মৃতেরা কথা বলে না – ৩

০৩.

 কর্নেল নীলাদ্রি সরকার আটটা অব্দি ছাদের বাগান পরিচর্যার পর ড্রয়িংরুমে বসে কফি পান করতে করতে খবরের কাগজে চোখ বুলোচ্ছিলেন। সেই সময় ডোরবেল বাজল। একটু পরে তাঁর পরিচারক ষষ্ঠীচরণ একটা নেমকার্ড এনে বলল, এক ভদ্রলোক দেখা করতে এয়েছেন বাবামশাই!

কার্ডে লেখা আছেঃ এস সোম। মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ। জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালস প্রাইভেট লিমিটেড। ঠিকানাটা চৌরঙ্গি এলাকার। হুঁ, নামকরা ওষুধ সংস্থা। এদের কয়েকটা লাইফ-সেভিং ড্রাগ বিখ্যাত। দেশের সর্বত্র বিজ্ঞাপনের বিশাল হোর্ডিং দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কর্নেল বললেন, নিয়ে আয়।

তিরিশের কাছাকাছি বয়স, অমায়িক হাবভাব, সুদর্শন এক যুবক ঢুকে করজোড়ে নমস্কার করল। পরনে কেতাদুরস্ত টাইট এবং হাতে ব্রিফকেস। সে সোফায় বসে আস্তে শ্বাস ছাড়ল। তারপর মৃদুস্বরে বলল, একটা ব্যক্তিগত ব্যাপারে আপনার কাছে এসেছি। মানে, বাধ্য হয়েই এসেছি।

কর্নেল তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। আপনার পুরো নাম বলুন প্লিজ!

শুভ্রাংশু সোম। থাকি লেকগার্ডেনসে। কদিন থেকেই ভাবছিলাম আপনার কথা। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে–

তারপর নিশ্চয় এমন কিছু ঘটেছে যে সিন্ধান্ত নিতে হয়েছে। কর্নেল হাসলেন। যাই হোক, বলুন।

তার আগে একটা অনুরোধ কর্নেল সরকার! প্লি-ই-জ! পুলিশকে আমি এড়িয়ে থাকতে চাই। সেইজন্যই আপনার কাছে আসা। সব শুনলে বুঝতে পারবেন কেন আমি আড়ালে থাকতে চাইছি।

বলুন!

গতরাতে সানসাইন হাউজিং কমপ্লেক্সে আমার খুব পরিচিত এক ভদ্রমহিলা খুন হয়েছেন।

কর্নেল লক্ষ্য করলেন, কথাগুলিতে স্বাভাবিক উত্তেজনা ছাড়াও একটা আর্তির সুর স্পষ্ট। যদিও মুখের রেখায় উত্তেজনাই স্পষ্ট। অবশ্য কথাগুলি সে আস্তে উচ্চারণ করল এবং প্রত্যেকটা শব্দের পর বিরতি ছিল। কর্নেল বললেন, জায়গাটা কোথায়?

ইস্টার্ন বাইপাসের কাছে। চারটে ব্লক নিয়ে হাউজিং কমপ্লেক্স। উচ্চমধ্যবিত্তরাই থাকেন। বেশির ভাগ বিগ কোম্পানির এক্সিকিউটিভ ছোট কোম্পানির মালিকরাও তো যিনি গতরাতে খুন হয়েছেন, তিনি আমার কোম্পানিরই নতুন চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসারের স্ত্রী। নাম মধুমিতা দাশগুপ্ত। বিয়ের আগে অভিনয় করতেন স্টেজে এবং টি ভি ফিল্মে।

কর্নেল চুরুট ধরিয়ে বললেন, কী ভাবে খুন হলেন ভদ্রমহিলা?

শুভ্রাংশু রুমালে মুখ মুছে বলল, ভেরি মিসটিরিয়াস মার্ডার। মউ থাকে বি ব্লকে দোতলায় ৭ নম্বর অ্যাপার্টমেন্টে।

কর্নেল দ্রুত বললেন, মউ?

