মূক ব্যবহার
নিজের গলার স্বর যন্ত্রে শুনবো, ঐ যন্ত্র বলবে ‘ভালোবাসি’
আর কেউ বলেনি, আমি কারুকে বলিনি।
আয়নার ভিতর দিয়ে চুরি করে গেছি বহুবার
স্বর্গের পোস্টাফিসে সন্ধেবেলা
কেউ কিছু লেখেনি; যন্ত্র, তুমি বলে, ‘ভালোবাসি’।
মানুষ হয়েছে আজ নিষ্ঠুর না বিষম লাজুক?
কেই কারুর মুখের দিকে চোখ তুলে চায় না কথা বলে না
মাঝে মাঝে ওষ্ঠ খুলে অনুবাদে হাসাহাসি হয়–
চোখ জ্বলে যায় ঘুমে—ঘুমের ভিতর দ্বিপ্রহর,
এসো তুমি, ঘুমোবে আমার ঘরে বুকের মতন এক শীতলপাটিতে
একথা বলে না। আর কেউ–
কুমারীর হাত ধরে হেঁটে যাই দীঘির উপরে
বাঁকা জ্যোৎস্না বুক ভেদ করে যায়—তবুও স্তব্ধতা, বড় স্মৃতিকষ্ট হয়,
‘ফিরে এসো’—এই ধ্বনি বারবার গুমরে গুমরে ওঠে।
যন্ত্রের সম্মুখে সব স্বীকারোক্তি হয়ে যায়, একা
মধ্যরাত্ৰি হু-হু করে, অবিন্যস্ত দীর্ঘ কেশভার,
পাশের পালঙ্কে ঘুমে আছো তুমি, ক্লান্ত মুখ, বসন শিথিল
খুলেছে সায়ার গিট, চোখের দু’ পাশে একটু ছায়া, তুমি
ঘুমোও এখন, আমি জাগাবো না–
ভালোবাসা, অবিশ্বাস–দু’জনেই আজ এত মূক
প্ৰতিবাদও করে না আজ গভীর গর্জন
প্রেম যেন মুখ থেকে চলে যায় শরীরের সহস্ৰ আঙুলে
মায়া লাগে,
অথচ বুকের মধ্যে কথা ছিল, ঘুম থেকে ডেকে ওঠাবার সাধ ছিল,
যন্ত্র, তুমি একদিন সাক্ষী দিও।