১ কিন্তু এখন, যারা আমার চেয়েও বয়সে ছোট তারা আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করে। এবং তাদের পিতারা এতোই অপদার্থ ছিল য়ে, আমার মেষগুলোকে য়ে কুকুর পাহারা দেয়- আমি ওদের সেই কুকুরের সঙ্গেও রাখতে চাইনি।
২ ঐসব যুবকের পিতারা এতোই দুর্বল য়ে ওরা আমার সাহায্যে আসবে না। তারা এখন বৃদ্ধ ও ক্লান্ত হয়েছে, তাদের পেশীগুলো এখন আর শক্ত ও মজবুত নেই।
৩ তারা মৃত মানুষের মতো অনাহারে শুকিয়ে রযেছে। তাই তারা মরুভূমির শুকনো ধূলো খায়।
৪ তারা মরুভূমির নোনা মাটির গাছ উপড়ে নেয়। তারা মরুভূমির এক রকম গাছের শিকড় খায়।
৫ তারা তাদের দল থেকে বিতাড়িত হয়েছে। লোকে এমন ভাবে ওদের দিকে চিত্কার করে য়েন ওরা চোর।
৬ তারা নদীর শুকনো উপত্যকায, পাহাড়ের গুহায অথবা মাটির গর্তে বাস করতে বাধ্য হয়।
৭ তারা মরুভূমির ঝোপঝাড়ে গাধার মত ডাক ছাড়ে এবং কাঁটাঝোপের নীচে গাদাগাদি করে জমা হয়।
৮ তারা নামহীন একদল অপদার্থ লোক যারা নিজেদের দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে!
৯ “এখন ঐসব লোকদের পুত্ররা আমায় নিয়ে গান বেঁধে আমায় উপহাস করে। আমার নামটাই এখন ওদের কাছে একটা বাজে শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১০ এখন ঐ যুবকরা আমায় ঘৃণা করে। তারা আমার থেকে দূরে দাঁড়ায। তারা নিজেদের আমার থেকে ভালো মনে করে। তারা, এমনকি আমার মুখে থুতুও দেয়!
১১ ঈশ্বর আমার ধনুক থেকে গুণ (ছিলা) কেড়ে নিয়ে আমায় দুর্বল করে দিয়েছেন। ঐ মন্দ লোকরা ওদের সমস্ত ক্রোধ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে।
১২ তারা আমার ডানদিক থেকে আক্রমণ করে। তারা আমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে। আমার মনে হয় য়েন একটা শহরকে আক্রমণ করা হল: আমাকে আক্রমণ করে ধ্বংস করার জন্য তারা আমার প্রাচীরে একটা রাস্তা তৈরী করেছে।
১৩ তারা আমার রাস্তা ছিন্ন-ভিন্ন করে দিয়েছে। তারা আমাকে ধ্বংস করতে সফল হয়েছে। তাদের থামাবার কেউ নেই।
১৪ তারা একটা সৈন্যদলের মত যারা দেওয়াল ভেঙে একটা বড় গর্ত করেছে এবং পাথর কুচির ওপর দিয়ে গড়িযে গড়িযে আমার ঘাড়ে পড়েছে।
১৫ সন্ত্রাস আমাকে গ্রাস করেছে। আমার সম্মান বাতাসের মত মুছে গেছে। আমার নিরাপত্তা মেঘের মতোই অদৃশ্য হয়ে গেছে।
১৬ “আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে এবং আমি খুব শীঘ্রই মারা যাবো। দুর্ভোগের দিন আমাকে আঁকড়ে ধরেছে।
১৭ রাতে আমার হাড়ে ব্যথা করে। আমার যন্ত্রণা বন্ধ হয় না।
১৮ ঈশ্বর আমার বস্ত্র কেড়ে নিয়েছেন, এবং আমার বস্ত্র মুচড়ে বিকৃত আকার করে দিয়েছেন।
১৯ ঈশ্বর আমায় কাদায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন এবং আমি ধূলা ও ছাই এর মত হয়ে গিয়েছি।
২০ ঈশ্বর, আপনার সাহায্যের জন্য আমি আপনার কাছে কাঁদি কিন্তু আপনি শোনেন না। আমি দাঁড়িয়ে পড়ে প্রার্থনা করি, কিন্তু আমার দিকে আপনি কোন মনোয়োগ দেন না।
২১ “ঈশ্বর, আপনি আমার প্রতি নীচ ব্যবহার করেছেন। আমাকে আঘাত করবার জন্য আপনি আপনার ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন।
২২ ঈশ্বর, আপনি শক্তিশালী বাতাসকে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে য়েতে দিয়েছেন। আপনি আমাকে ঝড়ের মধ্যে ফেলেছেন।
২৩ আমি জানি আপনি আমায় মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবেন। প্রত্যেকটি জীবন্ত ব্যক্তি অবশ্যই মারা যাবে।
২৪ কিন্তু, য়ে ইতিমধ্যেই বিধ্বস্ত ও সাহায্যের জন্য কাতর আর্জি জানাচ্ছে, তাকে নিশ্চয়ই কোন লোক আঘাত করবে না।
২৫ ঈশ্বর, আপনি জানেন য়ে, য়ে লোকরা সংকটে পড়েছিলো আমি তাদের জন্য কেঁদেছিলাম। আপনি জানেন য়ে দরিদ্র লোকেদের জন্য আমার অন্তর কতখানি কাতর ছিলো।
২৬ কিন্তু যখন আমি ভালো জিনিস চাইলাম, তখন বিনিময়ে খারাপ জিনিস পেলাম। যখন আমি আলো চাইলাম, অন্ধকার এলো।
২৭ আমি ভেতরে ভেতরে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছি। আমার দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না। আমি দিনের পর দিন ভুগে চলেছি।
২৮ আমি সব সময়ই দুঃখী এবং বিমর্ষ। আমি মণ্ডলীর মধ্যে দাঁড়িয়ে চিত্কার করে সাহায্য চাই।
২৯ মরুভূমির বুনো কুকুর এবং উটপাখীর মত আমি বরাবরই নিঃসঙ্গ।
৩০ আমার চামড়া পুড়ে খোসা হয়ে উঠে যাচ্ছে। জ্বরে আমার দেহ উত্তপ্ত হয়ে আছে।
৩১ আমার বীণা দুঃখের গান গাইতে শুরু করেছে। আমার বাঁশিও দুঃখের কান্নায় ভরে উঠেছে।