মধুমিতার ডাকনাম। শুভ্রাংশুকে একটু নার্ভাস দেখাল। গতরাতে সাড়ে এগারোটায় নাকি ওর বডি পাওয়া যায় ই ব্লকের ১ নম্বর লিফটের ভেতর। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে মাথার ডানপাশে গুলি। অশ্চর্য ব্যাপার, নাইটগার্ড বা অ্যাপার্টমেন্টের কেউ নাকি গুলির শব্দ শুনতে পায়নি। অটোমেটিক লিফট। তার চেয়ে আরও আশ্চর্য, মউয়ের স্বামী শান্তশীল ঠিক ওই সময় টেলিফোনে। সিকিউরিটি অফিসারকে ই ব্লকে কিছু ঘটেছে কি না খোঁজ নিতে বলেন। সিকিউরিটির লোক গিয়ে মউয়ের বডি আবিষ্কার করে।

তখন লিফট কোন ফ্লোরে ছিল?

সেকেন্ড ফ্লোরে। ২ নং লিট খারাপ। ১ নম্বরটা চালু ছিল। সিকিউরিটির দুজন গার্ড ১ নং লিট দিয়ে সেকেন্ড ফ্লোরে উঠতে চেয়েছিল। লিফট নামতেই তারা মউয়ের বডি দেখতে পায়।

ষষ্ঠীচরণ রীতি অনুসারে কফি আনল। কর্নেল বললেন, কফি খান মিঃ সোম। কফি নার্ভ চাঙ্গা করে।

শুভ্রাংশু কফির পেয়ালা তুল বলল, তারপর পুলিশ যায় রাত বারোটা নাগাদ। বুঝতেই পারছেন সানসাইনের বাসিন্দারা সিনিক টাইপ। পরস্পর তত মেলামেশা নেই। তো5

কফি খান।

শুভ্রাংশু কফিতে চুমুক দিয়ে বলল, এরপর অদ্ভুত ঘটনা সেকেন্ডে ফ্লোরের ১৩ নং অ্যাপার্টমেন্টের এক ভদ্রলোককে পুলিশ অ্যারেস্ট করেছে। তার নাম চন্দ্রনাথ দেববর্মন। কী একটা মার্কেটিং রিসার্চ ব্যুরোর মালিক।

তাঁকে অ্যারেস্ট করল কেন?

দুটো লিফটই ১০ নং অ্যাপার্টমেন্টের সামনে। সেখানে থাকেন একজন ব্যবসায়ী। তার অ্যালসেসিয়ান হঠাৎ নাকি খেপে গিয়ে দরজায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কুকুরটা এমন করছে কেন তা বোঝার জন্য তিনি দরজার আইহোলে চোখ রাখেন। তিনিই চন্দ্রনাথবাবুকে দেখতে পান। ওঁর হাতে নাকি ফায়ার আর্মস ছিল। চন্দ্রনাথবাবুকে লিফটের সামনে থেকে দ্রুত চলে আসতে দেখেন।

সেই ব্যবসায়ীর নাম কী?

জানি না।

 আপনি কিভাবে এইসব ঘটনা জানলেন?

কর্নেলের প্রশ্নে তীক্ষ্ণতা ছিল। শুভ্রাংশু আরও নার্ভাস মুখে বলল, আমি– কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভ মিঃ দাশগুপ্তের সঙ্গে আজ সাতটায় দেখা করতে গিয়েছিলাম। সাড়ে সাতটায় ওঁর বাইরে যাওয়ার কথা। খুলে বলি। আমাকে নর্থ ইস্টার্ন জোনে বদলি করা হয়েছে। বদলি ক্যান্সেল করানোর জন্য ওঁকে অনুরোধ করতে গিয়েছিলাম। হি ইজ এ নাইস অ্যান্ড সিম্প্যাথেটিক পার্সন। হি লাইকস মি। কিন্তু খুব ঠাণ্ডা মাথার লোক।

উনিই কি আপনাকে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন?

