মার্ক ১৩

১ যীশু যখন মন্দির ছেড়ে যাচ্ছেন, সেই সময় শিষ্যদের মধ্যে একজন তাঁকে বললেন, ‘হে গুরু, দেখুন কত চমত্‌কার বিশাল বিশাল পাথর ও কত সুন্দর দালান।’
২ তখন যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি এইসব বড় বড় দালান দেখছ? এর একটা পাথর আর একটা পাথরের ওপরে থাকবে না; সবই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে।’
৩ পরে তিনি মন্দিরের সামনে জৈতুন পর্বতমালায় বসলে, পিতর, যাকোব, য়োহন এবং আন্দরিয় তাঁকে একা পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন,
৪ ‘আমাদের বলুন দেখি, এই সমস্ত ঘটনা কখন ঘটবে? আর কি চিহ্ন দেখেই বা বুঝতে পারব য়ে এই সমস্ত ঘটনা ঘটতে চলেছে?’
৫ তখন যীশু তাঁদের বলতে লাগলেন, ‘সতর্ক থেকো, কেউ য়েন তোমাদের না ভোলায়।
৬ সেদিন অনেকে আমার নাম নিয়ে আসবে এবং বলবে, ‘আমিই তিনি’ এবং তারা আরও অনেকের মন ভোলাবে।
৭ কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনবে, তখন অস্থির হযো না; এটা ঘটবেই, কিন্তু তখনও শেষ নয়।
৮ কারণ জাতির বিরুদ্ধে জাতি এবং রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজ্য জেগে উঠবে। স্থানে স্থানে ভূমিকম্প, দুর্ভিক্ষ হবে। এসব কেবল জন্ম যন্ত্রণার আরন্ভ মাত্র।
৯ ‘তোমরা নিজেদের ব্যাপারে সাবধান! লোকে তোমাদের আদালতে হাজির করবে এবং সমাজগৃহের মধ্যে তোমাদের ধরে মারবে। আমার জন্য তোমরা দেশের শাসনকর্তা ও রাজাদের কাছে সাক্ষী দেবার জন্য তাদের সামনে দাঁড়াবে।
১০ আর সব কিছু শেষ হবার আগে সমস্ত জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করা হবে।
১১ কিন্তু লোকে যখন তোমাদের গ্রেপ্তার করে বিচার সভায় নিয়ে যাবে তখন তাদের সামনে কি বলবে তা আগে থেকে ভেবো না, বরং সেই সময়ে পবিত্র আত্মা যা বলতে বলবেন তাই বলবে। কারণ তোমরাই য়ে কথা বলবে তা নয়, পবিত্র আত্মাই তোমাদের মধ্যে দিয়ে কথা বলবেন।
১২ তখন ভাই ভাইকে ও বাবা সন্তানকে মৃত্যুর হাতে তুলে দেবে এবং সন্তানরা বাবা-মার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তাদের হত্যার জন্য ধরিয়ে দেবে।
১৩ আর আমার নামের জন্য সকলে তোমাদের ঘৃণা করবে। কিন্তু য়ে শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে সেই রক্ষা পাবে।
১৪ ‘যখন তোমরা দেখবে, ‘ধ্বংসের সেই ঘৃণার বস্তু য়েখানে দাঁড়াবার নয় সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।’পাঠকের বোঝা উচিত্ এর অর্থ কি,’তখন যাঁরা যিহূদিযাতে থাকে তারা পাহাড়ে পালিয়ে যাক।
১৫ এবং কেউ যদি ছাদে থাকে, সে য়েন বাড়ি থেকে কোন কিছু নেবার জন্য নীচে না নামে বা ঘরে না ঢোকে।
১৬ কেউ যদি মাঠে থাকে, সে য়েন জামাকাপড় নেবার জন্য ফিরে না যায়।
১৭ হায়, সেই সময়ে গর্ভবতী বা যাদের কোলে শিশু থাকবে তাদের কত কষ্ট!
