ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

যোশুয়া ০৬

১ য়িরীহো শহরের সমস্ত প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কাছেই ইস্রায়েলের লোকেরা, সেইজন্য শহরের লোকরা ভয় পেয়ে গিয়েছিল। শহর থেকে কেউ বেরোত না, শহরে কেউ আসতও না।
২ তখন প্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “শোনো, আমি তোমাদের য়িরীহো দখল করতে দিচ্ছি। তোমরা রাজা আর শহরের সমস্ত য়োদ্ধাকে পরাজিত করবে।
৩ দিনে একবার করে সমস্ত শহরের চারিদিকে সৈন্যদের টহল দেওয়াবে। এরকম ছয় দিন করবে।
৪ পবিত্র সিন্দুকটি যাজকদের বহন করতে বলবে। সাতজন যাজককে মেষের তৈরী শিঙা নিতে বলবে। সেই সিন্দুকটির সামনে দিয়ে যাজকদের য়েতে বলবে। সপ্তম দিনে শহরটিকে সাতবার প্রদক্ষিণ করবে। ঐ দিন যাজকদের যাবার সময় শিঙা বাজাতে বলবে।
৫ তারা একবার খুব জোরে শিঙা বাজাবে। সেই শিঙার শব্দ শুনতে পেলেই লোকদের চিত্কার করতে বলবে। তোমরা এই কাজ করলে শহরের প্রাচীরগুলো ভেঙ্গে পড়বে, আর তোমার লোকরাও সোজা শহরে ঢুকে পড়তে পারবে।”
৬ নূনের পুত্র যিহোশূয় সেই মত যাজকদের সকলকে একত্র ডেকে বললেন, “প্রভুর পবিত্র সিন্দুক আপনারা বহন করুন। আপনাদের মধ্যে সাত জনকে শিঙা নিয়ে সিন্দুকের সামনে দিয়ে এগিয়ে য়েতে বলুন।”
৭ তারপর যিহোশূয় লোকদের আদেশ দিলেন, “এবার যাও। শহরকে প্রদক্ষিণ করো। সশস্ত্র সৈন্যরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের সামনে থেকে অভিযান করবে।”
৮ যিহোশূয়র কথা শেষ হলে সাত জন যাজক প্রভুর সমক্ষে যাত্রা শুরু করলেন। তাঁরা সাতটি শিঙা বহন করলেন এবং চলতে চলতে বাজাতে লাগলেন। যাজকরা তাঁদের পিছনে পিছনে প্রভুর পবিত্র সিন্দুক বয়ে নিয়ে চললেন।
৯ য়ে সমস্ত যাজকরা শিঙা বাজাচ্ছিলেন সশস্ত্র সৈন্যরা তাঁদের সামনে চলে গেল। বাকী লোকরা পবিত্র সিন্দুকের পিছনে হাঁটছিল। তারা শিঙা বাজাতে বাজাতে শহর পরিক্রমা করল।
১০ যিহোশূয় তাদের যুদ্ধধ্বনি দিতে বারণ করলেন। তিনি বললেন, “এখন চিত্কার কোরো না। আমি তোমাদের না বলা পর্য়ন্ত একটা কথাও বলবে না। য়েদিন বলব সেদিন চেঁচিযো।”
১১ যিহোশূয়র কথা মত যাজকরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুক নিয়ে একবার শহর প্রদক্ষিণ করলেন। তারপর তাঁরা তাঁবুতে ফিরে গিয়ে রাত্রি কাটালেন।
১২ পরদিন খুব ভোরে যিহোশূয় ঘুম থেকে উঠলেন। যাজকরা আবার প্রভুর সিন্দুক কাঁধে তুলে নিলেন।
১৩ সাত জন যাজক সাতটি শিঙা নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। তাঁরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের সামনে শিঙা বাজাতে বাজাতে এগিয়ে চললেন। তাঁদের আগে আগে চলেছে সশস্ত্র সৈন্যরা। বাকী লোকরা প্রভুর পবিত্র সিন্দুকের পেছনে পেছনে চলছিল এবং প্রতিবার প্রদক্ষিণের পর তাদের শিঙা বাজাচ্ছিল।
১৪ দ্বিতীয দিন তারা সকলে একবার শহর পরিক্রমা করল। তারপর শিবিরে ফিরে এলো। দুদিন ধরে তারা প্রতিদিন এই ভাবেই কাটাল।