হ্যাঁ। শুভ্রাংশু কফিতে চুমুক দিয়ে ফের বলল, অবশ্য সংক্ষিপ্তভাবে বললেন। আরও অনেক গোপন ব্যাপার থাকতেই পারে, আমাকে যা বলার মতো নয়।

কর্নেল চুরুট অ্যাশট্রেতে রেখে দাঁড়িয়ে ছাই ঝেড়ে বললেন, কিন্তু আপনি আগে থেকেই আমার কাছে আসতে চেয়েছিলেন। সিন্ধান্ত নিতে পারছিলেন না!

শুভ্রাংশু একটু চুপ করে থেকে বলল, গ্রুপ থিয়েটারে অভিনয় করার সখ ছিল আমার। সেই সূত্রে মউয়ের সঙ্গে পরিচয়। খানিকটা হৃদ্যতার সম্পর্কও হয়েছিল। কিন্তু মউ ছিল হঠকারী টাইপের। একটু স্বার্থপরও ছিল। টিভি সিরিয়ালে নাম করার পর আমাকে এড়িয়ে চলত। শেষে আমারই কোম্পানির নতুন চিফ এক্সিকিউটিভ মিঃ দাশগুপ্তকে বিয়ে করে বসল। কিন্তু না কর্নেল সরকার, মউয়ের সূত্রে আমি মিঃ দাশগুপ্তের কাছে কোনও সুযোগসুবিধা নিইনি! ওঁর সঙ্গে আমার সরাসরি সম্পর্ক ছিল।

কর্নেল ঘড়ি দেখে বললেন, প্লিজ মেক ইট ব্রিফ!

সরি! শুভ্রাংশু পাংশুমুখে একটু হাসল। গত ২ রা মার্চ রবিবার দুপুরে মউ হঠাৎ আমাকে ফোনে বলেছিল ও বিরাট ভুল করেছে। ওর জীবনটা নষ্ট হয়ে গেছে ইত্যাদি। আমি কোনও মন্তব্য করলাম না। মউ তারপর আমাকে অবাক করে বলল, কোনও প্রাইভেট ডিটেকটিভ এজেন্সির ঠিকানা আমার জানা আছে। কি না। বললাম কেন? মউ বলল, সে একজন ব্ল্যাকমেলারের পাল্লায় পড়েছে। ফোনে সব বলা যাবে না। তারপর লাইন কেটে গেল। আমি রিং ব্যাক করলাম। কিন্তু রিং হতে থাকল। মউ ফোন ধরল না। পরের ফোন পেলাম ২২ মার্চ রাত ৮ টা নাগাদ। মউ বলল, ব্ল্যাকমেলার এবার পঞ্চাশ হাজার টাকা চাইছে। জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় থাকে লোকটা? মউ বলল, হংকংয়ে থাকে। কিন্তু প্রায়ই কলকাতা আসে। সানশাইনে ওর এক বন্ধু আছে। তার কাছে আসে এবং সেখান থেকে মউয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ২৮ মার্চ রাত ৯ টায় তাকে সেই বন্ধুর অ্যাপার্টমেন্ট গিয়ে টাকাটা পৌঁছে দিতে হবে। জিজ্ঞেস করলাম, ব্ল্যাকমেল করে কী ব্যাপারে? মউ শুধু বলল, একটা ভিডিও ক্যাসেট। তারপর লাইন কেটে গেল। আমি আগের মতো রিং করলাম। কিন্তু আর মউ ধরল না।

কর্নেল অভ্যাসমতো টাকে হাত বুলিয়ে বললেন, কিন্তু মউ গতরাতে খুন হয়ে গেছে বলছেন। ব্ল্যাকমেলারের সোনার হাঁস মারা পড়েছে। কাজেই আর ব্ল্যাকমেলের প্রশ্ন থাকছে না!

শুভ্রাংশু উত্তেজিতভাবে বলল, বাট হু কিল মউ? হোয়াই? মিঃ দাশগুপ্ত গকাল ভুবনেশ্বরে ছিলেন। ওঁর ফ্লাইট দেরি করায় প্রায় রাত পৌনে দশটায় নাকি দমদম এয়ারপোর্টে পৌঁছান। সানশাইনে পৌঁছাতে প্রায় আধঘণ্টা লাগার কথা। ওঁর অ্যালিবাই অবশ্য স্ট্রং। কিন্তু

বাড়ি ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছিল ওঁর?