১৮ আর প্রার্থনা কর য়েন এটা শীতকালে না ঘটে,
১৯ কারণ সেই সময় হবে বড়ই কষ্টের সময়। তেমনটি প্রথম যখন ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করলেন, তখন থেকে এখন পর্যন্ত কখনই হয় নি আর কখনও হবেও না।
২০ আর প্রভু যদি সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে না দিতেন, তবে কোন প্রাণই রক্ষা পেত না। কিন্তু তিনি যাদের মনোনীত করেছেন, সেই মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন।
২১ কেউ যদি তখন তোমাদের বলে, ‘দেখ, খ্রীষ্ট এখানে বা ওখানে আছেন, তোমরা বিশ্বাস কোরো না।
২২ কারণ ভণ্ড খ্রীষ্টেরা এবং ভাববাদীরা উঠবে এবং নানা চিহ্ন ও অলৌকিক কাজ করে দেখাবে, এমন কি সন্ভব হলে মনোনীত লোকদেরও ভোলাবে।
২৩ কিন্তু তোমরা সাবধান থেকো। আমি তোমাদের আগেই সমস্ত কিছু বলে দিলাম।
২৪ ‘কিন্তু সেই সময়, সেই কষ্টের শেষে, ‘সূর্য় অন্ধকার হয়ে যাবে এবং চাঁদ আর আলো দেবে না।
২৫ আকাশ থেকে তারা খসে পড়বে, আকাশের সমস্ত শক্তি বিচলিত হবে।’যিশাইয় ১৩:১০, ৩৪:৪
২৬ ‘তখন লোকেরা দেখবে, মানবপুত্র মহামহিমায় ও পরাক্রমের সঙ্গে মেঘরথে আসছেন।
২৭ তখন মানবপুত্র তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আকাশের অন্য প্রান্ত পর্যন্ত চারিবাযু থেকে তাঁর মনোনীত লোকদের সংগ্রহ করবেন।
২৮ ‘ডুমুর গাছ থেকে এই দৃষ্টান্ত শেখো; যখন তার শাখা-প্রশাখা কোমল হয়ে পাতা বের করে, তখন তোমরা জানতে পার গরম কাল এসে গেল।
২৯ ঠিক তেমনি ঐ সমস্ত ঘটনা ঘটতে দেখলেই তোমরা বুঝতে পারবে য়ে সময়খুব কাছে, এমনকি দরজার সামনে।
৩০ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সমস্ত ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত এই প্রজন্মের শেষ হবে না।
৩১ আকাশ এবং পৃথিবীর লোপ হবে, কিন্তু আমার কথা লোপ কখনও হবে না।
৩২ ‘সেই দিনের বা সেই সময়ের কথা কেউ জানে না; স্বর্গদূতরাও নয়, মানবপুত্রও নয়, কেবলমাত্র পিতাই জানেন।
৩৩ সাবধান! তোমরা সতর্ক থেকো। কারণকখন য়ে সেই সময় হবে তোমরা তা জানো না।
৩৪ সেই দিনটা এমনভাবেই আসবে য়েমন কোন লোক নিজের বাড়ি ছেড়ে বিদেশে বেড়াতে যায় এবং তার চাকরদের দাযিত্ব দিয়ে প্রত্যেকের কাজ ঠিক করে দেয় আর দ্বাররক্ষককে সজাগ থাকতে বলে।
৩৫ তাই তোমরা সতর্ক থাকবে, কারণ তোমরা জান না কখন বাড়ির মালিক আসবেন, সন্ধ্যাবেলায়, কি মাঝরাতে, কুকড়া ডাকের সময় কি ভোরবেলায়।
৩৬ হঠাত্ তিনি এসে য়েন না দেখেন য়ে তোমরা ঘুমিয়ে রয়েছ।
৩৭ আমি তোমাদের যা বলছি, তা সবাইকে বলি, ‘সজাগ থেকো।”