যখন আমার মৃত্যু হবে, হবেই তো কোনো দিন,
তখন হয়তো তুমি রাত্রির শয্যায় ঘুমে লীন,
বালিশে স্খলিত খোঁপা, স্বপ্নময় ঘুমে অকস্মাৎ
উঠবে শরীর কেঁপে সুখঘোরে, পুরুষের হাত
তোমার কোমরে লগ্ন, সে-হাত দস্যুতা জানে খুব।
যখন আমাকে মৃত্যু অতর্কিতে বানাবে বেকুব,
তখনি হয়তো তুমি গল্পের আসরে বাছা বাছা
চালাক মন্তব্য দেবে ছুড়ে আর কাকে বলে বাঁচা
বলবে শিল্পিত সুরে। যখন আমার মৃত্যু হবে,
তখন হয়তো তুমি সমর্পিত দীপ্র কলরবে।
যখন আমার মৃত্যু হবে, হয়তোবা জানালার
বাইরে তাকাবে তুমি, একাকিনী যাবে বারান্দার
অন্ধকারে, আস্তেসুস্থে গাছপালা, নক্ষত্রের তোড়া
দেখবে, বসবে এক কোণে; সহসা নিঃসঙ্গ ঘোড়া
তোমার হৃদয় জুড়ে খুরে ওড়াবে রঙিন ধূলি
এবং তোমার দিকে ফ্লাওয়ার ভাসের ফুলগুলি
নিঃশব্দে থাকবে চেয়ে অপলক; হয়তোবা যাবে
খাবার টেবিলে তুমি, নিরিবিলি প্লেয়ারে বাজাবে
পুরোনো দিনের গান। সেকালের কোনো কোনো গান
একদা আমার মধ্যে দিত গ’ড়ে স্মৃতির উদ্যান।
যখন আমার মৃত্যু হবে, হয়তোবা দ্বিপ্রহরে
শুয়ে শুয়ে নব্য নভেলের স্বাদ নেবে, হা-হা স্বরে
বাতাস প্রবল যাবে বয়ে, একজন স্বপ্নময়
উদভ্রান্ত কবির কথা হয়তো পড়বে মনে। ভয়
পেয়ে টেনে দেবে পর্দা জানালার? হয়তোবা
ছেলেটা পাশের ঘরে একা বসে মেঘ, বনশোভা
আঁকবে খাতায় কিংবা ছুটে এসে ধরবে জড়িয়ে
তোমাকেই, তুমি পিঠে দীর্ঘ চুল কোমল ছড়িয়ে
চিত্রবৎ; যখন আমার সত্তা অসাড়, তুহিন,
তখন হয়তো তুমি বুনে যাবে উল ক্লান্তিহীন।