হ্যাঁ। তারপর নাকি মউ এখনই আসছি বলে বেরিয়ে যায়। মিঃ দাশগুপ্ত আমাকে শুধু এটুকু বলেছেন।

কর্নেল অ্যাসট্রে থেকে আধপোড়া চুরুট তুলে সযত্নে ধরালেন। বললেন, আপনি আমার কাছে ঠিক কী চাইছেন?

শুভ্রাংশু ঠোঁট কামড়ে ধরেছিল। বলল, কে মারল মউকে। কেন মারল? ব্ল্যাকমেলার নয়, এটুকু বলা যায়। তাই নয় কি কর্নেল সরকার? আমার দৃঢ় বিশ্বাস মিঃ দাশগুপ্তের অ্যালিবাইয়ে কোনও ফাঁক আছে।

কর্নেল তার চোখে চোখ রেখে বললেন, পুলিশ তো কিলারকে ধরেছে!

আমার মনে হচ্ছে ভুল লোক। কোথায় একটা গণ্ডগোল ঘটেছে। ই ব্লকের ১০ নম্বরের ব্যবসায়ী লোকটার কথায় পুলিশ ভুল পথে গেছে। আপনিই ঠিক লোককে ধরে দিতে পারেন। আমি জানি।

কী ভাবে জানেন? আমার ঠিকানা কে দিল আপনাকে?

মউয়ের প্রথম ফোন পাওয়ার পর আমি একটা ডিকেটটিভ এজেন্সির খবর। পেয়েছিলাম। ফিনিক্স নাম। লাউডন স্ট্রিটে অফিস। ফিনিক্সের মিনিমাম ফি দশ হাজার। ওদের একজন হ্যাঁ, প্রণয় মুখার্জি ঠাট্টা করে বলেছিলেন, বিনা পয়সায় মিসট্রি সলভ করেন এক ভদ্রলোক। তার কাছে যান।

কর্নেল হাসলেন। প্রণয় বলেছিল? সে এখনও গোয়েন্দাগিরি করছে নাকি?

আজ্ঞে হ্যাঁ। তবে ওঁদের কথাবার্তা শুনে আমার মনে হয়েছে জালিয়াতির ব্যবসা।

কর্নেল আবার ঘড়ি রেখে বললেন, প্রণয় রিটায়ার্ড পুলিশ অফিসার। প্রাইভেট ডিটেকটিভ এজেন্সিগুলোতে রিটায়ার্ড পুলিশ আর এক্স-সার্ভিসম্যানদেরই আচ্ছা। তবে ওরা সুশ্রী মেয়েদের ট্রেনিং দিয়ে কাজে লাগায়।

শুভ্রাংশু কাঁচুমাচু মুখে বলল, কর্নেল সরকার! বুঝতেই পারছেন আমার তেমন কিছু সামর্থ্য নেই। স্মল ফ্রাই। অথচ মউয়ের এই শোচনীয় মৃত্যু আমাকে প্রচণ্ড আঘাত দিয়েছে।

কিন্তু তার স্বামী বিগ গাই! কর্নেল হাসলেন। তাকে সব খুলে বলুন।

শুভ্রাংশুর ঠোঁটের কোনায় বিকৃতি ফুিটে উঠল। মিঃ দাশগুপ্ত নিজেকে ইয়াপ্পি বলেন।

ইয়াপ্পি?

হ্যাঁ। ইউ নো দা টার্ম। আমার মনে হয়েছে, স্ত্রীর ব্যাপারে তত মাথাব্যথা নেই। খুব নির্লিপ্ত। তাই আমার সন্দেহ জেগেছে।

আপনি মউয়ের মুখে একটা ভি ডি ও ক্যাসেটের কথা শুনেছিলেন?

