ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

যেরেমিয়া ২২

১ প্রভু বললেন: “যিরমিয়, রাজপ্রাসাদে যাও। যিহূদার রাজার কাছে গিয়ে এই ধর্মোপদেশ প্রচার করো:
২ ‘যিহূদার রাজা, প্রভুর বার্তা শোন। তুমি দাযূদের সিংহাসন থেকে শাসন করছ, তাই শোন হে রাজা, তুমি এবং তোমার সভা পরিষদগণও শোন। জেরুশালেমের ফটক দিয়ে আসা তোমার লোকদেরও ঈশ্বরের বার্তা শুনতে হবে।
৩ প্রভু বললেন: যা ঠিক তাই করো। ডাকাতকে নয়, যার ডাকাতি হয়েছে তাকে রক্ষা করো। বিধ্বা মহিলাদের এবং অনাথ শিশুদের কোন ক্ষতি করো না। নিরীহ লোকদের মেরো না।
৪ যদি এই নির্দেশগুলো তোমরা মেনে চলো তাহলে এগুলি ঘটবে: দাযূদের সিংহাসনে য়ে সব রাজারা অধিষ্ঠিত রয়েছে তারা জেরুশালেম শহরের ফটক দিয়ে আসা চালিযে যাবে। সঙ্গে থাকবে তাদের সভা পরিষদগণ। তারা সবাই রথে ঘোড়ায় চড়ে আসবে।
৫ কিন্তু যদি এই নির্দেশগুলি মানা না হয়, তাহলে প্রভু বলেছেন: আমি, প্রভু, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি রাজার প্রাসাদ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং সব কিছু জঞ্জালের স্তূপে পরিণত হবে।”‘
৬ যিহূদার রাজার রাজপ্রাসাদের সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল:“এই প্রাসাদ হল গিলিয়দের অরণ্যের মতো উচ্চ। এই রাজপ্রাসাদ হল লিবানোনের পর্বতের মতো উচ্চ, কিন্তু এই প্রাসাদকে মরুভূমিতে পরিণত করব। এই প্রাসাদ নির্জন শহরের মতো একাকি দাঁড়িয়ে থাকবে।
৭ আমি ধ্বংসকারীদের এই প্রাসাদ ধ্বংস করতে পাঠাব। তারা প্রাসাদের সুদৃশ্য এরস কড়িকাঠগুলো কেটে ফেলবে এবং সেগুলোতে আগুন ধরিযে দেবে।
৮ “অনেক জাতির লোকরা এই শহরের পাশ দিয়ে য়েতে য়েতে একে অন্যকে প্রশ্ন করবে, ‘মহান শহর জেরুশালেমের ওপর প্রভু এমন একটা সাংঘাতিক কাণ্ড কেন করলেন?’
৯ এই হবে তাদের প্রশ্োনর উত্তর: যিহূদার লোকরা তাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে য়ে চুক্তি হয়েছিল তা তারা অমান্য করেছিল বলে ঈশ্বর জেরুশালেমকে ধ্বংস করেছেন। যিহূদার লোকরা মূর্ত্তি পূজা করেছিল বলে তাদের এই ভযানক ফল ভোগ করতে হল।”‘
১০ মৃত রাজাদের জন্য না কেঁদে বরং য়ে রাজাকে এই জায়গা ছেড়ে চলে য়েতে হবে তার জন্য কাঁদো। কারণ সে আর কখনো ফিরে আসবে না। আর কোন দিন সে নিজের মাতৃভূমিকে দেখতে পাবে না।
১১ য়োশিযের পুত্র শল্লুম (য়েহোযাজ) সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল, (য়োশিয মারা যাবার পর তার পুত্র শল্লুম যিহূদার রাজা হয়েছিল।) “য়েহোযাজ জেরুশালেম ছেড়ে চলে গিয়েছিল। সে আর কোন দিন জেরুশালেমে ফিরে আসে নি।
১২ মিশরের লোকেরা তাকে যেখানে ধরে নিয়ে গিয়েছে সেখানেই তার মৃত্যু হবে। সে আর কোনদিন এই দেশকে দেখতে পাবে না।”
১৩ রাজা যিহোয়াকীমের জীবনে খারাপ সময় ঘনিয়ে আসছে। সে তার রাজপ্রাসাদ তৈরী করতে বহু অসত্‌ কাজ করেছে। লোক ঠকিয়ে প্রাসাদের ঘর সমেত উচ্চতা বাড়িয়েছে। তার প্রজাদের দিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে সে কাজ করিযে নিয়েছে।
১৪ যিহোয়াকীম বলল, “আমি নিজের জন্য একটি বিশাল প্রাসাদ তৈরী করব। সেই প্রাসাদের ওপরের তলায় বড় বড় ঘর থাকবে।” তাই সে বড় বড় জানালা তৈরী করল। এরস বৃক্ষের কাঠ দিয়ে তৈরী জানালার চারিদিকে সে লাল রঙ করল।
১৫ যিহোয়াকীম, তোমার প্রাসাদে অসংখ্য এরস বৃক্ষের কাঠ তোমাকে মহান রাজা করে দিতে পারবে না। তোমার পিতা য়োশিয খাদ্য ও পানীয় পেয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন। তিনি সঠিক পথে সঠিক কাজ করেছিলেন। অতএব তাঁর ক্ষেত্রে সব কিছুই ভালো হয়েছিল।
১৬ য়োশিয গরীব দুঃখী লোকদের পাশে দাঁড়িয়েছিল বলে তার সঙ্গে খারাপ কোন ঘটনা ঘটেনি। যিহোয়াকীম, ‘ঈশ্বরকে জানার অর্থ সত্‌ভাবে জীবনযাপন করা এবং যারা গরীব ও আর্ত্ত তাদের সাহায্য করা।’ এই হল প্রভুর বার্তা:
১৭ যিহোয়াকীম, তোমার চোখ দুটো শুধু তোমার লাভের দিকটাই দেখে। তোমার সমস্ত ভাবনা হল লাভ নিয়ে এবং কি করে আরো বেশী কিছু পাবে তাই নিয়ে। তুমি ইচ্ছা করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছো। স্বেচ্ছায় অন্যের জিনিস চুরি করেছো।
১৮ সুতরাং য়োশিযর পুত্র যিহোয়াকীমকে প্রভু এই কথাগুলি বললেন: “যিহূদার লোকেরা কখনও যিহোয়াকীমের জন্য কাঁদবে না। তারা একে অপরকে বলবে না; ‘হে আমার ভাই, আমি যিহোয়াকীমের জন্য খুব দুঃখিত! হে আমার ভগিনী, আমি যিহোয়াকীমের জন্য খুব দুঃখিত!’ তারা যিহোয়াকীমের জন্য দুঃখিত হবে না। তারা তার সম্বন্ধে বলবে না, ‘হে মনিব, আমরা দুঃখিত! হে রাজা আমরা মর্মাহত!’
