মাদারির খেলা, এই আছে, এই নেই

মাদারির খেলা, এই আছে, এই নেই

মাঝে মাঝে পূর্বপুরুষদেরও চুরমার করে ভাঙলে মন্দ হয় না
শুধু কি দুচারটে দেবালয়ের দারু ও পাথর, রঙিন কাচ
আমি নিজেকেও ভাঙছি, গলা দিয়ে পাকিয়ে পাকিয়ে নামছে
বিষের ধোঁয়া
আজ কখন দিনের পেটে রাত্রি আর রাত্রির গর্ভে ঘুমহীন উল্লাস
কেউ নেই, কেউ কাছে নেই, শুধু খনের শব্দ, শুধু পতনের শব্দ
কোথাও ডাকে না রাতপাখি, জ্যোৎস্না-ফোৎস্না মেরুপ্রদেশে
বেড়াতে গেছে
মাকড়সা জালের মতন নিঃশব্দ পড়ে আছে এই পৃথিবী
আমি কী খুঁজছি, আমি কী খুঁজছি, আমার একাকিত্বে জ্বলছে
আগুন।

মাঝে মাঝে আশ্রমের ধুলোতেও মেশানো দরকার বারুদ
যারা তো হাসি হেসে বংশ রক্ষা করে যাচ্ছে, তারা স্বপ্নেও
ভয় পাবে না?
পায়ের নীচে দ্রুত সরে যাচ্ছে বালি, মাথার কাছে ঝামরে পড়ছে
মেঘ
এসো, এই সময় আমরা একটা মহোৎসব করে
এই শুয়োরের বাচ্চা সভ্যতাকে ভাঙি
এসো, জল ভাঙি, আকাশ ভাঙি, সহানুভূতিকে খুচরো পয়সা
করে বিলিয়ে দিই
টুকরো টুকরো কাচের ওপর দিয়ে ছুটে যাচ্ছে খালি পায়ে
ভিখিরিরা
ওদেরও ডাকো, ওরা যা পায়নি তা ভাঙবার একটু সুখ দাও
ভাঙো শৃঙ্খল, ভাঙো কবিতা, ভাঙো পার্টি অফিসের রামধনু
যারা পরমাণু ভেঙেছে, তারা কি চেটে নিয়েছে সেই ধুলো
ওগো, আমি খবরের কাগজ পড়ি না, এটা কোন্ শতাব্দী,
এই মহাশূন্যের কোন্ দেশ?

আমাকে একটা সুন্দর শৈশবের ছবি দেখিয়ে ভুলিও না, ওটা
একটা
পিকচার পোস্টকার্ড
এই সুখের বাড়িটি কার, আমি তা ঢের দেখেছি ইঁদুরের দৌড়
ইঁদুর-দলপতিরা সব বীর পুরুষ, আমি আসলে বোধহয় পুরুষের
ছদ্মবেশে নারী
আমার মেয়েলি-ছেলে হতে কোনো আপত্তি নেই, আমি
কোনোদিন রাইফেল হাতে
যুদ্ধে যাবো না
আমার ঢাক-ঢোল পেটানো প্রেম নেই, মোষ বা ষাঁড়ের মতো কাঁধ
নেই
আমি কোনো এক লবাব খাঞ্জা খাঁর খামখেয়ালের ছেলে,
আমার মা এক
পাতাকুড়োনি বা অন্য কেউ তা কে
জানে!
আমার হাতে অনেকগুলো ধ্বংস, আমার হাতে কয়েকজন
শূন্যতা
দ্যাখো দ্যাখো মাদারির খেলা, এই আছে এই নেই, এই আছে
এই নেই
তুমি কে গো কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়াচ্ছে সামনে, তুমি কোন
অন্ধবিশ্বাসের মৌরসীপাট্টা
ওগো ইতিহাস, আমি তোমার চিবুকে বাঁ পায়ের ঠোক্কর দিয়ে
বলবো,
আমি সাত পুরুষের বেজন্মা
সেই রকমই এক বেজন্মা ঈশ্বরের বাচ্চা
ওহে চাঁদবদন, গাল ভরা কথায় কথায় আর খেলিও না!