আজ্ঞে হ্যাঁ। শুভ্রাংশু চাপা গলায় বলল, যদিও আমি মউকে ততটা নিচে দেখার কথা ভাবতে পারছি না– মানে, কল্পনা করাও অসম্ভব, কিন্তু আমি তার কতটুকুই বা জানতাম? মানি, কেরিয়ার এসব জিনিসের প্রতি তার লোভ তো ছিলই। আপনি বুঝতে পারছেন কী মিন করছি!

হু ব্লু ফিল্মের ক্যাসেট।

একজ্যাক্টলি! নড়ে বসে শুভ্রাংশু। তবে এমনও হতে পারে মউকে ড্রাগের সাহায্যে কর্নেল সরকার! আজকাল এমন সব ড্রাগ বেরিয়েছে, যা খাইয়ে দিলে সে জানবে না কী করছে বা তাকে দিয়ে কী করানো হচ্ছে। এ বিষয়ে আমি কিছু পড়াশুনা করেছি।

কর্নেল নেমকার্ডটা দিয়ে বললেন, এতে আপনার বাড়ির ঠিকানা নেই। পেছনে লিখে দিন। ফোন নাম্বার দিন। দেখা যাক কি করতে পারি।

শুভ্রাংশু তার ব্যক্তিগত ঠিকানা লিখে দিয়ে কুণ্ঠিত মুখে বলল, আমার কাঁধে মোটামুটি একটা বড় ফ্যামিলির বোঝ। তা না হলে

হাত তুলে কর্নেল গম্ভীর মুখে বললেন, প্রণয় ইজ রাইট মাই ডিয়ার ইয়ং ম্যান! আমি ফি নিই না। আচ্ছা, আপনি আসুন। আমার একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে।

শুভ্রাংশু আড়ষ্টভাবে বেরিয়ে গেল। কর্নেল আবার খবরের কাগজে মন দিলেন। সানসাইন হাউজিং কমপ্লেক্সে কোনও খুনখারাপির ঘটনা আজকের কাগজে নেই। গভীর রাতের ঘটনা। তাছাড়া নামী কোম্পানির প্রধান কার্যনির্বাহী অফিসারের স্ত্রী। স্ক্যান্ডালের ভয়ে আপাতত চেপে দেওয়ার চেষ্টাও থাকা সম্ভব।

নটা দশ বাজে। সাড়ে নটার বেহালায় গাঙ্গুলি নার্শারিতে পৌঁছনোর কথা। অভয় গাঙ্গুলি অপেক্ষা করবেন কর্নেলের জন্য। কয়েকটা বিদেশি ক্যাকটাস এসেছে নার্শারিতে।

উঠে দাঁড়িয়ে আবার বসে পড়লেন কর্নেল নীলাদ্রি সরকার। সানশাইন হাউজিং কলপ্লেক্সের ই ব্লকের ১নং লিফটের ভেতর এক যুবতীর মৃতদেহ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন। সুন্দরী তো বটেই। টেলিসিরিয়ালে নাম করেছিল।

এবং তাকে নিয়ে একটা ব্লু ফ্লিম!

টেলিফোনে গাঙ্গুলিমশাইকে জানিয়ে দিলেন কর্নেল, জরুরী কারণে আজ যেতে পারছেন না। তবে ক্যাক্টিগুলো যেন বেহাত না হয়।

কর্নেল স্মৃতি থেকে শুভ্রাংশু সোমের বিবরণ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে শুরু করলেন। তার ইন্টারেস্টের কারণ কি নিছক পুরনো প্রেম? মউকে মন থেকে মুছে দিতে পারেনি? মউয়ের স্বামী ইয়াপ্পি বলে নাকি নিজেকে। আজকাল কোন যুবক ইয়াপ্পি নয়? ব্যতিক্রম থাকতেই পারে। কিন্তু শুভ্রাংশুর প্রকৃত ইন্টারেস্ট কি শুধু রহস্যটা জানা? জেনে কী লাভ? সে মউয়ের স্বামীকে যেন সন্দেহ করেছে। কিছুক্ষণ পরে কর্নেল টেলিফোনের দিকে হাত বাড়ালেন। ডি সি ডি ডি অরিজিৎ লাহিড়িকে এখন বাড়িতে পাওয়া যাবে।….

.