত্ববোধ থেকে এসেছি। কোথায় আছে সেই রুগ্ণ মানুষটি?
চল আমার সাথে, আমি তোমাকে নিয়ে যাই। কুরোশিয়া মানুষটির পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে বলল, তুমি যখন এই রুগ্ণ মানুষটির সাথে কথা বলবে তখন আমি কি তোমার পাশে থাকতে পারি?
মধ্যবয়স্ক পরিব্রাজক মানুষটি একটু অবাক হয়ে কুরোশিয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, তুমি যদি চাও অবশ্যি থাকতে পার।
রুগণ মানুষটির জীবন রক্ষাকারী প্রক্রিয়া চালু করে তার জ্ঞান ফিরিয়ে আনা হল। মানুষটি চোখ খুলে কুরোশিয়ার পাশে বসে থাকা মধ্যবয়স্ক মানুষটিকে দেখতে পায় এবং তার নিষ্প্রভ চোখ হঠাৎ জ্বলজ্বল করে জ্বলে ওঠে। সে তার দুর্বল ডান হাতটি উঁচু করে বাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করল। মধ্যবয়স্ক মানুষটি রুগণ মানুষটির দুর্বল হাতটি দুই হাতের মাঝে নিয়ে নরম গলায় বলল, আমি সুদূর গ্যালাক্টিক গ্রহাণুপুঞ্জ থেকে তোমার সাথে দেখা করতে এসেছি।
রুগ্ণ মানুষটি তার চোখের পাতা ফেলে শোনা–যায়–না এ রকম গলায় বলল, তোমাকে ধন্যবাদ।
তুমি আমাকে কিছু বলবে?
রুগ্ণ মানুষটি একটা নিশ্বাস ফেলে বলল, বলব।
কী বলবে?
আমি–আমি তোমাদের ভালবাসি।
মধ্যবয়স্ক মানুষটি ঝুঁকে পড়ে নরম গলায় বলল, আমি জানি। একজন মানুষ সবসময় অন্য একজন মানুষকে ভালবাসে।
রুণ মানুষটি তার চোখ বন্ধ করল এবং তার চোখের কোনা দিয়ে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে। মানুষটি তার দুর্বল হাত দিয়ে মধ্যবয়স্ক মানুষটির হাত ধরে রাখে, তার মুখে এক ধরনের প্রশান্তির ছাপ ফুটে ওঠে। কিছুক্ষণের মাঝেই তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে হৃৎস্পন্দন থেমে যায়।
কুরোশিয়া রুগণ মানুষটির দিকে ঝুঁকে পড়ে তাকে একবার স্পর্শ করে বলল, মানুষটি কি মৃত্যুবরণ করেছে?
হ্যাঁ কুরোশিয়া।
এই একটি কথা বলার জন্যে সে এতদিন অপেক্ষা করেছিল?
হ্যাঁ।
তুমি কি জানতে সে এই কথা বলবে?
মধ্যবয়স্ক মানুষটি একটি নিশ্বাস ফেলে বলল, জানতাম।
কুরোশিয়া কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে বলল কী আশ্চর্য!
মানুষটি একটু অবাক হয়ে রবোট দলপতি কুরোশিয়ার দিকে তাকাল কিন্তু কিছু বলল না।
.
দুই সহস্র বছরে রবোনগরীর যে সভ্যতা গড়ে উঠেছিল সেটি পরবর্তী কয়েক বছরে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেল। আন্তঃগ্যালাক্টিক ইতিহাস জার্নালে তার কারণ হিসেবে রবোটের গভীর হীনমন্যতার কথা উল্লেখ করা হয়।