১৫ সপ্তম দিনে উষাকালে তারা উঠে পড়ল। তারা সাতবার শহর প্রদক্ষিণ করল। এর আগে এভাবেই তারা শহর প্রদক্ষিণ করেছিল, কিন্তু সেদিন তারা সাতবার শহর প্রদক্ষিণ করল।
১৬ সপ্তম বার তারা শহর পরিক্রমা করলে যাজক শিঙা বাজালেন। তখন যিহোশূয় আদেশ দিলেন, “এবার চিত্কার করো। প্রভু তোমাদের এই শহর দান করেছেন।
১৭ এই শহর এবং শহরের সবকিছু প্রভুর। শুধু গণিকা রাহব এবং তার বাড়ীর লোকরা বেঁচে থাকবে। এদের তোমরা হত্যা কোরো না, কারণ সে আমাদের দুজন গুপ্তচরকে সাহায্য করেছিল।
১৮ আর একথাও মনে রেখো, আর যা সব আছে আমরা ধ্বংস তো করবই, কিন্তু তোমরা কোন কিছুই নিয়ে য়েতে পারবে না। যদি তোমরা ঐসব জিনিস সঙ্গে নিয়ে আমাদের শিবিরে আসো, তবে তোমরাও ধ্বংস হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে তোমরা ইস্রায়েলের লোকদেরও বিপদ ডেকে আনবে।
১৯ যত সোনা, রূপা, আর পিতল ও লোহার তৈরী জিনিসপত্র আছে সবই প্রভুর সম্পদ। সেই সব সম্পদ প্রভুর কোষাগারেই থাকবে।”
২০ যাজকরা শিঙা বাজালেন। লোকরা শিঙার শব্দ শুনে চিত্কার করে উঠল। প্রাচীরগুলো ভেঙ্গে পড়ল। তারা সকলে দৌড়ে শহরের মধ্যে ঢুকে পড়ল। এই ভাবে ইস্রায়েলের লোকরা শহর দখল করে নিল।
২১ শহরে যা কিছু ছিল সব তারা ধ্বংস করে ফেলল। জীবিত সব কিছুকেই তারা মেরে ফেলল। যুবক যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কাউকেই বাদ দিল না। গরু, মেষ, গাধা সকলকে তারা মেরে ফেলল।
২২ যিহোশূয় গুপ্তচর দুজনের সঙ্গে কথা বললেন। তিনি বললেন, “সেই গণিকার গৃহে তোমরা যাও। তাকে এবং তার সঙ্গে যারা আছে তাদের বের করে নিয়ে এসো। তোমরা তাকে য়েমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে, সেই প্রতিশ্রুত অনুসারে কাজ করো।”
২৩ সেই মত দুজন বাড়ীতে ঢুকে রাহবকে বের করে আনল। তারা তার মাতা, পিতা, ভাই পরিবারের সকলকেই বের করে আনল। তাছাড়া আর যারা রাহবের সঙ্গে ছিল তাদেরও উদ্ধার করল। এদের সবাইকে তারা ইস্রায়েলের শিবিরের বাইরে একটা নিরাপদ জায়গায় রেখে দিল।
২৪ তারপর ইস্রায়েলবাসীরা সমস্ত শহর বালিয়ে দিল। সোনা, রূপো, পিতল আর লোহার তৈরী জিনিস ছাড়া আর সব কিছুই তারা বালিয়ে দিল। তারা ঐ জিনিসগুলি প্রভুর কোষাগারে রাখল।
২৫ গণিকা রাহব তার পরিবারের সকলকে এবং তার সঙ্গে আর যারা ছিল যিহোশূয় তাদের সবাইকে রক্ষা করেছিলেন। তিনি তাদের বাঁচিয়েছিলেন, কারণ রাহব যিহোশূয়র পাঠানো গুপ্তচরদের যারা য়িরীহোতে এসেছিল তাদের সাহায্য করেছিল। আজও ইস্রায়েলবাসীদের মধ্যে রাহব বাস করছে।
২৬ সেই সময় যিহোশূয় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন:“য়ে গড়িবে পুনরায য়িরীহো নগর, প্রভুর রোষানল পড়িবে তাহার উপর। নগরের ভিত্তি য়ে করিবে স্থাপন, জ্য়েষ্ঠতম সন্তান সে খোযাবে আপন; য়ে জন নির্মাণ করে নগরের দ্বার, কনিষ্ঠ সন্তান তার হইবে সংহার।”
২৭ প্রভু যিহোশূয়র সঙ্গে রইলেন। আর যিহোশূয় সারা দেশে বিখ্যাত হয়ে গেলেন।