১৯ জেরুশালেমের লোকরা যিহোয়াকীমকে কবর দেবে একটি মৃত গাধার সত্‌কারের ভঙ্গিতে। তারা তার মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে জেরুশালেমের ফটকের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।
২০ “যিহূদা, যাও লিবানোনের পাহাড়ে উঠে চিত্কার করে কাঁদো যাতে তোমাদের সেই কান্নার রোল বসনের পাহাড় থেকে শোনা যায়। অবারীম পাহাড় থেকে চেঁচিয়ে ওঠো। কারণ তোমার ‘প্রেমিকরা’ সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে।
২১ “যিহূদা, তুমি নিজেকে নিরাপদ মনে করেছিলে কিন্তু আমি তোমাকে সতর্ক করেছিলাম! তোমায় সতর্ক করেছিলাম কিন্তু আমার কথা শোননি। ছেলেমানুষ ছিলে বলে তুমি ভুলপথে জীবনযাপন করেছিলে। যিহূদা, তুমি তোমার য়ৌবনকাল থেকে আমাকে অমান্য করেছ।
২২ যিহূদা আমি তোমাকে য়ে শাস্তি দেব তা আসবে ঝড়ের মতো এবং সেই ঝড় তোমার সমস্ত মেষপালকদের উড়িযে নিয়ে যাবে। তুমি ভেবেছিলে অন্যান্য জাতিগুলি তোমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে, কিন্তু তারাও পরাজিত হবে। তখন তুমি সত্যি সত্যি নিরাশ হয়ে পড়বে। লজ্জিত হবে নিজের অতীতের কৃতকর্মের কথা ভেবে।”
২৩ “রাজা, তুমি পাহাড়ের একেবারে ওপরে এরস বৃক্ষের তৈরী সুদৃশ্য প্রাসাদে বাস করো। এটা অনেকটা তোমার কাছে লিবানোনে বাস করার মতোই য়েখান থেকে ঐ কাঠ আসে। য়েহেতু পাহাড়ের ওপর বিশাল প্রাসাদে তুমি বাস করো তাই তুমি নিজেকে নিরাপদ ভাবছো। কিন্তু যখন শাস্তি তোমার কাছে আসবে তখন তুমি আঘাত পাবে এবং প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মহিলার মত আর্তনাদ করবে।”
২৪ প্রভু বললেন, “আমি আছি এটা য়েমন নিশ্চিত্‌,” এই হল প্রভুর বার্তা, “তেমনি ভাবে আমি এটা করব। যিহোয়াকীমের পুত্র যিহোয়াকীণ, যিহূদার রাজা, তুমি যদি আমার ডান হাতের মোহর করা আংটিওহও, আমি তোমাক ছুঁড়ে ফেলে দেব।
২৫ যিহূদারাজ কনিয, তুমি যাদের ভয়ে ভীত সেই বাবিলের রাজা নবূখদ্রিত্‌সরের ও বাবিলের লোকদের হাতে আমি তোমাকে তুলে দেব। তারা তোমাকে হত্যা করতে চায়।
২৬ আমি তোমাকে ও তোমার মাকে এমন এক দেশে পাঠিয়ে দেব য়েটা তোমাদের কারোরই জন্মস্থান নয়। তোমরা সেখানে মারা যাবে।
২৭ যিহোয়াকীণ তুমি যদি স্বদেশ কাতর হয়ে যাও এবং তোমার নিজের দেশে ফিরেও য়েতে ইচ্ছা কর, তুমি কখনও ফিরে যাবার অনুমতি পাবে না।”
২৮ কনিয হল এক ভাঙ্গা পাত্রের মত যাকে কোন মানুষ বাতিল করে ফেলে দিয়েছে। সে এমনই এক পাত্র যাকে কেউ চায় না। যিহোয়াকীণ ও তার সন্তানদের কেন ফেলে দেওয়া হবে? কেন তাদের অন্য দেশে নিক্ষিপ্ত করা হবে?
২৯ ভূমি, যিহূদার দেশ, প্রভুর বার্তা শোন।
৩০ প্রভু বললেন, “কনিয সম্বন্ধে এই কথাগুলো লিখে নাও। ‘সে হবে এমনই এক মানুষ যার আর কোন সন্তান থাকবে না। সে কখনো জীবনে সফল হবে না। তার কোন সন্তান কখনো দাযূদের সিংহাসনে বসতে পারবে না। তার কোন সন্তান কখনো যিহূদার রাজত্ব করবে না।”‘